রবিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ২৯শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ভাঙ্গুড়ায় নির্যাতন ও জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে তালাক, অনশনে গৃহবধূ

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় নির্যাতন ও জুয়া খেলার প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছে তার স্বামী। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) স্বামীসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ঐ গৃহবধু। সঠিক বিচারের আশায় ৩ দিন ধরে স্বামীর বাড়ির বারান্দায় অনশন করছে ঐ গৃহবধু। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামে। থানায় লিখিত অভিযোগের অভিযুক্তরা হলেন, স্বামী মোঃ শাহিন আলম, আব্দুল কুদ্দুস, শামিরন, করিমন, আলতাব হোসেন, মাসুদ রানা।

জানা যায়, ১৬ বছর আগে পারিবারিকভাবে শাহিনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী পাটুলীপাড়া গ্রামের আঃ জলিল সরদারের মেয়ে লিজার বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ১০ ও ১২ বছরের দুইটি সন্তান রয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ে কখনো সুখের মুখ দেখেনি লিজা। স্বামীর জুয়া খেলার টাকা যোগাড় করতে প্রতিনিয়ত প্রবাসী ভাইয়ের কাছে হাত পাততে হয়েছে তাকে। টাকা না পেলেই শাহিন লিজার ওপর চালাতো শারীরিক নির্যাতন। বাধ্য হয়ে বোনের সুখের জন্য প্রবাসী ভাই প্রায়ই টাকা দিত শাহীনকে।

আরো জানা যায়, শাহিন যুবক বয়স থেকেই জুয়া খেলায় আসক্ত। বিয়ের সময় লিজার পরিবার থেকে নেওয়া যৌতুকের টাকা সে সময় জুয়া খেলে শেষ করে বলে অভিযোগ লিজার পরিবারের। এরপর অনেকবার শাহীন স্ত্রীকে চাপ দিয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা নিয়ে জুয়া খেলে। এভাবে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে শাহিন জুয়া খেলে টাকা হেরেছে। ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে শাহীন একাধিকবার আত্মগোপনে থাকে। পরে লিজার প্রবাসী ভাইয়ের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে শাহীন এনজিওর ঋণ পরিশোধ করে। গত কয়েক বছর লিজার পরিবার শাহীনকে জুয়া খেলার নেশা থেকে ফেরাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। জুয়া খেলার টাকার না পেয়ে প্রায়ই লিজাকে ব্যাপক মারধর করে বলে শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পরিবারের। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে অনেকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। সর্বশেষ সেমবার (১৮ সেপ্টম্বর) পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক, জেলা পরিষদ সদস্য আসলাম আলী, ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এ বিষয়ে সালিশি বৈঠক করে সমাধান করতে ব্যর্থ হন। সালিস কারকদের মতে পরের দিন থানায় অভিযোগ দেয় লিজা। অভিযোগের পরদিন শাহীন লিজাকে তালাক দেয়।

লিজা বেগম বলেন, সালিশের দিন রাতেও ব্যাপক মারধর করে শাহীন। এক পর্যায়ে গলায় গামছা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় পা ধরে প্রাণ ভি¶া চাইলে ছেড়ে দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয়। এরপর থেকেই দুই সন্তানকে নিয়ে ঘরের বারান্দায় অসহায় দিনযাপন করছি।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন বলেন, যৌতুকের জন্য প্রায়ই মারধর করত গৃহবধু লিজাকে। এমনকি সালিশে বসার আগেও ওই গৃহবধ‚কে মারধর করে তার স্বামী। এরপর ডিভোর্স দেওয়ায় ঐ নারী এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে।

ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়তুল হক বলেন, শাহিন জুয়া খেলার কারণেই পরিবারে অশান্তি। তবে সালিশ করে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি। কিন্তু শাহীনের প্রভাবশালী এক আত্মীয়র জন্য সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

এ বিষয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, ওই গৃহবধ‚ থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তাকে পারিবারিক আদালতে গিয়ে মামলা করে প্রতিকার পাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।