মঙ্গলবার , ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ইট ভাটায় পুড়ছে শিশুশ্রম

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

শিশুশ্রম আর শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আইনি বিধান থাকলেও নেই কোন প্রয়োগ। ফলে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় শিশু শ্রমিকের সংখ্যা দিনদিন বেড়েই চলছে। ইট ভাটায় পুড়ছে ১০-১৪ বছরের শিশু শ্রমিকের স্বপ্ন।

উপজেলার বিভিন্ন ইটের ভাটা, দোকানপাট, গণপরিবহন, হোটেল-রেস্তোরা, কাচাবাজার, বাসাবাড়িতে দারিদ্র্যের কারণে এসব শিশু শিক্ষার আলো থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শিশু শ্রমিকরা পেটের তাগিদে অল্প বেতনে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যাচ্ছে। ফলে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা কার্যক্রম। শিশুশ্রমের প্রধান কারণ দারিদ্র। বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনায় অনেক শিশু শ্রমিক চিরজীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। শিশুদের ¯ু‹লে নিয়ে আসা এবং ধরে রাখার জন্য ব্যাপকহারে উপ-বৃত্তি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি থাকলেও ভাঙ্গুড়া উপজেলায় শিক্ষা বিভাগে তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা চোখে পড়ছে না। ফলে যে বয়সে শিশুদের ¯ু‹লে যাওয়ার কথা সে বয়সের শিশুরা বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ ও অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ছে। এ উপজেলায় দরিদ্র হতভাগ্য এই শিশু শ্রমিকদের পুনর্বাসনে সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোর পর্যাপ্ত কোন উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ সচেতন নাগরিকের।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দরিদ্রতার জালে আবদ্ধ এসব শিশু বিভিন্ন ইটের ভাটা, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি, ক্ষুদ্র কারখানা, হোটেল, রেস্তোরা, চা-দোকান, ওয়ার্কসপ, পুরান গাড়ি মেরামত, ফার্নিচার, মিলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কঠোর পরিশ্রমের কাজ করছে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। নসিমন-করিমন, রিকশা, ভ্যান চালানো, বাস-ট্রাক, পিকআপ ও বিভিন্ন ধরনের গাড়ির হেলপার, ইট পাথর ভাঙা, ওয়েল্ডিং’র কাজসহ নানা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশুদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। ফলে শিশুরা অল্প বয়সে লেখাপড়ার পরিবর্তে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।

দারিদ্রের কারণে এ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দিনের পর দিন অস্বাভাবিকভাবে শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও ভাঙ্গুড়ায় এ আইন লঙ্ঘন হচ্ছে। ফলে লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকারও। তাছাড়া পরিবার পরিকল্পনার বড় ধরনের প্রচার থাকলেও তা বাস্তবায়ন খুবই কম। যার কারণে জনসংখ্যার হারও বেড়ে চলেছে। প্রতি বছরই দারিদ্র্যের কারণে শতশত শিশু ¯ু‹ল থেকে ঝরে পড়ে। তাদের বেশিরভাগের পিতা-মাতা দরিদ্র ও নিরক্ষর।

সূত্রমতে, সরকার ৬-১০ বছর বয়সী শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক এবং অবৈতনিক শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য ও উপবৃত্তি প্রকল্প চালু করলেও বেশির ভাগ এলাকায় শিশুদের ব্যাপকভাবে শিক্ষামুখী করা যাচ্ছে না মূলত নানা কারণে। আর্ন্তজাতিক নীতিমালা শিশু শ্রম সম্পূর্ন ভাবে নিষিদ্ধ থাকলেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বন্যা, অনাবৃষ্টি, নদী ভাঙ্গণ, কৃষি উপকরণ ও দ্রব্যমূল্য উধর্বগতি, অর্থনৈতিক সংকট, দারিদ্র ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে শিশুগণ তাদের শ্রম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। অপর দিকে যে সমস্ত শিশু আজ জীবিকার সন্ধানে জীবন যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে হাড়ভাঙ্গা শ্রম দিচ্ছে তার বেশির ভাগই শিশু নির্যাতিত নিপীড়িত।

শিশু শ্রম সর্ম্পকে একাধিক সমাজ সচেতন নাগরিকের সাথে আলাপ করলে তারা সকলেই প্রায় একই কখা বলেছেন। শিশু শ্রমিকের বেতন তুলনামুলক ভাবে কম হওয়ায় এবং কাজে কোন ফাকি না থাকায় সকলেই এদের কাজে নিয়োগ করতে আগ্রহী। পেটের দায়ে শিশুরা ১২-১৬ ঘন্টা শ্রম দেয়। জীবনে বাঁচার তাগিতে এসব শিশু শ্রমকি ১২/১৬ ঘন্টা শ্রম বিক্রি করে ভবিষৎ কর্ম দক্ষতা নষ্ট করে ফেলছে। অল্প বয়সে পরিশ্রম করার ফলে অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্ধ বা পঙ্গুগুত্ব বরণ করছে। এমনকি আবার অনেকেই মৃত্যুবরণ করছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, শিশুদের শ্রমে নিয়োগ বে-আইনী এবং নিন্দনীয় কাজ। পরিবারের সদস্যদের মাঝেও এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এ উপজেলায় অনেক আগের তৈরিকৃত ১১ জন শিশু শ্রমিকের তালিকা থাকলেও এখন তা শতাধিক ছাড়িয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হয়েছে। তাদের আমরা পুনর্বাসন দেয়ার চেষ্টা করছি।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।