তাড়াশে আনুষ্ঠানিকভাবে কোরবানির পশুর স্থায়ী হাট শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে হাটগুলোতে ভরপুরভাবে গরু চলে এসেছে। সে হারে প্রথম দিন কয়েকটি হাটে তেমন গরু বিক্রি হয়নি বলে জানান বিক্রেতারা। কারণ গরুর তুলনায় হাটে ক্রেতা অনেক কম। আর যেগুলো বিক্রি হয়েছে তার বেশীরভাগ ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু। এই প্রতিবেদক অনন্ত ২৫টি গরু বিক্রি করতে দেখেছেন যার বেশীর ভাগ ৬০ থেকে ৮০ হাজারের মধ্যে। দুই-একটা লাখ টাকার উপরে। এরমধ্যে একটি গরুও ২ লাখ টাকার উপরে বিক্রি করতে দেখেননি।
আজ রবিবার তাড়াশে নওগাঁর পশুর হাটে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, হাটে গরুর তুলনায় বিক্রি এখনো ভরপুর শুরু হয়নি। তবে যেগুলো বিক্রি হচ্ছে এদের বেশীর ভাগই ছোট গরু। অন্য বছরের তুলনায় এবার তারা দাম নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তবে আশা করছেন রবিবার থেকে সব ধরনের গরু বিক্রি বাড়বে। নওগাঁ হাটে অনেকে গরুর রাখার জায়গার সমস্যার কারণে শেষ দিকে গরু কেনেন। তবে তারা আশা করছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অন্যান্য বছরের মতো গরু বিক্রি করতে পারবেন।
এ সময় দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকের মুখে মাস্ক নেই। তাদের হাট কর্তৃপক্ষের ভলান্টিয়ার মাস্ক দিলেও মুখে না লাগিয়ে থুকুনিতেই ঝুলিয়ে রাখছেন। সাইফুল নামের এক বিক্রেতাকে মাস্ক না পরার কারন জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ‘কত আর মাস্ক পরন যায়, এই গরম এই বৃষ্টি। মাস্ক ময়লা হইয়া গেছে তাই ফালাই দিছি। ভলান্টিয়ার আইলে দিবো তখন আবার পরুম।’
নাটর বনপাড়া,নাদোসৈয়দপুর,কাছিকাটা,ও জেলার বিভিন্ন যায়গা থেকে প্রচুর গরু নিয়ে এই হাটে এসেছেন এগুলো মাঝারি সাইজের। তবে সবাই আশা করছি বড়গুলা আজ থেকে বিক্রি করতে পারব। এখন যারা আসছেন তাদের অনেকে দরদাম দেখতে আসছেন।’
রাজশাহী এলাকার কুতুব আলী পশু কিনতে হাটে এসেছেন, কী ধরনের গরু কিনবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রায় লাখ টাকার কাছাকাছি একটা গরু কিনব। ঠিকঠাক মতো পেলে আজই নিয়ে যাব। না হয় পরে আবার আসব।’
তাড়শ এলাকার ক্রেতা সঞ্জিত মিয়া বলেন, ‘৬৫ হাজার টাকা দিয়া একটা ছোট ষাড় নিছি। প্রথম দিনই কিনে ফেলছি। কারণ পরে ভিড় বাড়বে। মূলত ঝামেলা কমানো জন্যই আগেবাগে কিনে ফেললাম।’
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মালেক ৩০টি ছাগল নিয়ে এসেছেন। মালেক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তিনিটি ছাগল বিক্রি করেছি। বাকীগুলো হাটের নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে বিক্রি করে ফেলতে পারবো।’ দাম কেমন জানতে চাইলে বলেন, ‘দাম ঠিকই আছে আল্লাহ’র রহমত।’
হাটে আসা আরমান খাঁন নামের এক ক্রেতা বলেন, এখনো কিনতে পারিনি। তবে দরদাম চলছে। বিক্রেতারা মনে করছেন পরে আরো বেশী দাম বিক্রি করবেন। আর আমরা মনে করছি পরে আরো কম দামে কিনবো। তাই প্রথমদিন তুলনামূলক বিক্রি কম হচ্ছে বলে মনে হয়।’
পাবনা সদর থেকে তোফাইল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী জানালেন, বৃহস্পতিবার ১০টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন। এখন পর্যন্ত তিনটি গরুও বাঁকি আছে। তবে আশাবাদী কাল থেকে ক্রেতা সমাগম বাড়লে বিক্রি শেষ হবে।
মজিব হোসেন নামের এক গরুর মালা বিক্রেতা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মালা বিক্রি হচ্ছে না। করোনার কারণে মূলত মালা-টালা মানুষ নিচ্ছে না মনে হয়।’
আশিকুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত যতগুলো গরু বিক্রি হয়েছে, এরমধ্যে মাঝারি সাইজের বেশী। জটলা কমাতে এবং স্বাস্থ্যবিধি পর্যবেক্ষণে ও ভলান্টিয়ার কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে হাটের ইজারাদার শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রথমদিন ক্রেতারা তেমন নামেনি। তাই বিক্রি কম হয়েছে। আনুমানিক দেড় শর মতো পশু বিক্রি হয়েছে বলে ধারণা করছি। আশা করি রবিবার থেকে ক্রেতা সমাগম বাড়বে। এ ছাড়া আমাদের হাটে সার্বক্ষণিক ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন বিষয়ে সতর্ক করছি। মাস্ক দিচ্ছি, তাদের জটলা হতে দিচ্ছি না ও জাল নোট শনাক্তের ব্যবস্থা রেখেছি।
#চলনবিলের আলো / আপন