বৃহস্পতিবার , ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

মহান আল্লাহ তায়ালা জিকিরের গুরুত্ব ও ফজীলাত – মাওলানা: শামীম আহমেদ

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০২৩
মানুষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আল্লাহর জিকির। আল্লাহতায়ালা বান্দাদের সর্বাবস্থায় অধিকহারে তাঁর জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন।
যেমন-আল্লাহতায়ালা বলেন, হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর এবং সকাল সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা কর। এখানে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা বলতে জিকিরকে উদ্দেশ করা হয়েছে। (সূরা আহজাব : ৪১-৪২)। সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করতে হবে দাঁড়িয়ে, বসে এমনকি শুয়ে যেভাবে পারা যায়, আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। যেমন-আল্লাহতায়ালা বলেন, যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টি বিষয়ে (তারা বলে) হে পরওয়ারদিগার! এসব নিয়ে অনর্থক সৃষ্টি করেননি। (সূরা আলে ইমরান : ১৯১)।
আল্লাহর জিকিরকারী ব্যক্তির দৃষ্টান্ত জীবিত ব্যক্তিদের মতো। যারা আল্লাহর জিকির করে না, তাদের কলব মরে যায় যদিও তারা জীবিত থাকে। জিকিরের মাধ্যমে মানুষের মরা কলব জিন্দা হয়। অন্তরে আল্লাহতায়ালার ভয় জাগ্রত হয়। বান্দা আল্লাহতায়ালার আনুগত্যের প্রতি ঝুঁকে পড়ে। লোভ-লালসার প্রতি চরম ঘৃণা সৃষ্টি হয়।
আল্লাহতায়ালা বলেন, যারা ইমানদার তারা এমন লোক যে, যখন আল্লাহর জিকির করা হয় তখন তাদের অন্তর ভীত হয়ে পড়ে। আর যখন তাদের সামনে আল্লাহর আয়াত পাঠ করা হয় তখন তাদের ইমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় প্রভুর ওপর ভরসা করে। (সূরা আনফাল : ২)।
কখনো জিকির থেকে গাফেল হওয়া যাবে না। জিকির থেকে গাফেল হলে সৃষ্টির ওপর আল্লাহর পক্ষ থেকে নানা বিপদাপদ নাজিল হয়ে থাকে। যারা জিকির থেকে গাফেল হয় তাদের দৃষ্টান্ত দিতে গিয়ে হাদিসে কুদসিতে আল্লাহতায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে এবং যে আল্লাহর জিকির করে না তাদের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতদের মতো। (বুখারি : ৬৪০৭, মুসলিম : ৭৭৯)।
জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার যোগসূত্র তৈরি হয়। বান্দা আল্লাহর দয়া ও মাগফিরাত লাভের যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কর আমি তোমাদেরকে স্মরণ করব। অর্থাৎ আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা যদি আমার হুকুমের আনুগত্যের মাধ্যমে আমাকে স্মরণ কর, আমি তোমাদের সওয়াব ও মাগফিরাতদানের মাধ্যমে স্মরণ করব। (সূরা বাকারা : ১৫২)।
শয়তান মানুষকে পাপ কাজে লিপ্ত করে। আর পাপের কারণে মানুষের অন্তরে কালিমা সৃষ্টি হয়। এই কালিমা দূরীভূত হয় আল্লাহর জিকির দ্বারা। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত; রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, প্রত্যেক বস্তু পরিষ্কার করার উপকরণ আছে। আর অন্তরের ময়লা পরিষ্কার করার উপকরণ হলো আল্লাহর জিকির। (আত-তারগিব ওয়াত তারহিব : ২/৩২৭)।
হজরত সাহল ইবনে হানজালা (রা.) সূত্রে বর্ণিত; রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, যেসব লোক কোনো মজলিসে বসে আল্লাহর জিকির করে যখন মজলিস থেকে উঠে তখন তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, তোমরা ওঠ। আল্লাহতায়ালা তোমাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন এবং তোমাদের গুনাহগুলো নেকিতে পরিবর্তন করে দিয়েছেন।
(আত-তারগিব ওয়াত তারহিব : ২/৩৩৪)। জিকিরকারীকে ফেরেশতারা খুঁজতে থাকেন। যেখানে আল্লাহর জিকির করা হয় সেখানে ফেরেশতাদের আগমন ঘটে। জিকিরকারী বান্দার সঙ্গে বসে তারাও আল্লাহর জিকির করেন।
হজরত জাবির (রা.) সূত্রে বর্ণিত; তিনি বলেন, রাসূল (সা.) আমাদের থেকে বের হলেন এবং বললেন, হে লোক সকল! আল্লাহর একদল ফেরেশতা আছেন। তারা কোনো জিকিরের মজলিস পেলে সেখানে অবস্থান করেন। অতঃপর তোমরা জান্নাতের বাগানের ফল খাও। আমরা বললাম, জান্নাতের বাগান কোথায়? হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, জিকিরের মজলিসগুলো জান্নাতের বাগান। (আল-মাজরুহাইন : ২/৫২, আবি ইয়ালা : ২১৩৮)।
সর্বোত্তম জিকির কোনটি তা নিয়ে বিভিন্ন রেওয়াতে পরিলক্ষিত হয়। কোনো কোনো রেওয়াতে আছে সর্বোত্তম জিকির হলো, কালিমায়ে তাইয়্যেবাহ। কারণ এর দ্বারা অন্তর পরিষ্কার হয়। কোনো রেওয়াতে আছে, তেলাওয়াত কুরআন হলো সর্বোত্তম জিকির।
কেননা, এতে একটি হরফে দশটি নেকি পাওয়া যায়। কোনো রেওয়াতে আছে, তাওবা ও ইস্তেগফার হলো উত্তম জিকির। এতে মুসিবত থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়, গুনাহ মাফ হয় এবং রিজিকে বরকত হয়। কোনো রেওয়াতে আছে-সর্বোত্তম জিকির হলো দরুদ শরিফ পাঠ। কোনো রেওয়াতে আছে, সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম-এ দোয়াটি সর্বোত্তম জিকির।
কেননা, এর দ্বারা কেয়ামত দিবসে মিজান ভারী হবে। কোনো রেওয়াতে আছে-উত্তম জিকির হলো তাসবিহে ফাতেমি। অর্থাৎ সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লাহু আকবার ৩৩ বার প্রত্যহ বাদ ফজর ও মাগরিব। (মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী, তাফসিরে নঈমী, খণ্ড-২, পৃষ্টা

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।