বুধবার , ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ভূঞাপুরে বন্যায় কম দামে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির গরু

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ৩০ জুলাই, ২০২০

কামরান পারভেজ ইভান, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি: 

টাঙ্গাইলে তৃতীয় দফা বন্যার পানি বৃদ্ধিতে আশানুরুপ হারেু কম দামে বিক্রি হচ্ছে কোরবানীর গরু।কোরবানীর পশুর হাটে গরুর সংখ্যা বেশী হলেও ক্রেতা খুবই কম। হাটের ইজারাদাররাও লোকসানের ভয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। হাট-বাজারে গরু বিক্রির অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এবার ঈদে কোরবানী কম হবে।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, চলতি ভয়াবহ বন্যায় গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারীরা। তাই বাধ্য হয়ে কম দামে গরু বিক্রি হচ্ছে হাটে। জেলার ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী হাট দেশের অন্যতম বৃহত্তর পশুর হাট। এখানে সপ্তাহে ২ দিন পশুর হাট বসে।

বৃহস্পতিবার (৩১জুলাই) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। বেশীর ভাগই দেশী জাতের খামারীদের গরুর দেখা মিলছে হাটে। ঈদকে সামনে রেখে গরুর সংখ্যা বেশী হলেও ক্রেতার সংখ্যা নগণ্য। এছাড়া প্রকৃত দামও মিলছে না বিক্রেতাদের। ফলে বাধ্য হয়ে কেউ কেউ কম দামে গরু বিক্রি করছেন। হাটে গরুর পাশাপাশি ছাগলের দেখাও মিলেছে।

পাশ্ববর্তী জেলার পিংনা হাট থেকে আগত গরু ব্যবসায়ী নুরু মিয়া জানান, আমার খামারে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গরু নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছি। আবার বন্যায় গরু নিয়ে এসেছি হাটে। ৭০ হাজার টাকার একটি গরু ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। অবশিষ্ট গরু ক্রেতা সংকটে বিক্রি করতে পারিনি।

গোবিন্দাসী ইউনিয়নের গাবসারা গ্রামের ছাগল বিক্রেতা ফরিদুল ইসলাম জানান, পুরো চরা বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ছাগলের জন্য ঘাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে থাকার ঘরটিও পানিতে ডুবে যাওয়ায় ছাগলগুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছি। এখন বিক্রি করে কিছুটা ক্ষতি ঠেকানো গেলে বাঁচি। কিন্তু এখন হাটের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সেটিও পারব কিনা সন্দেহ।

এমনি চিত্র সারা দেশের বন্যা কবলিত সকল এলাকায়। এবারের ভয়াবহ বন্যায় অধিকাংশ খামার পানিতে তলিয়ে গেছে অথবা নদী ভাঙনে অনেক খামার বা খামারীর বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় গরু নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। এখন গরু পালনের বা রাখার জায়গা নেই বললেই চলে। এখন বিক্রি করে আপদ বিদায়ের মত অবস্থা।

অন্যদিকে উপজেলার  কোরবানির পশুর হাটগুলোতে মানা হচ্ছে না কোন  সামাজিক দূরত্ব।  হাটে  আগত ক্রেতা ও বিক্রতারা মাস্ক না পরায় অনেকে করোনার সংক্রমনের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন।

গোবিন্দাসী হাটের স্থানীয় ইজারাদার ও অংশীদারী ব্যবসায়ী লিটন মন্ডল জানান, এবার হাটে দেশী খামারীদের গরুর সংখ্যা বেশী। দামও সাধ্যের মধ্যে। তবুও বিক্রি হচ্ছে না। এবারের ঈদে গেল গতবারের চাইতে পশু কোরবানী কম হবে বলে তিনি মনে করেন। এছাড়াও উপজেলায় রয়েছে শিয়ালকোল, নিকরাইল, গোবিন্দপুর পশুর হাট। হাটে ক্রেতা ও পাইকারের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এই সময়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে হাট পরিচালনা করা কঠিন। আমরা হ্যান্ড স্যানিটাইজার সহ সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছি ,মনিটরিং করা হচ্ছে এছাড়াও মাইক কড়ে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে পশু ক্রয়-বিক্রয় করার কথা বলা হচ্ছে।

উপজেলার চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুল হালিম জানান, বন্যা আর করোনায় মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ঈদে কোরবানী দেবার মানসিকতাও হারিয়ে ফেলেছে। এখন আবার ঈদের আগে এরূপ ভয়াবহ বন্যায় কোরবানী করা নিয়ে চরম বিপাকে বানভাসী মানুষ। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে কোরবানী করার মতো জায়গা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

কোরবানী হাটের ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. স্বপন চন্দ্র দেবনাথ জানান, উপজেলার সকল হাটে আমাদের চারজন প্রতিনিধির একটি টিম পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সহ সচেতন করছেন। হাটের সকল পশু বিক্রেতাদের প্রতিটি পশুর মাঝে আড়াই ফুট দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা  সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আসলাম হোসাইন বলেন, গোবিন্দাসী হাটে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই বিক্রি হচ্ছে পশু। এতে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকির বাড়তে পারে, তবে এ ব্যাপারে আমাদের অভিযান চলবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।