আবু বক্কার (৩৪) পেশায় একজন অটোভ্যান চালক। তিনি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বাসবাড়িয়া গ্রামের একজন বাসিন্দা। চার সদস্যের সংসার চালাতে নিয়মিত তিনি ভ্যান চালান বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে চলা খালকুলা সড়কেই। প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় এক মাছ চাষির পোনা মাছ আনা নেয়ার কাজ করছিলেন ড্রামে করে। হঠাৎ কাজের এক পর্যায়ে ওই বেহাল সড়কের এক গর্তে পড়ে আটকে যায় তার ভ্যানের চাকা। পরে অন্য এক পথচারি এসে ভ্যানের সামনে থেকে টান দিলেই খুলে যায় চাকা। মেরামত করতে হয় ব্যায় হয় ছয়’শো টাকা। জলে যায় সারাদিনের শ্রম।
শুধু খালকুলা নয় দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় নওগাঁ সড়ক ও বেহাল অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘ ওই সড়ক দুটি দিয়ে যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রী ও চালকদের। সড়কের মাঝখানে থাকা বড় বড় গর্তে পড়ে উল্টে যাচ্ছে ভ্যান ট্রাকসহ ছোট-বড় অসংখ্য যানবাহন। আর বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা ছাড়াও প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষ যাতায়াত করছেন।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায় সংস্কারের অভাবে সড়কে গর্ত তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়েছে মাটি। বিশেষ করে বৃষ্টি হলেই সেই সমস্ত খানাখন্দে জল জমে যায়। ২০ মিনিটের রাস্তা এখন চলাচলে সময় লাগে প্রায় ১ ঘণ্টা।
ওই দুই সড়কের পথচারী আব্দুস সালাম জানান,
সম্প্রতি খালকুলা সড়কে অটোভ্যান গর্তে পড়ে চাকা খুলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয় আহত হওয়ার ঘটনা ও ঘটে।
স্থানীয় মৎস্য চাষি মাসুদ রানা দৌড়ে এসে বলেন, এ উপজেলা মৎস্য ও শস্য ভান্ডার হলেও সর্ব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কেননা বিভিন্ন কৃষি পণ্য নিয়ে পাশ্ববর্তী হাট বাজারে নিয়ে যেতে না পারায় আমাদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হয়। খালকুলা সড়কের অটোভ্যান চালক হাসমত আলী জানান, সড়কের অবস্থা জঘন্য, আর রাস্তা খারাপ হওয়ার জন্য এখান দিয়ে ভালো ভাবে চলাচল করতে পারিনা।
স্থানীয় বাসবাড়িয়া এলাকার সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার এমন বেহাল দশা চলছে, বিশেষ করে জরুরি সেবা প্রসুতি মায়েদের চিকিৎসা ব্যাহত হয়। তবে তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা ইফতেখার সারোয়ার ধ্রুব জানান, মহিষলুটি বাজার হতে নওগাঁ পর্যন্ত ৯ দশমিক ৯০ মিটার। রাস্তাটির কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে খুটিগাছা হতে নওগাঁ পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং করা হয়েছে। আশা করা যায় আগামী এক মাসের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন হবে। অপরদিকে খালকুলা রাস্তাটি স্থানীয় সরকার বিভাগের নয়, সড়ক ও জনপদ বিভাগের বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দিদারুল আলম তরফদারকে ওই সড়কের বিষয়ে জানতে ফোন করা হলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ এমপি এ বিষয়ে বলেন, নওগাঁ সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। অপরদিকে জনদুর্ভোগ কমাতে খালকুলা সড়কের কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে।