মঙ্গলবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

নলডাঙ্গায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্রকরে পিতা-পুত্রকে মারপিটের অভিযোগ উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
নাটোরের নলডাঙ্গায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে  উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ এর প্রতিবেশী ফরহাদ হোসেন (৫৩) ও তার ছেলে জামিউল আলীম জীবনকে (২০) মারপিট করে আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
 সোমবার রাতে উপজেলার রামশাকাজিপুর আমতলী বাজারে এই মারপিটের ঘটনা ঘটে। আহত ফরহাদ হোসেন ওই গ্রামের মৃত ফয়েজ উদ্দিন শাহের ছেলে আর জামিউল আলীম জীবন ফরহাদ হোসেনের ছেলে। আহত পিতা-পুত্রকে উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতাল এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনায় মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী জাহানারা বেগম বাদি হয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, তার বড় ভাই ফয়সাল শাহ ফটিক ও অপর ভাই আলিম আল রাজি শাহের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫ জনের বিরুদ্ধে নলডাঙ্গা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, গত শনিবার রামশারকাজীপুর আমতলি বাজারে জামে মসজিদে মাগরিবের নামাজের পর মসজিদের ভিতর থেকে মাইকের যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ ওই গ্রামের কয়েকজনকে সন্দেহ করেন। এ নিয়ে শালিশী বৈঠক বসিয়ে সন্দেহ ভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে শাসন গর্জন করেন। একই সঙ্গে প্রতিবেশী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক বর্তমানে কলেজ শিক্ষক এসএম ফিরোজের ভাই ফরহাদ হোসেন ছেলে জামিউল আলিম জীবনকে জোরপুর্বক দোষী সাব্যস্ত করেন উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ। কিন্তু জামিউল আলিম জীবন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে স্ট্যটাস দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন চেয়ারম্যান আসাদ। সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে জামিউল আলিম জীবন আমতলী বাজার সংলগ্ন চারমাথা মোড়ে গেলে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদসহ তার লোকজন জীবনকে ডেকে পাঠায়। এক পর্যায়ে জীবনের সাথে ফেসবুকে স্ট্যটাস দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয় এবং জীবনকে কিল ঘুষিসহ মারপিট করতে থাকে। এ অবস্থায় তার বাবা ফরহাদ হোসেন এগিয়ে এলে তাকেও মারপিট করতে থাকে। এক পর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদ একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে ফরহাদ হোসেন মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন। এসময় স্থানীয় লোকজনসহ স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তাদের অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আহত ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই এবং স্থানীয় আমতলি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসএম ফকরুদ্দিন ফুটু জানান, তার ভাই ফরহাদ হোসেনের মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় বেশ অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন আর ভাতিজা জামিউল আলিম জীবনকে আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। জামিউল আলিম জীবনের হার্ড ও ফুসফুস ব্লক হয়ে গেছে বলে ডাক্তার তাদের জানিয়েছেন বলে জানান ফুটু। তাদের দুজনকে উন্নত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদ অন্যায়ভাবে তার ভাই ও ভাতিজাকে বেদম মারপিট করেছে। এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চান তিনি।
তবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আজাদ এসব অভিযোগকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে বলেন, ফেসবুকে লাইভে জামিউল ইসলাম জীবন আমার বিরুদ্ধে মানহানিকর মিধ্যা তথ্য দিয়ে অপ্রচার করে। সোমবার সন্ধ্যার পর আমতলি বাজারে ফেসবুকে আমার নামে মিথ্যা ও বানোয়ট তথ্য ছড়ানোর বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তারা বাপ-বেটা আমার ওপর হামলা চালায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমার বিরুদ্ধে অপ্রচার কেন করা হচ্ছে জানতে চাইলে জামিউল ও তার বাবা ফরহাদ হোসেন ও তাদের লোকজন আমার উপর হামলা করে। আমার মাথায় লাঠিসোটা দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এসময় উপস্থিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর চড়াও হয়ে মারপিট করে। এসময় আমি নিজে তাদের রক্ষা করি। তার ওপর হামলার এঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি বলে জানান তিনি।
নলডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পাওয়া মাত্র রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। যাতে এই ঘটনা নিয়ে আর কোন বিশৃংখলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পরিবারের লোকজনকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী জাহানারা বেগম বাদি হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো ৫ জনকে আসামি করে নলডাঙ্গা থানায় একটি এজাহার দাখিল করেছেন্। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।