রবিবার , ৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৩ই রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ইসলামি শরীয়াতের আলোকে কুরবানীর বিধি বিধান – মুফতী মাওলানা: শামীম আহমেদ

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩
কোরবানির আভিধানিক অর্থ হলো কাছে যাওয়া বা নৈকট্য অর্জন করা। ইসলামি ফিকহের পরিভাষায় কোরবানি হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শরিয়তের বিধান অনুসারে নির্দিষ্ট পশু জবাই করা।
স্বাভাবিক জ্ঞানসম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক (সাবালক) মুসলিম যদি কোরবানি ঈদের তিন দিন (১০ জিলহজ সকাল থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত) এর মধ্যে সাহেবে নিসাব (সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রুপা অথবা এর যেকোনো একটির মূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ বা ব্যবসার পণ্যের মালিক) থাকেন বা হন, তাঁর জন্য কোরবানি করা ওয়াজিব হবে। এই নিসাব পরিমাণ অর্থসম্পদ বছর অতিক্রান্ত হওয়া শর্ত নয়। সাহেবে নিসাব তথা সামর্থ্যবান ব্যক্তি হাতে নগদ অর্থ না থাকলে আপাতত ধার করে হলেও ওয়াজিব কোরবানি আদায় করতে হবে। একটি কোরবানি হলো একটি ছাগল, একটি ভেড়া বা একটি দুম্বা অথবা গরু, মহিষ ও উটের সাত ভাগের এক ভাগ। অর্থাৎ একটি গরু, মহিষ বা উট সাতজন শরিক হয়ে বা সাত নামে অর্থাৎ সাতজনের পক্ষ থেকে কোরবানি করা যায়।
গৃহপালিত পশু দ্বারা কোরবানি করা যায়। যথা: ভেড়া, ছাগল, দুম্বা, গরু, মহিষ ও উট। এই ছয় প্রকার পশু দ্বারা কোরবানি করা যায়, এ ছাড়া অন্য কোনো পশু দ্বারা কোরবানি করা যায় না। হালাল বন্য পশু দ্বারা কোরবানি করা যাবে না; যদিও তা কেউ লালন-পালন করে থাকুক না কেন। যেমন: হরিণ, কেউ যদি কোনো হরিণের বাচ্চা ছোটবেলা থেকে গৃহপালিত পশুর মতো পালতে থাকে, তবু তা দ্বারা কোরবানি হবে না। কারণ স্বভাবত এরা গৃহপালিত নয়। কোরবানির জন্য ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স এক বছর হতে হয়; গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর এবং উটের বয়স পাঁচ বছর হতে হবে। দুম্বার এক বছর পূর্ণ না হলেও যদি এক বছরের মতো হৃষ্টপুষ্ট হয় তাহলে চলবে। উল্লিখিত পশুগুলো নর-মাদি যা-ই হোক না, তা দ্বারা কোরবানি হবে। কোরবানির পশু তরতাজা ও হৃষ্টপুষ্ট হওয়া উত্তম। কোনো খুঁত থাকলে সে পশু দ্বারা কোরবানি আদায় হবে না। যেমন: লেজের বা কানের বেশির ভাগ অংশ কাটা থাকা, অন্ধ বা এক চোখ কানা হওয়া, এক পা খুঁড়িয়ে চলা বা চলনশক্তিহীন হওয়া, উভয় শিং বা কোনো এক শিং মূল থেকে উত্পাটিত হওয়া। অর্থাৎ এমন কোনো খুঁত বা অপূর্ণতা, যার দ্বারা এটির উপযোগিতা কমে যায় ও মূল্য হ্রাস পায়।
কোরবানির পশু যেকোনো মুসলমান জবাই করতে পারেন। নিজের কোরবানির পশু নিজেই জবাই করা উত্তম। দোয়া জানা জরুরি নয়। নিজে জবাই করতে না পারলে যেকোনো কাউকে দিয়ে জবাই করাতে পারেন। জবাইয়ের সময় নিজে উপস্থিত থাকতে পারলে ভালো। একটি কোরবানি হলো একটি ভেড়া, ছাগল বা দুম্বা। গরু, মহিষ ও উট প্রতিটি ভেড়া, ছাগল ও দুম্বার সাতটির সমান। তাই গরু, মহিষ ও উটে অনূর্ধ্ব সাতটি পর্যন্ত অংশ দেওয়া যায়। আকিকা হলো একটি বা দুটি ছাগল। সুতরাং গরু, মহিষ বা উটে অংশ হয়ে যেভাবে কোরবানি দেওয়া যায়; সেভাবে একটিকে সাতটি ধরে অংশ হারে আকিকাও করা যায়। কোরবানি ও আকিকা একসঙ্গে করতে কোনো বাধা নেই। ওয়াজিব ও নফল কোরবানির গোশত খাওয়া যায় এবং খাওয়ানো যায়; এটি সবাই খেতে পারেন। উত্তম হলো তিন ভাগের এক ভাগ আত্মীয়স্বজনকে দেওয়া, তিন ভাগের এক ভাগ গরিব পাড়া-প্রতিবেশীদের দেওয়া এবং তিন ভাগের এক ভাগ নিজের পরিবারের জন্য রাখা। আরও বেশি দিলে আরও ভালো। প্রয়োজনে সম্পূর্ণটা রেখে দিলেও ক্ষতি নেই। অনেকে সাত ভাগের এক ভাগ দিয়ে থাকেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।