মঙ্গলবার , ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

জীবন সংগ্রামে টিকে আছে চাটমোহরের শাঁখারীরা

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২২

সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীদের বিয়েতে রীতি অনুযায়ী সাত পাকে বাঁধার সময় থেকে কপালে সিঁদুর হাতে শাখার ব্যবহার আদিকাল হতে চলে আসছে। স্বামীর মঙ্গলের জন্য আদিকাল হতে এখন পর্যন্ত সনাতন ধর্মের বিবাহিত নারীরা হাতে শাখা ব্যবহার করে আসছেন। বিয়ে হয়েছে অথচ হাতে শাখা নেই এমনটা কল্পনাতীত। তাই এর প্রয়োজন মেটাতে ও জীবিকার তাগিদের বংশ-পরম্পরায় পাবনার চাটমোহরের হান্ডিয়ালের ডেফলচড়া গ্রামে বাস করছেন শাখারীরা।

সরজমিনে দেখা গেছে, এই গ্রামে এখনো ৩৭টি শাঁখারী পরিবারের বসবাস। এর মধ্যে শাঁখা শিল্পের সঙ্গে জড়িত ২০টি পরিবার। বাকি পরিবারগুলো অন্য পেশায় চলে গেছে।

এ গ্রামের শাঁখারী রাজকুমার সেন বলেন, ‘আমার পূর্বপুরুষেরাও এই পেশাযর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এখন আমরা পূর্বপুরুষের পেশা ধরে আছি। ভারত থেকে প্রতিটি শক্সখ ১ হাজার টাকা দিয়ে কিনে আনা হয়। সেটি থেকে তিন জোরা শাখা তৈরি করা যায়। প্রকারভেদে দেশের বিভিন্ন জেলায় ফেরি করে প্রতি জোরা শাখা ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
শাঁখারী রাজকুমার সেন আরও বলেন, ডেফলচড়া গ্রামের অনেক শাঁখারী পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে গেছেন। গত দশ বছরে শক্সেখর দাম বেড়েছে তিন থেকে চার গুণ। শাখার দাম বেড়ে গেলেও ক্রেতারা বেশি দাম দিতে চান না। ফলে তাদের লোকসান গুনতে হয়।

শাখারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি বেসরকারি ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে ক্ষুদ্র শাঁখারীরা বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে অধিক সুদে ঋণ নেন। তার কিস্তি পরিশোধ করতে দিশেহারা হয়ে পড়েন। পরে ঋণের চাপে একসময় ব্যাবসা বাদ দিয়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হন তাঁরা।

একই গ্রামের হারাধন সেন বলেন, ‘একসময় শাখায় নকশা তৈরি করে বিক্রি করতাম। টাকার অভাবে নিজে ব্যবসা বাদ দিয়েছি। এখন কারিগড় হিসেবে মজুরির বিনিময়ে মহাজনের কাজ করে দেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি যান্ত্রিক মটরের সাহায্যে মহাজনের শাখার ফিনিশিয়ের কাজ করি। পরে তারা সেই শাখায় নকশা করে বিক্রি করে।’

শাখারী প্রকাশ নাগের সহধর্মিণী বৃষ্টি নাগ বলেন, ‘আমার বিয়ের আগে বাবা মায়ের কাছে শাখায় নকশা করার বিষয়ে গল্প শুনি। বিয়ের পরে স্বামীর বাড়িতে এসে এ কাজটিই করছি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অন্য কাজ করার পাশাপাশি শাখায় নকশা করি। বিভিন্ন আকারের রেত ও মটরের সাহায্যে ঘঁষে প্রতিদিন চিকন ২৫ থেকে ৩০ জোড়া শাখায় নকশা আর মোটা শাখা হলে ১ দিনে ২০ জোরা শাখায় নকশা করতে পারি। তিনি আরো বলেন, এ পেশা ধরে রাখতে সরকারের সাহায্যে প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর নিকট সহজ শর্তে ঋণ ও প্রনোদনার দাবী করেন তিনি।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।