পাবনার ভাঙ্গুড়ায় নানা অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার মৌহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা শিক্ষক সমিতির নেতা মোঃ বরাত আলীর বিরুদ্ধে। বুধবার (২৪আগষ্ট) স্কুল পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি মোছাঃ ফাতিমা খাতুন উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগ ও বিশেষ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে উপজেলার হাটগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মৌহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন তখন সভাপতি ছিলেন মোঃ মোখলেছুর রহমান। ২০১৭ সালে নতুন কমিটি গঠন হয়। নতুন কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয় মোছাঃ রোমা খাতুন। নিয়ম অনুযায়ি কমিটি পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যাংক অপারেট পরিবর্তন করে নতুন কমিটির সভাপতিকে ব্যাংক অপারেটর করতে হবে। কিন্তু অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সরকারি নিয়ম না মেনে ব্যাংক অপারেটর পরিবর্তন না করে পূবের সভাপতিকেই বহাল রাখে। ২০১৭ হতে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ে সরকারি যে অর্থ বরাদ্দ আসে তা দায়িত্ব প্রাপ্ত কমিটির কাছে গোপন রেখে সেই অর্থ উত্তোলন করে আসছে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে আবারো নতুন কমিটি গঠন হয়। কমিটি গঠনের পর থেকেই নতুন কমিটির সভাপতি মোছাঃ ফাতিমা খাতুন ব্যাংক অপারেটর পরিবর্তন করার কথা বার বার বললেও তিনি কর্নপাত করেননি। এদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গোপনে জুন মাসে স্কুলের যৌথ ব্যাংক হিসাব থেকে স্লিপের ৫০ হাজার টাকা ও প্রাক প্রাথমিক ১০ হাজার টাকা অবৈধ অপারেটরের স্বাক্ষরে উত্তোলন করে।
বিষয়টি কমিটির সভাপতি ফাতিমা খাতুন টের পেরে প্রধান শিক্ষক বরাত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকার কথা অস্বীকার করে। সভাপতি কমিটির সকলকে এ বিষয় অবগত করেন। গ্রামবাসি এই অনিয়মের বিষয় জানতে পেরে ওই প্রধান শিক্ষকের অপসরণের দাবিতে মানব বন্ধন করার সিদ্ধান্ত নেয়। অবস্থা বেগতি দেখে প্রধান শিক্ষক নিজের অপরাধ স্বীকার করে,তরি ঘরি করে কিছু টাকা খাতা কলমে খরচ দেখায়। এছাড়াও এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্দে নিয়মিত স্কুলে না আসা ও ছাত্রদের দিয়ে দোকান থেকে সিগারেট কিনিয়ে আনাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
ফাতিমা খাতুন জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়মের তোয়াক্কা না করে প্রধান শিক্ষক বরাত আলী অবৈধভাবে অপারেটর রেখে তার স্বাক্ষরে স্কুলের যৌথ হিসাব থেকে যাবতীয় টাকা উত্তোলন করেছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায়। গত এপ্রিল মাসে কমিটি গঠনের পর আমাকে ব্যাংক হিসাবের অপারেটর নিযুক্ত করার জন্য প্রধান শিক্ষককে একাধিক বার বলেছিলাম। এই অনিয়মের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছি।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক বরাত আলী নিজের অনিয়মের বিষয় স্বীকার করে বলেন, ব্যাংক হিসাবের অপারেটর পরিবর্তন না করে অনেক বড় ভুল করেছি। অবৈধ ব্যাংক অপারেটর মোঃ মোখলেছুর রহমান বলেন, আমি শুধু স্বাক্ষর দিয়েছি, কিন্তু টাকার বিষয়ে কিছুই জানিনা।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রধান শিক্ষক বরাত আলীর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খাঁন বলেন, অনিয়মের বিষয় সত্য প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
#CBALO / আপন ইসলাম