কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী বিভিন্নস্থানে পাহাড় নির্বিচারে কাটার উৎসব চলছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যে চলছে একের পর এক পাহাড় কাটা। এতে পাহাড়ের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য দিন দিন বিপন্ন হচ্ছে, ঝুঁকির মুখে পড়ছেন পাহাড়-টিলায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠী। ভারুয়াখালীতে রাত শুরু হবার সাথে সাথে শুরু হয় মাটি ভর্তি ডেম্পারের আসা যাওয়া, যার কারণ ঘুমাতে পারে না গ্রামের লোকজন। উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে চলছে পাহাড় নিধনের মহোৎসব।
অভিযোগ রয়েছে, সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে শত শত উচ্চতর পাহাড় কেটে ফসলি জমি ভরাট করছে। বন ও পরিবেশ আইন অমান্য করে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় একশ্রেণির ডেম্পারের মালিকেররা পাহাড় কেটে দেদার মাটি বিক্রি করছে। অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য হারানোর পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। শুধু তা নয় গ্রামের চলাচলে সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ঘোনার পাড়া, নানামিয়া, হাজির পাড়া, বানিয়াপাড়া উল্টাখালী, চৌধুরীপাড়া, পশ্চিমপাড়া সহ প্রতিটি গ্রামে পাহাড় কাটার দৃশ্য দেখারমতন। যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে বাড়িঘর।
স্থানী এমইউপি সদস্য বলেন, ভারুয়াখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন টিলা ও পাহাড় কেটে মাটি পাচার করছে ব্যবসায়ীরা। টিলায় বসবাসকারীরা ভূমিধসের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। গ্রামের সিঙ্গেল ইটের রাস্তাগুলো মাটি ভর্তি ডেম্পার চলাচলের কারণে নষ্ট করে ফেলছে। পাহাড় নিধন ও ফসলি ভরাট বন্ধের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন স্হানীয় বাসিন্দারা।
কক্সবাজার সদর উপজেলা উত্তর বনবিভাগের ধলিরছড়া বনবিট অফিসার আব্দুর রহিমের সাথে পাহাড় নিধন বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বলেন, তিনি জানাই আমাদের অফিসে স্টাফের সংকটের কারণবশত আমরা সব সময় এ বিষয়ে নজর রাখতে পারি না আমাদের সুযোগ মতো গেলে আমরা স্পটে মাঠি কাটার ডেম্পার ও পাহাড় খেকোদের পাইনা। আমরা পাহাড় কাটার স্থানে পৌঁছানোর পূর্বে তারা পালিয়ে যায়। ভারুয়াখালী পাহাড় কাটার মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন মামলার সংক্রান্ত তথ্য মোবাইলে বলা সম্ভব নয়।
ভারুয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে পাহাড় কাটা বন্ধের ব্যাপারে বক্তব্য রেখে আসছি। প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি স্থানীয় সচেতন মহলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছি। পাহাড় নিধনের সঠিক তথ্য দিয়ে আমাকে সহযোগিতা করবেন আমি পরিবেশ ও বনবিভাগের ফোর্স নিয়ে মাটি কাটার ড্যাম্পার আটক করার চেষ্টা করব।
অনুসন্ধানের তথ্য মতে, ৬৫/৭০ পারসন মানুষের বসবাস বাড়ি পাহাড়ে। বর্তমানে ওই পাহাড় গুলোর কিছু না কিছু বিলীন করে ফেলছে। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে পাহাড় গুলো কেটে বৃষ্টির পানির সাথে মাটির ভাসিয়ে দেয়। গ্রীষ্মকালে দিনে রাতে চলে জায়গা ভরাট করার ব্যবসা। এভাবে দিন দিন ধ্বংস হচ্ছে বড় বড় পাহাড় গুলো। বিভিন্ন গোপন সূত্রে জানা যায় যেখানে পাহাড় কাটা হয় সেখান থেকে বনে বিভাগের কর্মকর্তারা পাহাড়কে খেকোদের সাথে অর্থের বিনিময়ে মাটি কাটার সুবিধা দিয়ে থাকে বলে জানা যায়। যদি এমন টাকার বিনিময় যদি সুযোগ দিয়ে না থাকে কিভাবে নির্বিচারে পাহাড় কাটা উৎসব চলতে পারে?