যশোরের অভয়নগর উপজেলার চলশিয়া গ্রামের বহুল আলোচিত চিটিংবাজ খ্যাত সাংবাদিক পরিচয়দানকারী কথিত সাংবাদিক মাহবুবুর রহমানকে,গ্রেফতার করেছে অভয়নগর থানা পুলিশ।
তার বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে, ৭ সেপ্টেম্বর(মঙ্গলবার) সকালে অভয়নগর থানায়,ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন, যার অভয়নগর থানার মামলা নং ০৭ তাং ৭/৯/২০২১ইং।
মামলা সূত্রে জানাযায়, ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রী, নওয়াপাড়ার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেনির ছাত্রী ও সঙ্গীত শিল্পী। ছোট বেলা থেকে মেয়েটির সাংবাদিকতা করার শখ। এটা জানতে পেরে লম্পট মাহাবুব তাকে সাংবাকিতার কার্ড করে দেয়ার প্রলোভন দেখায় এবং তার নিকট থেকে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও জন্মনিবন্ধনের কার্ড নেয়। এ সময় মাহবুব ওই শিক্ষার্থীর ফেসবুক আইডি নেয়। প্রায়ই তার সাথে ফেসবুক মেসেঞ্জারে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে থাকে। হঠাৎ করেই মাহাবুব মেসেঞ্জারে ওই শিক্ষার্থীকে সাংবাদিকতার ফরম পূরণ করার জন্য তার বাড়িতে যেতে বলে। ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে যেতে রাজী না হওয়ায় ভীষন ব্যস্ততা দেখিয়ে তাকে চলিশিয়া গ্রামে তার ঘেরের বাসায় যেতে বলে। গত ২১ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বেলা দেড়টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রী সাংবাদিকতার ফরম পূরণের জন্য লম্পট মাহাবুবের ঘেরের বাসায় গেলে তাকে সেখানে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে মোবাইলে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এবং ঘটনাটি কাউকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ব্লাকমেইলিং করে তার সাথে অপকর্ম করতে বিভিন্ন স্থানে যেতে বলে। কিছুদিন পর মেয়েটিকে ভিডিও ডিলিট করার কথা বলে নওয়াপাড়া বাজারস্থ কাঁচাবাজারের পেছনের একটি স’মিলে নিয়ে অনিক বাঘার সহযোগিতায় পুণরায় ওই স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে মাহাবুব। এসময় সে ওই স্কুল ছাত্রীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। মেয়েটি চাঁদার টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তার অশ্লিল ছবি ও ভিডিও মেয়েটির বাবা ও ছোট বোনের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠায় এবং টাকা না দিলে ফেসবুকে ফাঁস করার হুমকি দেয়।
বাদী তার এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, গত ৬ সেপ্টেম্বর মাহাবুবের সহযোগি অনিক বাঘা ০১৯৭৩-০৯৬৪৯৫ নম্বর থেকে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবাকে ফোন করে চাঁদার পঞ্চাশ হাজার টাকা পরিশোধের চাপ দেয়। অন্যথায় ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দেয়। উপায় না পেয়ে ভুক্তভোগী অসহায় পরিবারটি অভয়নগর থানা পুলিশকে ঘটনাটি অবহিত করে। পরে পুলিশ সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে উপজেলা চলশিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে কথিত সাংবাদিক মাহাবুব ও তার সহযোগিকে গুয়াখোলা গ্রাম থেকে অনিক বাঘাকে আটক করে।শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মাহাবুবুর রহমান ও অনিক বাঘাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এবিষয়ে অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ কে এম শামিম হাসান,আসামী গ্রেফতার ও মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ধর্ষণ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এবং সঠিক তদন্তপূর্বক আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
#চলনবিলের আলো / আপন