শুক্রবার , ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

নির্বাচনের নামে জনগণের সাথে যেন পূণরায় প্রতারণা না হয় – ওমায়ের আহমেদ শাওন

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৩
জনগণ তাদের প্রশাসনিক কাজের জন্য প্রতিনিধি বাছাই করার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়াকে আমরা নির্বাচন হিসেবে জানি। যারা এই আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য নিরপেক্ষ, গ্রহনযোগ্য ও জবাবদিহীতামূলক দায়িত্ব পালন করেন তাদেরকে সামগ্রিক ভাবে নির্বাচন কমিশন বলা হয়। বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮ এর আওতায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন স্থাপিত হয়েছে।
মেয়র নির্বাচন, উপজেলা নির্বাচন, ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচন ছাড়াও জাতীয় পর্যায়ে সরকার গঠনের জন্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
স্বাধীনতার এতো বছর পরও নির্বাচন কমিশন কখনোই নিরপেক্ষ ও শতভাগ গ্রহনযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করতে পারেননি। নির্বাচন চলাকালীন তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকলেও তারা তা ব্যবহার করেন কোন একক গোষ্ঠীর স্বার্থেই, এটা ঘৃণ্য কাজ। বিভিন্ন সময়ে তারা রাজনৈতিক দলের ভূমিকা পালন করেছেন। তাই তাদের প্রতি জনগণের আস্থা বিনষ্ট হয়েছে। মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে অনিহা প্রকাশ করছে। এই পরিস্থিতির দায় একমাত্র তাদেরকেই নিতে হবে।
গবেষক মন্টেসকিউই তাঁর “দ্য স্পিরিট অব লজ” বইয়ের দ্বিতীয় খন্ডের দ্বিতীয় অধ্যায়ে বলেছেন, ‘প্রজাতন্ত্র অথবা গণতন্ত্র যে কোনো ক্ষেত্রের ভোটেই হয় দেশের প্রশাসক হও অথবা প্রশাসনের অধীনে থাকো —এই দুটি অবস্থার মধ্যেই পর্যায়ক্রমে ভোটারদের থাকতে হয়। নিজেদের দেশে কোন সরকার আসবে তা বাছাই করার মালিক হিসেবে কাজ করে ভোটাররাই, ভোট দিয়ে একটি সার্বভৌম (অথবা শাসক) ব্যবস্থাকে চালু রাখে জনসাধারণই।
কিন্তু এদেশের নির্বাচন কমিশনের চাটুকারিতা ও অপকৌশলের কারণে জনসাধারণ নির্বাচন করাকে ভালো চোখে দেখছে না। পাতানো-নাটকীয় নির্বাচন রাজতন্ত্র বা স্বৈরাচার এরই নামান্তর। লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরী করতে না পারলে সে নির্বাচনের কোন প্রয়োজনে নেই।
জনগণ ও শাসক আলাদা নয়। জনগণের মধ্য থেকেই একটি দেশে শাসক নির্বাচিত হয়। জনগণের চেয়ে শাসক সবচেয়ে উচ্চশিক্ষিত অথবা সর্বজ্ঞানী বিষয়টা এমনও নয়। শাসক বা সরকার প্রধানের চেয়ে আরও অনেক উচ্চ শিক্ষিত লোক আছে। যারা রাজনীতি ও ঘৃণ্য নির্বাচনকে অপছন্দ করেন। অপছন্দ করার মূল কারণ হলো, দল ও দলের কাঠামো টিকিয়ে রাখতে সকল রাজনৈতিক দলকে অপকর্মে জড়াতে হয় বা জনগণের জান-মালের ওপর প্রভাব ফেলতে হয়।
বিগত নির্বাচন গুলোর সমীক্ষা থেকে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন তাদের আদর্শ, নীতিবোধ ও দায়িত্ব থেকে সরে গিয়ে তোষামোদে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যার প্রভাবে মানুষ এই নির্বাচন প্রথাকে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে।
একটি দেশে নির্বাচন সুষ্ঠ নাহলে সে দেশে কখনোই শান্তি ও প্রকৃত সমৃদ্ধি ফিরে আসবে না। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ছিনতাই, টেন্ডারবাজি, মাদক, ধর্ষণ, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, জঙ্গী কার্যক্রম, বিদেশে টাকা পাচার, সুদ-ঘুষ সহ নানান অপকর্ম অধিক হারে বৃদ্ধি পাবে। জিরো টলারেন্স দিয়েও যা দমানো সম্ভব না। তার মূল কারণ হলো, এইসব অপরাধ গুলো দলীয় লোকেরাই হরহামেশাই করতে সাহস পাবে। তাই নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সঠিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে এই জাতির জন্য সামনে অনেক দূর্ভোগ অপেক্ষমান।
স্বচ্ছ্বতা ও দায়বদ্ধতা গনতন্ত্রের একটা স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য হলো, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা মানুষের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। মানুষ প্রতিনিধির কাছে দায়বদ্ধ থাকবে না। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তারা প্রতিনিধিত্ব করলেও আজিবন ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার অধিকার তাদের নেই। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় থাকা সরকার অনাধিকার হস্তক্ষেপ করে থাকে যদি সেই সরকারের অধীন নির্বাচন হয়। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে পৃথিবীতে কখনো কোন বিরোধীদল জয়লাভ করেনি। নিরপেক্ষ ও অন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যতিত মানুষ তাদের ভোট সুষ্ঠভাবে প্রয়োগ করতে পারলেও নির্বাচনের ফলাফল সুষ্ঠ হিসেবে পাবেনা।
জনগণ আজ বিরক্ত। নির্বাচনের নামে ভাওতাবজি এসব আর চায় না। শতভাগ নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করতে না পারলে তাদের দায়িত্ব থেকে সরে আসা উচিত। তবুও জনগণের সাথে প্রতারণা করা উচিত নয়।

উপদেষ্ঠা সম্পাদক মোঃ গোলাম হাসনাইন রাসেল-০১৭১১-৪১৭৮৮০, সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

২০২৪ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ