সোমবার , ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

দুধের বাজার চড়া, দাম পাচ্ছেন না খামারিরা

প্রকাশিত হয়েছে- শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
স্তুরিত তরল দুধে দেশি কোম্পানিগুলোর দাপট বেড়েই চলছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে পরিবহন খরচ বাড়ায় দুধের দাম ঊর্ধ্বমুখী। অথচ সিরাজগঞ্জে প্রান্তিক খামারিদের কাছে দুধের দাম উল্টো কমিয়ে দিয়েছে কোম্পানিগুলো।
বাজারজাতকারী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো এক সপ্তাহের ব্যবধানে লিটারপ্রতি পাস্তুরিত তরল দুধের দাম বাড়িয়েছে অন্তত ১০ থেকে ২০ টাকা। আর প্রান্তিক খামারিদের কাছে প্রতি লিটারে কমিয়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। দুধের বাজারে ভোক্তা অধিকারের তৎপরতা নেই। আর এর সুযোগ নিচ্ছে দেশের বড় বড় কোম্পানি ও উৎপাদকরা।
শুক্রবার  ভোর ৬টায় সিরাজগঞ্জের দুধের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত শাহজাদপুর ও উল্লাপাড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী প্রতাপবাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি লিটার দুধ ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতাপ গ্রামের খামারি বুলবুল মণ্ডল বলেন, ‘সারা দেশে সব কিছুর দাম বেড়েছে, অথচ আমাদের এখানে দুধের দাম কমেছে। কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন, তেলের দাম বেশি, তাদের গাড়িতে দুধ পাঠাতে অনেক খরচ হয়, তাই দুধের দাম কম দিচ্ছে। আমাদের বাধ্য হয়ে কোম্পানির দেয়া কম দামই নিতে হচ্ছে।’
আলিয়াপুর গ্রামের খামারি আজিজল আকন্দ বলেন, ‘আমার খামারে ২৩টি গরুর মধ্যে ১৪টি দুধ দেয়। সকালে ২৫০ লিটার ও বিকেলে ১৭০ লিটারের মতো দুধ দোহন করতে পারি। দুধের ঘনত্ব অনেক বেশি, তাই প্রাণ ও ব্র্যাক কোম্পানি আমাকে প্রতি লিটার ৪২ টাকা দাম দিচ্ছে। এদিকে মাঠে পানি থাকায় কাঁচা ঘাস নেই, শুকনা খবার খাওয়াতে গিয়ে আমাদের নাজেহাল অবস্থা। প্রতি কেজি ভুসি ৬০ টাকা, খোল ৫৫ টাকা, খরের দামও অনেক বেশি। এত বেশি দামে গোখাদ্য কিনে কম দামে দুধ বেচে আর পোষাতে পারছি না। কীভাবে খামার চালাব বলেন।’
কুইচামাড়া গ্রামের বুদ্দু ব্যাপারী বলেন, ‘কোম্পানিগুলো তাদের পাস্তুরিত তরল দুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এদিকে আমাদের এখানে কমিয়ে দিয়েছে দুধের দাম। কোম্পানিগুলো খামার না করেই বড়লোক হচ্ছে, আর আমরা খামার করে হচ্ছি নিঃস্ব। সরকারের কোনো নজর নেই আমাদের দিকে। বেশ কদিন যাবৎ আমার গরুর দুধের ঘনত্ব কমে গেছে। তাই এখন প্রতি লিটার ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। বাপ-দাদার আমল থেকে খামারে গরু পালন করে আসছি। কেমনে এই গরু বিক্রি করে খামার বন্ধ করে দেই বলেন।’
চলিত বছরের মে মাস থেকে ধাপে ধাপে বাড়ছে বিভিন্ন কোম্পানির পাস্তুরিত তরল দুধের প্যাকেটের দাম। গত মে মাসে দাম ছিল প্রতি লিটার ৭০ টাকা। এখন তা ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ বড় বাজারে ক্রেতা মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘বাজারে বড় কোম্পানিগুলোর দাপট বাড়ছে। বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসারের বাজেট কাটছাঁট করতে হচ্ছে। দুধ কেনাও কমিয়ে দিয়েছি।’
খুচরা দোকানদার সেলিম রেজা বলেন, ‘লাগামহীনভাবে বাড়ছে দুধের দাম। তাই বাজারে ভোক্তা অধিকারের তদারকি প্রয়োজন। তা না হলে ক্রেতারা প্রতারিত হবে। ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা-কাটাকাটি করতে হয় আমাদের।’
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত প্রাণ, আকিজ ও ব্র্যাক কোম্পানির চিলিং সেন্টারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তারা পাস্তুরিত তরল দুধের দাম নিয়ে কথা বলতে রাজি নন বলে জানান। এ নিয়ে তাদের প্রধান কার্যালয়ের বড় কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
সিরাজগঞ্জ ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান রনি বলেন, ‘ভোক্তা অধিকারের সচিব মহোদয়ের সঙ্গে জুম মিটিং হয়েছে। তিনি ঢাকায় সব কোম্পানিতে অভিযান চালাতে বলেছেন। আমরাও আজ অভিযানে নামব। যেহেতু খামারিরা দুধের দাম বাড়াননি, তাহলে কেন প্রাণ, আকিজ, ব্র্যাক পাস্তুরিত তরল দুধের দাম বাড়িয়েছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি। আমরা বিকেলেই প্রান্তিক খামারিদের কাছে যাব এবং কোম্পানিগুলোতে অভিযান করব

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।