সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে কায়েমপুর ইউনিয়নের বলদীপাড়া-হলদীঘর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সাথে স্থানীয় জনগণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান ও স্থানীয় নারী, শিশুসহ অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রবিবার (২১ আগষ্ট) আনুমানিক সকাল ১০.৩০ ঘটিকায় শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের হলদিঘর বলদিপাড়া গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দের আশ্রায়ন প্রকল্পের জায়গা পরিদর্শন কালে কিছু উশৃংখল গ্রামবাসি বাঁধা প্রদান করে এবং অতর্কিতভাবে হামলা করে।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ও শাহজাদপুর সহকারি কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান উশৃঙ্খল গ্রামবাসিকে বোঝানোর চেষ্টা করলে উশৃঙ্খল গ্রামবাসী তাদের কথা শুনে তাদের উপর হামলা চালিয়ে ইউএনও এর গাড়ী ভাংচুর করে।
এসময় এসিল্যান্ডের পিছন থেকে গ্রামবাসীর অতর্কিত হামলায় ও ছোরা ইটের ঢিলে এসিল্যান্ডের মাথায় লেগে মাথা ফেটে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দের আশ্রায়ন প্রকল্প নির্মাণের লক্ষ্যে আজ রোববার সকালে আমি ও এ্যাসিল্যান্ড শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়ন এর বলদিপাড়া,হলদি ঘর এ সরেজমিন পরিদর্শনে যাই। এসময় এলাকার উশৃংখল কিছু উঠতি বয়সী যুবক ও মহিলারা পথরোধ করে ও অশালীন আচরণ করে৷ একপর্যায়ে পেছন থেকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমার গাড়ী ভাংচুর করে এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে এ্যাসিল্যান্ডের মাথা ফেটে যায়। দ্রুত এ্যাসিল্যান্ডকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়৷ পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহজাদপুরের বাইরে থাকায় এখনও কোন মামলা হয়নি।
ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
শাহজাদপুর থানার ওসি অপারেশন আব্দুল মজিদ ঘটনার সত্যতা প্রকাশ করে বলেন, ঘটনাটি সত্যিই খুবই দুঃখজনক, তবে এখনো এজাহার পাওয়া যায়নি তবে এজাহার পেলে মামলা নেওয়া হবে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে এমন হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে গেলে একাধিক ব্যক্তি জানান, শতবর্ষী খেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত এ জায়গাটিতে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী খেলাধুলা করে থাকে তাই আমরা খেলার মাঠ বাঁচানোর জন্য পূর্বেও মিছিল-মিটিং ও মানববন্ধন করেছি কিন্তু কিছুতেই তা আর রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না তাই গ্রামের কিছু মানুষ ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হয়ে এমনটি করতে পারে বলে জানান।
গ্রামের আহত নারী ও শিশুদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে বলে জানা যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান এর আঘাত বেশ গুরুতর তার মাথায় ৮ -১০টি সেলাই দেয়া হয়েছে এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এব্যাপারে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।