মঙ্গলবার , ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ভাঙ্গনের কাছে পরাজিত মেঘনা পাড়ের মানুষ

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমিক্ষা অনুযায়ী বিপদসীমার ৩০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মেঘনার পানি। ইতোমধ্যে জেলার হিজলা উপজেলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত মেঘনার অব্যাহত ভাঙনের কাছে পরাজিত হচ্ছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।

মেঘনায় স্রোত ও পানি বৃদ্ধির কারনে হিজলা উপজেলা বিভিন্ন অঞ্চলে বেপরোয়া ভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা সদর, বাউশিয়া, বাহেরচর, পুরাতন হিজলা, দুর্গাপুর, হরিনাথপুর, হিজলা-গৌরবদী, ধুলখোলাসহ এলাকার বিভিন্ন এলকা এখন বিক্ষিপ্ত ভাঙ্গনে। মেঘনার গর্ভে তলিয়ে গেছে শত শত বাড়ি, ঘর ও স্কুল। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে সমগ্র হিজলার চরাঞ্চল।

দুর্যোগ দুর্ভোগ, নদী ভাঙ্গন হিজলার মানুষের নিত্য দিনের সাথী। প্রমত্তা মেঘনা যেন হিজলা উপজেলার দুঃখ। নদী ভাঙ্গন হিজলাবাসীর পরম আত্মীয়। বছর বছর বন্যার পানি, নদী ভাঙ্গন এ যেন হিজলাবাসীর পরম পাওয়া। মেঘনার ভাঙ্গন হিজলাবাসীর পিছু ছাড়ছে না।

এ ব্যাপারে বড়জালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পন্ডিত শাহাবুদ্দিন জানান, বড়জালিয়ার আটটি গ্রাম মেঘনা পাড়ে। ক্রমেই নদী ভাঙ্গনে ক্ষুধার্থ মেঘনার পেটে চলে যাচ্ছে হিজলার মানচিত্র। তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ভাঙ্গনের কাছে আমার জনগনের মতো অসহায় হয়ে পরেছি।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে হিজলার বাউশিয়ার মেঘনা নদী ছয় কিলোমিটার গ্রাস করে নিয়েছে। একমাত্র বাউশিয়া গ্রাম রাক্ষুসী মেঘনা চোখের সামনে গিলছে। মাত্র দুই দিনেই বাউশিয়া গ্রামের শতাধিক বসত ঘর মেঘনা গিলে ফেলেছে। অতিসম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল জোনের প্রধান হারুন-অর রশিদ পরিদর্শন করে গেছেন। সেই স্থান এখন মেঘনার পেটে। ২০০ মিটার দুরে উপজেলা পরিষদ প্রশাসনিক ভবন। স্থানীয় এমপি পংকজ নাথের সহায়তায় বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড ইতোমধ্যে হিজলা উপজেলা রক্ষার্থে ৫০ লাখ টাকা বরাদ্ধ দিয়েছেন। সে টাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এমপি পংকজ নাথ নিজ হাতে জিও ব্যাগ ফেলে কাজের সুচনা করলেও সে ব্যাগ মেঘনা গিলে ফেলছে।

হরিনাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ শিকদার জানান, চাঁদপুর, শরিয়তপুর, নরিয়া জেলার সব পানি মেঘনা হয়ে বঙ্গোপসাগরে ঢোকে হিজলার মুল ভূখন্ড দিয়ে। প্রবল পনির তোড়ে ভেসে গেছে তার ইউনিয়ন। ৫২ ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি “বদরটুনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়” হরিনাথপুর বাজারসহ গুরুত্বপুর্ন পাকা স্থাপনা ভবন যেকোন মুহুর্তে মেঘনার ভাঙ্গনে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিজলায় কর্মরত গেজ মাষ্টার তৌহিদুল আলম এবং গেজ মাষ্টার আব্দুল হাদি জানান, বর্তমানে উজান থেকে নেমে আসা পহাড়ি ঢল, জোয়ারের প্রভাবের কারণে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে হিজলা উপজেলার মেঘনার দুটি পয়েন্টে বিপদসীমার ৩০ থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর একটি হচ্ছে হিজলা উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বাউশিয়ার মেঘনা এবং অপরটি হচ্ছে হরিনাথপুর এলাকার আবুপুর অঞ্চল। হঠাৎ পানি বৃদ্ধির কারনে এখানকার ভাঙ্গনের ব্যাপকতা দেখা দিয়েছে বলেও তারা উল্লেখ করেন।

হিজলা উপজেলা লাগোয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডাম্পিং কাজ পরিদর্শন করছেন কিনা এবং বাউশিয়া ও নদী ভাঙন পরিবারগুলো সরকার থেকে অনুদান পেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হিজলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বকুল চন্দ্র কবিরাজ জানান, এখন পর্যন্ত সরকারী কোন ত্রাণ বা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়নি। তিনি বলেন, এখনাকার ভাঙন খুবই ব্যাপকতা পেয়েছে। স্থান পরিদর্শন করেছি। সরকারিভাবে ত্রাণ বরাদ্দ করা হলেই ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা করা হবে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণাঞ্চল জোনের প্রধান হারুন-অর রশিদ জানান, সরকার থেকে যে পরিমান অর্থ দেয়া হয়েছে তা দিয়েই কাজের শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাউশিয়াসহ হিজলা উপজেলা রক্ষা বাঁধের জন্য ৪ শত ৮০ কোটি টাকার একটি মেঘা প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কিছুটা বাঁধ রক্ষায় লাঘব হতো।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।