রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম খাপড়িখাল (তেলি পাড়া) গ্রামে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বাবুল মিয়া (৩৭) ও বিউটি বেগম (৪৫) গুরুতর আহত হয়েছেন।
গত ২৮ জানুয়ারি রোজ শনিবার বিকাল ৩.৩০ ঘটিকায় জমির মালিকানার বিরোধের জের ধরে বেতগাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম খাপড়িখাল (তেলি পাড়া) গ্রামের এমদাদুল হকের পুত্র সেলিম (৩৮) এবং মৃত আবু বক্কর এর পুত্র বাবুল (৩৭) পক্ষ দ্বয়ের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে বাবুল ও বিউটি বেগম নামে দুইজন গুরুতর আহত হয়ে গঙ্গচড়া হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে হাসপাতালে ভর্তি বাবুল ও বিউটির সাথে কথা বলা হয়। বাবুল বলে, আমরা জমির প্রকৃত মালিক। আমাদের বাপ চাচার নামে জমি ৪০ ও ৬২ দুইটি আছে কিন্তু ৯২ রেকর্ড তারা তাদের নামে করে নেয় এবং জোর পূর্বক দখল করে আছে। বর্তমান জমিটি এমদাদুল হকের পুত্র সেলিম তার জ্যাঠাতো ভাই হাছেন আলীকে বর্গা দেয়। হাছেন আলী জমির আইল কাটতে থাকে। আমার চাচাতো ভাই আনোয়ারুল সে অসুস্থ মানুষ আইল কাটা দেখে হাছেন আলীকে বলে জমিটা আমাদের,কাগজ-পত্রও আছে তাই এর পর যেন জমিটি বর্গা চাষ না করে। এই কথা গুলো হাছেন আলী সেলিমকে বলে আর সেলিম তার ভাই ভাতিজা সহ সেখানে আসে। এসে অসুস্থ আনোয়ারুলের সাথে তর্ক করে এবং তাকে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় মাড়তে থাকে। আমি দেখতে পেয়ে তার প্রতিবাদ করে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে আসি। যার কারণে সেলিম ও তার সহযোগীরা ইলিয়াসের হুকুমে আমাকে মারধর করতে থাকে। তাই দেখে আমার চাচী শেফালী, ভাবী বিউটি, চাচাতো-জ্যাঠাতো বোনেরা এগিয়ে এলে তাদের ও মারধর সহ শালীনতাহানি করে। মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে আমার মাথায় ও আমার ভাবী বিউটিকে ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। সেলিম বলে আমার বাবা বিদেশে থেকে অনেক টাকা রোজগার করে। তোদের মেরে ঐ টাকা দিয়ে পুলিশ ও কোর্ট-কাচারি সামাল দিবো। তার আঘাতের ফলে আমার মাথা ফেটে যায় এবং হাসপাতালে গেলে আমার মাথায় দশটি সেলাই লাগে। আমার ভাবীর মাথায় আঘাত করলে ভাবী হাত দিয়ে বাঁধা দেয়। বাঁধা দেয়ায় তার বাম হাত বুড়ি আঙ্গুল কেটে যায় । যার কারণে তার বাম হাতে মোট বাইশটি সেলাই লাগে।
বাবুলের চাচী শেফালী বলেন, ওরা সবাই আমাদের মারধর করতে থাকলে আমি ৯৯৯ ফোন দিয়ে অভিযোগ দেই। ফোন দিলে পুলিশ এসে আমার ভাতিজা বাবুল ও ভাতিজা বৌ বিউটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পাঠিয়ে দেয়। ঘটনাটি উল্লেখ করে বাবুল মিয়াকে বাদী করে তাদের বিরুদ্ধে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় অপর পক্ষের সেলিমের সাথে। তিনি বলেন, জমি আমার বাবার দাদা আবুল হোসেন সরকারের নামে ৬২ রেকর্ড পরে আমার বাবার নামে ৯২ রেকর্ড হয়। তাদের বলেছি যদি তোমরা জমি পাও তাহলে রেকর্ড কেটে আসলে আমরা দিয়ে দিবো। এই বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হতে হতে তারা মারামারি শুরু করে। তাতে আমার চাচী শাহিনার হাতে চারটি সেলাই পরেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় অভিযোগ দাখিল করেছি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হয় ৯৯৯ এ অভিযোগ প্রাপ্ত হয়ে ঘটনা স্থলে যাওয়া দায়িত্ব প্রাপ্ত এস আই তানজিল হকের সাথে। তিনি বলেন, ৯৯৯ এ অভিযোগ পাওয়ার পর আমাকে দ্বায়িত্ব দিয়ে সেখানে পাঠানো হয়। আমি সেখানে গিয়ে দেখতে পাই তিন চারজন রক্তাক্ত অবস্থায় আহত । আমি তাদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই চিকিৎসার জন্য এবং ঘটনাটি অফিসার ইনচার্জ মহোদয়কে অবগত করি।
এ বিষয়ে কথা হয় গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ দুলাল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, ৯৯৯ এ অভিযোগের মাধ্যমে আমি বিষয়টি জানতে পারি এবং তাৎক্ষণিক আমি সেখানে ফোর্স পাঠাই । সংঘর্ষের ঘটনাটি তাদের কাছ থেকে ভালো ভাবে অবগত হই। পরবর্তীতে দুই পক্ষ আমার কাছে ঘটনাটি নিয়ে অভিযোগ করছে। ঘটনাটির তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শনিবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
জমির মালিকানা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ২
প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩