শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বাগাতিপাড়ায় মানা হয়নি সিডিউল, খেয়ালখুশি মত প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেন প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালনের ঘর নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ‘দেরি করলে টাকা ফেরত চলে যাবে সহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু হায়দার আলী খামারিদের কাছ থেকে স্বাক্ষর করা চেক নিয়ে নিজেই টাকা উত্তোলন করে খেয়াল-খুশি মত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দায়সারা ভাবে কাজ সম্পূর্ণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন খামারিরা।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর এর তথ্যমতে, প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ছাগল ও হাঁস-মুরগির উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে উপজেলার খামারিদের নিয়ে প্রোডিউসার গ্রুপ (পিজি) নামে ৯টি উৎপাদনকারী দল তৈরি করা হয়। ২০২২-২৩ অর্থ বছরের এ প্রকল্পের একেকটি পিজিতে সদস্য ৪০ জন। পরে মাস কয়েক আগে দুটি গ্রুপের ৮০ জন খামারির প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে ১৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

প্রকল্পটির শর্ত অনুযায়ী, বরাদ্দকৃত টাকা নিজ নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে খামারি নিজেই উত্তোলন করবেন এবং ছাগল ও হাঁস-মুরগির ঘর খামারিরা নিজেরা তৈরি করিয়ে নেবেন। বাড়তি খরচ হলে খামারিরা নিজেরা তা বহন করবেন। কিন্তু, খামারিদের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের চেক সই করিয়ে নিয়ে যান উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু হায়দার আলী। এতে খামারিরা অ্যাকাউন্টে টাকা এসেছে খুদে বার্তা পাওয়ার পরও টাকা তুলতে পারেননি। পরে খামারিদের বিভিন্ন ‘নিয়ম-অনিয়মের’ ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হায়দার নিজস্ব লোক এনে ‘ঠিকাদার’ বলে ছাগল ও হাঁস-মুরগির জন্য নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে ঘর তৈরি শুরু করান। এ সময় তিনি খামারিদের বলেন, ‘কোনো অভিযোগ করলে তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়া হবে।’ পরে খামারিদের নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে নিজেই টাকা উত্তোলন করেন।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুঠিবাঁশবাড়িয়া গ্রামের খামারি সদস্য রেখা বেগম বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আমাদের বলেছেন, তারা ঘর নির্মাণ করলে কোনো প্রকার ত্রুটি হলে কর্তৃপক্ষ কোনো দায়দায়িত্ব নেবে না, সব টাকা দপ্তরকে ফেরত দিতে হবে। কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করলে কোনো সমস্যা হবে না। আমাদের মোবাইলে ব্যাংকে টাকা ঢোকার মেসেজ এলেও আমরা টাকা তুলতে পারিনি। কারণ, আমাদের স্বাক্ষর করা চেক হায়দার স্যার জমা নিয়ে গিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে কারও সঙ্গে মতবিনিময় করলে নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলেও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন তিনি।

সদর ইউনিয়নের তমালতলা হরিরামপুরের খামারি (পিজি সদস্য) রাহেলা বেগম বলেন, ‘চেকগুলো হায়দার স্যার জমা নেন এবং বলেন, আপনারা স্বাক্ষর দেন, ঘর তৈরি শেষে আমরা টাকা তুলে নেব।’ কৃষ্ণপুর গ্রামের সোহেল রানা বলেন, তার এলাকার অধিকাংশ খামারির ঘর গুলোর খুটি ভেঙে যাচ্ছে নিচ থেকে। আর সিডিউলে বেশি খুটির কথা উল্লেখ থাকলেও তাদের প্রত্যেকটি ঘরে কম খুটির ব্যবহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু হায়দার আলী বলেন, আমরা খামারিদের সাহায্য করছি। যেন তাদের ঘরগুলো সুন্দরভাবে তৈরি হয়। খামারি এবং ঠিকাদারের সঙ্গে সমন্বয় করে গাইডলাইন অনুযায়ী ঘর তৈরির পর ঠিকাদারকে টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, প্রকল্পটির নিয়ম ছিল খামারিদের দিয়েই ঘরগুলো তৈরি করা। কিন্তু সময় অল্প থাকায় উপজেলা কর্মকর্তারা প্রকল্পটি নিতে চাচ্ছিলেন না। প্রকল্পটি না নিলে টাকাগুলো ফেরত যেত। তাই বৃহৎ স্বার্থে টাকাগুলো যেন ফেরত না যায় তাই ‘ওপরের নির্দেশে’ এই ঘরগুলো উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরই করছে এবং জেলার সব উপজেলায় একইভাবে কাজ করা হচ্ছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।