শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বিকল্প জ্বালানি, বায়ুবিদ্যুতে চলবে কারখানা

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২
উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে ঝুঁকছে দেশের বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানা। এই পথে যুক্ত হয়েছে  মাইডাস সেফটি বাংলাদেশ লিমিটেড। ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্লাভস তৈরির কানাডীয় বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানটি এর আগে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। এখন তারা উইন্ডমিল বা বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে সরঞ্জাম দেশে পৌঁছেছে। উৎপাদন শুরু হলে বেসরকারি খাতে এটাই হবে দেশের প্রথম উইন্ডমিল।
গত অর্থবছরে ৩০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করা মাইডাস সেফটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পের অংশ হিসেবে চীনের জিয়াংসু নাইয়ার পাওয়ার টেকনোলজি কম্পানির তিন কিলোওয়াট ক্ষমতার ওই উইন্ড টারবাইন আমদানি করেছে। টারবাইনটি গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে, যা আগামী ১৮ আগস্ট কারখানায় পৌঁছাবে। কেনা থেকে স্থাপন পর্যন্ত উইন্ডমিলটির জন্য খরচ হচ্ছে সাত হাজার মার্কিন ডলার।
উইন্ডমিলটি চলতি আগস্টের শেষ দিকে মাইডাস সেফটি গ্রুপের তিন নম্বর ইউনিটে বসানো হবে। একটি টারবাইন থেকে প্রতিদিন ৩৬ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার প্রকল্পটি সফল হলে এ বছরই এমন আরো ১০টি উইন্ডমিল প্রতিস্থাপন করা হবে বলে জানালেন মাইডাস সেফটি বাংলাদেশ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক মইনুল হোসেন।
মইনুল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘২০১৭ সালে নেদারল্যান্ডসের একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বায়ুবিদ্যুৎ নিয়ে একটি সমীক্ষা চালায়। ওই সমীক্ষায় দেখা যায়, বাতাসের গতি মোটামুটি প্রতি সেকেন্ডে ৪ কিউবিক মিটার থাকলে মাঝারি সাইজের একটি উইন্ড টারবাইন থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। চট্টগ্রাম ইপিজেডে আমাদের কারখানাটি একেবারে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী এলাকায়। আমরা বেশ কয়েক মাস এনিমোমিটারে বাতাসের গতি মেপে দেখেছি এখানে বাতাসের চাপ প্রতি সেকেন্ডে গড়ে ৫ কিউবিক মিটার, যা উইন্ড টারবাইনের জন্য আদর্শ। ’ প্রকল্পটি সফল হলে এ বছরের মধ্যে আরো ১০টি উইন্ডমিল বসানো হবে বলে তিনি জানান।
নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গত মে মাস থেকে তিন নম্বর ইউনিটের ছাদে বসানো সৌর প্যানেল থেকে প্রতিদিন এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে কারখানাটি। ডিসেম্বরে ইউনিট-২-তে বসানো প্যানেল থেকে বসানো প্যানেল থেকে পাওয়া যাবে আরো আড়াই মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আর আগামী বছরের জুলাই মাসে ইউনিট-১-এর ছাদে বসানো সৌর প্যানেল থেকে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া গেলে গ্রুপটির মোট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়াবে সাড়ে চার মেগাওয়াটে, যা গ্রুপটির বিদ্যুতের মোট চাহিদার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পূরণ করবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মো. হোসাইন কালের কণ্ঠকে বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে বেসরকারিভাবে বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়নি। তবে এ লক্ষ্যে কাজ চলছে।
গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম ইপিজেডের প্যাসিফিক জিন্স গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল জিন্স লিমিটেডে ৩.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর প্যানেল বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করেছে। একই গ্রুপের প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডে আগামী মাসে চালু হচ্ছে দৈনিক ৫.৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার সৌরবিদ্যুতের আরেকটি প্রকল্প। এভাবে আগামী তিন বছরের মধ্যে গ্রুপটির বাকি ৯টি কারখানার ছাদও ঢেকে দেওয়া হবে সৌর প্যানেলে। যেখান থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৩ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
এর আগে নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা গড়ার উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রামের কালুরঘাট শিল্প জোনের মোহরা এলাকার সনেট ফ্যাশন লিমিটেড। ২০২১ সালের অক্টোবরে চালু হওয়া এই নিট কারখানাটির নিজেদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে গত মার্চ থেকে অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ। কারখানা ভবনের ছাদে বসানো ৬০০ সৌর প্যানেলের মাধ্যমে প্রতিদিন এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে, যা দিয়ে কারখানার চাহিদার প্রায় শতভাগ মেটানো যাচ্ছে। তবে আকাশ মেঘলা কিংবা বৈরী আবহাওয়ায় সৌর প্যানেল থেকে পূর্ণ বিদ্যুৎ না পেলে তখন চাহিদার বাকিটুকু পিডিবি থেকে মেটানো হয় বলে জানালেন বিকেএমইএ পরিচালক ও সনেট টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক গাজী মো. শহীদ উল্লাহ।
তবে দেশের সবচেয়ে বড় ছাদ সৌরবিদ্যুিট চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত প্রথম বেসরকারি ইপিজেড কোরিয়ান ইপিজেডে। ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের লক্ষ্যমাত্রায় গত বছরের জুনে উদ্বোধন হওয়া ইপিজেডটিতে বর্তমানে ২০ মেগাওয়াট
সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। বর্তমানে প্রকল্পটির তৃতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে আরো ২০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন হবে বলে জানালেন কোরিয়ান ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মুশফিকুর রহমান। ’ তিনি বলেন, চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে প্রতিদিন উৎপাদিত সৌরবিদ্যুতের প্রায় ১০ মেগাওয়াট জাতীয় গ্রিডে দেওয়া হচ্ছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।