শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

চৌহালীতে সরিষা ফুলে মৌমাছির গুঞ্জনে মূখরিত কৃষি মাঠ

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২
সিরাজগঞ্জের চৌহালী  উপজেলায় ফসলের মাঠ এখন সরিষা ফুলে হলুদ রঙে সেজেছে। সে এক অপরূপ দৃশ্য। চোখ মেললেই মন জুড়িয়ে যায়। পুরো মাঠ যেন ঢেকে আছে হলুদ চাদরে। ফুলে মৌমাছি আর প্রজাপতির নাচনে গ্রামীণ জনপদ হয়ে উঠেছে আরো মনোমুগ্ধকর। প্রকৃতি যেমন অপরুপ ভাবে সেজেছে, ঠিক সেই সঙ্গে মেতে উঠেছে পেশাদার মধু সংগ্রহে মৌয়ালরা।
 সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে এসব জমির পাশে পোষা মৌমাছির শত শত বাক্স নিয়ে হাজির হয়েছে এসব মৌয়ালরা। বাক্স থেকে হাজার হাজার মৌমাছি বের হয়ে মধু সংগ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছে সরিষার ফুলে ফুলে। এই অপরূপ দৃশ্যে যেকোনো প্রকৃতি প্রেমী মানুষকে আকৃষ্ট করবে। বেশির ভাগ মৌ চাষী এসেছেন সাতক্ষীরা, ফরিদপুর সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। এই সরিষা থেকেই মিলছে খাঁটি তৈল, গরুর স্বাস্থ্যকর খাবার, খৈল, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে সরিষার গাছ। সরিষা চাষে খরচও কম, তাইতো কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় উপজেলা জুড়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবার আরও ব্যাপকভাবে সরিষা চাষ হয়েছে।
মৌমাছির গুঞ্জনে মূখরিত চৌহালীর কৃষি মাঠ জুড়ে।
মৌমাছি সরিষার ফুলে ফুলে উড়ে মধু সংগ্রহ করে। এতে সরিষা ফুলে সহজেই পরাগায়ন ঘটে। সরিষাক্ষেতের পাশে মৌ চাষের বাক্সস্থাপন করলে, সরিষার ফলন অন্তত ২০ শতাংশ বাড়ে। তৎসঙ্গে মৌচাষিরা মধু আহরণ করেও লাভবান।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার খাষকাউলিয়া বাহলগড়া, কুরকি চারব্রীজ, বৈন্যা কোদালিয়া, রেহাই পুকুরিয়া, ঘোরজান সহ বিভিন্ন এলাকায় মৌচাষীরা সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ চাষ করছে।
 এসব জমিতে সরিষার ফুল ফুটেছে আরো সপ্তাহ দু-তিয়েক আগেই। ফুলের মধু আহরণে নেমেছেন, পেশাদার মৌয়ালারা। তাদের বাক্স থেকে দলে দলে উড়ে যাচ্ছে পোষা মৌমাছি, আর সংগ্রহ করছে মধু। মুখভর্তি মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা ফিরছে বাক্সে রাখা মৌচাকে। সেখানে সংগৃহীত মধু জমা করে আবার ফিরে যাচ্ছে সরিষা ক্ষেতে। এভাবে দিনব্যাপী মৌমাছিরা যেমন মধু সংগ্রহ করে। ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে পুরো জমির পরাগায়নেও সহায়তা করে। এ মৌসুমে মৌয়ালরা পোষা মৌমাছি দিয়ে প্রচুর মধু উৎপাদন করে যেমন লাভবান হচ্ছেন ঠিক তেমনি মৌমাছির ব্যাপক পরাগায়নে সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনায় চাষিরাও বাড়তি আয়ের আশা করছেন।
বর্তমানে মৌ চাষে প্রতি বাক্স থেকে সপ্তাহে ৪-৫ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়। তবে অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাসে মধু সংগ্রহ বেশি হয়। ২৫০টি বাক্সে ৩২০ থেকে ৩৫০ কেজি মধু সংগ্রহ করা হয়,
 যার বাজারমূল্য ৬০থেকে ৬৫ হাজার টাকা। মৌ চাষে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। মৌ চাষের কারণে একদিকে যেমন সরিষা উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে অল্প খরচে মৌ চাষ দূর করতে পারে বেকারত্ব। মৌয়াল ব্যবসায়ী শাহিন আলমের পিতা আবু বকর গাজি  জানান, আমরা প্রতি বছর সরিষা ক্ষেত থেকে অনেক খাঁটি মধু সংগ্রহ করে থাকি। এসব মধুর অনেক চাহিদা, বেশ ভাল দামে মধু বিক্রি করা যায়। আগে সরিষা চাষিরা মনে করতো যে এভাবে মধু সংগ্রহ করলে সরিষার ক্ষতি হয়। কিন্তু এখন তারা বুঝতে পেরেছে মধু সংগ্রহে সরিষার ফলন আরো ভাল হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো, মাজেদুর রহমান  জানান, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে এ বছর প্রায় ২ হাজার ৪’শ ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল ও স্থানীয় উভয় জাতের সরিষা কৃষকরা চাষ করেছে। দুই জাতের সরিষা নভেম্বরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আবাদ করতে হয়। ফসল ঘরে উঠতে সময় লাগে জাত ভেদে ৭৫ থেকে ৯০ দিন।
 চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো, সাইফুল ইসলাম জানান, স্থানীয়ভাবে কোনো মৌ চাষ করা হয় না। যারা মৌ চাষ করছেন তারা সকলেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মৌয়াল। তাই এখানে মৌ চাষে এলাকার চাষীদের উদ্বুদ্ধকরণে কার্যক্রম শুরু করা হবে ইনশাআল্লাহ। এই পর্যন্ত সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলা  হতে আগত ৯৫০ টি বক্স স্থাপন করা হয়েছে।

উপদেষ্ঠা সম্পাদক মোঃ গোলাম হাসনাইন রাসেল-০১৭১১-৪১৭৮৮০, সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

২০২৪ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ