বৃহস্পতিবার , ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১লা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ঈশ্বরদীতে কৃষি জমি নষ্ট করে চলছে অবৈধ ইট ভাটার ইট তৈরি 

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ১৮ মার্চ, ২০২৪
পাবনার ঈশ্বরদীতে এক দিকে যেমন কৃষি জমি বিনষ্ট অন্যদিকে বৃক্ষ নিধন করে পরিবেশর ভারসাম্য নষ্ট করছে অবৈধ ইট ভাটা মালিকগণ। সরকারীভাবে ইট উৎপাদনের জন্য জ্বালানী হিসেবে কয়লা ব্যবহারের নির্দেশ থাকলেও মানছে না ইটভাটার মালিকগণেরা। ইট ভাটাগুলোতে কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। আর এই কাঠ সংগ্রহে প্রতিদিন শতাধিক কাঠবোঝাই গাড়ী যাচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইট ভাটাগুলোতে এবং কৃষি জমি খনন করেও আনা হচ্ছে ইট তৈরীর মাটি। স্থানীয় অনেক ব্যক্তিরই অভিযোগ ইট ভাটায় মাটি ও কাঠ আনতে নষ্ট করা হচ্ছে রাস্তাঘাট এবং বিভিন্ন মানুষের ফসলী জমি। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরাও রাস্তায় ঠিকভাবে চলতে পারেনা এই সমস্ত গাড়ি বহরের জন্য। সূত্রে মতে জানা যায়,  ঈশ্বরদী উপজেলায় মোট ইট ভাটার সংখ্যা ৬৮ টি। তবে এবছর এখন পর্যন্ত সচল করা হয়েছে মোট ৫২টি। বাঁকী ইটভাটা গুলো সচলের জোর প্রস্তুতি চালাচ্ছে মালিক পক্ষ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষীকুন্ডা, বাবুলচারা, বিলকেদা, কামালপুরসহ আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে এসব ইটভাটা। পদ্মা নদীর তীর ঘেষে গড়ে ওঠা এসমস্ত ইটভাটা গুলোতো সরকারের বেধে দেয়া নিয়ম মানার কোন বালাই নাই। সরকারী নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে পাহাড়সম গাছের তাজা খড়ির স্তুপ সাজিয়ে রেখেছে ইট ভাটায়। সেখানে বড় এবং মোটা গাছ গুলোকে ছেটে ব্যবহার উপযোগী করতে প্রায় প্রতিটি ইটভাটার আঙ্গিনায় বসানো হয়েছে স’মিল। এমন অভিযোগও উঠেছে ইটভাটা মালিক সমিতি কর্তৃক প্রশাসনকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেই চলছে এসব ইটভাটার ইট তৈরির কাজ। ইট তৈরীর কারিগর মো. মিনারুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাজ শুধু ইট তৈরী করা। সেটা কি দিয়ে পোড়ানো হবে সেটা আমরা কিভাবে বলব? বাকিটা তো আপনারাই দেখছেন।
ইট পোড়ানো কারিগর (মিস্ত্রি) মো. মজিবার হোসেন বলেন, কয়লা দিয়ে ইট পোড়ালে প্রতিটি ইটের দাম হবে দ্বিগুন। তাই কয়লার পাশাপাশি কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। কেননা ইট যদি মানুষের ক্রয় সাধ্যের মধ্যে না থাকে তাহালে মানুষ ইট কেনা বন্ধ করে দিবে। সেই সাথে ইটভাটা গুলোও বন্ধ হয়ে যাবে। বিলকেদা এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা মো. হজিবর আলী অভিযোগ করে বলেন, বছরের এই দিন গুলো আসলে আমরা এলাকাবাসী চরম দূর্ভোগে পরি। দিন-রাত ২৪ ঘন্টা গাড়ী চলার কারনে রাস্তায় সারাদিনই ধুলা/বালি  উড়তে থাকে। এতে আমাদের দৈনন্দিন জীবন দূর্বিসহ হয়ে পরে। সাথে কৃষি জমিও বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কর্তনকৃত গাছ বহনকারী কুত্তা গাড়ীর ড্রাইভার মো. ইমরান আলী বলেন, আমরা ভাটা থেকে ইট বোঝাই করে দিনে যথাস্থানে পৌঁছায় সেখানে আগে থেকে জমিয়ে রাখা গাছ দিনভর গাড়ীতে লোড করে রাতে আবার ভাটার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। এতে প্রসাশনসহ সাধারণ মানুষের নজর এড়িয়ে সহজেই ইটভাটায় গাছ গুলোকে পৌঁছে দিতে পারি। ঐই এলাকার ভুক্তভোগী মো. ইমরান আলী খান বলেন, পরিবেশ ধ্বংসের এই মহাযজ্ঞ বন্ধ হয়না কেন সে উত্তর জানতে চান স্থানীয় প্রসাশনের কাছে। তবে অনেকেই মনে করেন জেলা উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই চলে এ অবৈধ ইটভাটা গুলো। এ ব্যাপারে ভাটা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক জয় হোসেনের সাথে যোগাযোগ করতে মুঠোফোনে বার বার কল দেওয়া হলেও কল রিসিভ করেননি তিনি।
এ বিষয়ে জানতে পাবনা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. নাজমুল হক এর মুঠোফেনে বার বার কল দিয়েও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাশ বলেন, শুনেছি ঈশ্বরদীর ইট ভাটাগুলোতে তাজা গাছ পোড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে পাবনা পরিবেশ অধিদপ্তরকে অবগত করেছি। তিনি বলেন উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ বা টাকা দেয়া কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা অচিরেই পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে অভিযান পরিচালনা করবো।

উপদেষ্ঠা সম্পাদক মোঃ গোলাম হাসনাইন রাসেল-০১৭১১-৪১৭৮৮০, সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

২০২৪ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ