সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে কার্যাদেশ পাওয়ার আড়াই বছর পরও মহিষলুটি হাট সেড নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। এতে করে দীর্ঘদিন যাবত জড়ার্জীন সেডে প্রায় দুই শতাধিক মাছ বিক্রেতা আড়তদাররা দিনের পর দিন চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
এ দিকে দীর্ঘ আড়াই বছরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মহিষলুটি হাট সেড নির্মাণ কাজ শুরু না করায় গত ১ সেপ্টেম্বর তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিলের জন্য সিরাজগঞ্জ জেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর বরাবর পত্র প্রেরণ করেছেন।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলার হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক সংলগ্ন উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহত্ত মহিষলুটি মাছের আড়ত অবস্থিত। আর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর মহিষলুটি হাটে হাট সেড নির্মাণের কার্যাক্রম হাতে নেন।
সে মোতাবেক জেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সিরাজগঞ্জ জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাড়াশের মহিষলুটি হাটে ৫২ লাখ ৭ হাজার ৭৫৪ টাকা ব্যয়ে একটি হাট সেড নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করে। যা ২০২০ সালে জানুয়ারি মাসে দরপত্র আহব্বান করা হয়। এতে পাবনার কাশিনাথপুরের মের্সাস দারুসালাম এন্টার প্রাইজ দরপত্রে অংশগ্রহণ করে কাজ করার জন্য মনোনীত হন। পাশাপাশি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে ৯ ফেব্রæয়ারি মহিষলুটি হাট সেডের নির্মাণের কার্যাদেশও পান।
এরপর গত আড়াই বছরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস দারুস সালাম এন্টার প্রাইজ ওই কাজটি শুরু করেননি। এতে করে জনগুরুত্বপূর্ণ ওই হাটে মাছ বিক্রেতা আড়তদার ও মহজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। আড়তদার সুজন সরকার, মিঠু সরকার, জয়নাল আবেদীন জানান, মহিষলুটি মাছের আড়তটি উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বড় মাছের আড়ত। এখানে প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত চারটি হাট সেডের ঠাসাঠাসি করে প্রায় দুই শততাধিক আড়তদার ও ঢাকা, টাঙ্গাইল, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, বগুড়া, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রায় সহশ্রধিক মাছ ক্রেতা মহজনরা মাছ কেনা-বেচার কাজ করে থাকেন।
তারা আরো জানান, সম্প্রতি বছর গুলোতে আড়তদার ও মাছ ক্রেতার মহজনের সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি অবকাঠামো। ফলে বর্তমান সরকার ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে হাট সেড নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেন। যার কাজ গত আড়াই বছরও শুরু হয়নি। এ কারণে মাছ কেনা-বেচার সাথে জড়িতরা হাট সেডের অভাবে নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। তাঁরা দ্রুত জনস্বার্থে মহিষলুটি হাটে হাট সেড নির্মাণের দাবী জানান।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস দারুস সালাম এন্টার প্রাইজের প্রোপাইটর মো. আলম জানান, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় কাজটি শুরু করতে পারিনি।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার ধ্রুব জানান, বার বার তাগাদা দেওয়া শর্তেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু না করায় আমরা তাদের কার্যাদেশ বাতিলের জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পত্র দিয়েছি। আশা করছি কার্যাদেশটি বাতিল হলে নতুন করে দরপত্র আহব্বান করা হবে।