রবিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ঈশ্বরদীতে ১০মাস ধরে বিদ্যালয়ে পাঠদান না করিয়ে শিক্ষা অফিসে কাজ করছেন শিক্ষক 

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০২৩
পাবনার ঈশ্বরদীতে ১০ মাস ধরে বিদ্যালয়ে পাঠদান না করিয়ে শিক্ষা অফিসে কাজ করছেন শিক্ষক। প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমার শিক্ষককে দিয়ে কি করাবো সেটা আমার ব্যাপার-টিও \ শিক্ষককে দিয়ে অফিসের কাজ করানো অবৈধ-জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গত ১০ মাস ধরে বিদ্যালয়ে পাঠদান না করিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে (টিইও) অফিসে কাজ করছেন সহকারী শিক্ষক মোঃ রেজাউল হক। পাঠদান ব্যহৃত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বারবার বলেও শিক্ষককে বিদ্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। তবে এ বিষয়টি নিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিইও) মোঃ আসাদুজ্জামান বলেছেন, আমার শিক্ষককে দিয়ে কি করাবো সেটা আমার বিষয়। আর পাবনা জেলা শিক্ষা অফিসার (ডিপিইও) সিদ্দীক মোঃ ইউসুফ রেজা বলেছেন, শিক্ষককে দিয়ে টিইও অফিসে কাজ করানো অবৈধ। এটা কোনভাবেই করানো যাবে না। এমনই চিত্র পাবনার ঈশ্বরদী সলিমপুর ইউনিয়নের ৪২ নং মিরকামারি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনা ঘটেছে। গত (বুধবার) দুপুরে সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সলিমপুর ইউনিয়নের মধ্যে শ্রেষ্ট এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ২৭৮ জন। শিক্ষক ৯ জন। শিক্ষকদের মধ্যে রেজাউল হক নামের এক সহকারী শিক্ষক বিগত ১০ মাস ধরে বিদ্যালয়ে পাঠদান করান না। তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) অফিসে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। আর সপ্তাহে এক দুইবার এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে যান। এই কারণে পাঠদান প্রদানে অন্যান্য শিক্ষকগণ হাফিয়ে উঠেছেন। শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ্ট দেখা দিয়েছে। অপর শিক্ষকগন বলেন, শিক্ষক রেজাউল হক উপজেলায় শিক্ষা অফিসে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। একজন শিক্ষক হয়ে অফিসে ক্লার্কের কাজ করেন। তিনি কাজ করে শিক্ষকদের নিকট থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহন করেন। এই কারণে তিনি এখন অফিসের ক্লার্ক হিসেবে কাজ করতেই বেশি পছন্দ করছেন। উপজেলার সকল শিক্ষকদের মধ্যেই অসন্তোষ্ট সৃষ্টি হয়েছে। চলছে তীব্র সমালোচনা। তবে টিইও স্যারের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস করছেন না বলে দাবী করেন এসব শিক্ষকগণ। বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থী মায়েশা, মেঘলা, তাসনুভা ও তিথিসহ অন্তত ৩৫জন শিক্ষার্থী বলেন, রেজাউল হক স্যার মাঝে মাঝে বিদ্যালয়ে আসেন। কিন্তু তিনি ক্লাস নেন না। চলে যান। বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ বলেন, ৯জন শিক্ষকের মধ্যে একজন ক্লাস না নেন না। তার ক্লাসগুলো তাদের নিতে হয়। এতে তারা রোবট হয়ে পড়েছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, আমরা টিইও স্যারের অধিনে চাকরী করি। তিনি একজন শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে নিয়ে গিয়ে অফিসিয়াল কাজ করালে আমার কিছুই করার নেই। তবে শিক্ষক রেজাউল হকের অনুপস্থিতিতে পাঠদানের কোন অসুবিধা হচ্ছে না। তিনি মাঝে মধ্যে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে উপজেলা শিক্ষা অফিসে চলে যান। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ রিয়াজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষককে দিয়ে শিক্ষা অফিসে ক্লার্কেও কাজ করানোটা খারাপ। উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ব্যবস্থাপনা খারাপ বলেই এই ধরণের কাজ করানো হচ্ছে। বিষয়টি খুবই লজ্জার ও দুঃখজনক ব্যাপার। তাই বিষয়টি নিয়ে টিইও সাহেবকে কিছু বলেনি। সহকারী শিক্ষক মোঃ রেজাউল হক বলেন, আমার কোন বক্তব্য নেই। টিইও স্যার যেটা বলেছেন সেটাই ঠিক।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার (এটিইও) মোঃ জহুরুল ইসলাম বলেন, আমি বিগত ৩ মাস ধরে বিদ্যালয়টিতে পরিদর্শন করে শিক্ষক রেজাউল হককে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত পেয়েছি। বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও) স্যারকে জানানো হয়েছে। এখন সঙ্গে সহকারী শিক্ষক রেজাউল হককে বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিইও) মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, শিক্ষকরা আমার অধিনে চাকরী করে। তাদের দিয়ে আমি কি কাজ করাবো সেটা আমার বিষয়। শিক্ষককে দিয়ে নিজের অফিসে ক্লার্কেও কাজ করানোটা চাকরীবিধিতে আছে কিনা জানতে চাইলে শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, নেই তবে মৌখিক নির্দেশে তাকে কম্পিউটারে কিছু কাজ করানোর জন্য আনা হয়েছে। কারণ তিনি কম্পিউটারের কাজ ভাল বোঝেন বলেই তাকে দিয়ে এই কাজ করানো হয়। তবে কাজ করে দিয়ে অন্যান্য শিক্ষকদের নিকট থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।
পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিইও) সিদ্দীক মোঃ ইউসুফ রেজা বলেন, শিক্ষককে দিয়ে টিইও অফিসে কাজ করানোর কোন নিয়ম বা সুযোগ নেই। বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি দেখছি।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।