মঙ্গলবার , ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ভূয়া বিয়ের ফাদে ফেলে চার বছর ধর্ষণ ও নবজাতক হত্যার বিচার পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নাদিরা

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ১ জুন, ২০২২

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ভুয়া বিয়ের ফাদে ফেলে চার বছর ধর্ষণের পর সদ্য ভুমিষ্ট সন্তানকে হত্যার বিচার ও স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন নাদিরা খাতুন (২৫)। সে উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের অষ্টমনিষা হঠাৎপাড়া গ্রামের মো: মহসিন আলীর মেয়ে। অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম শফি (৫০) এই ইউনিয়নের সাহানগর গ্রামের মৃত রেফাত প্রামানিকের ছেলে ও দুই সন্তানের জনক।

লিখিত অভিযোগ ও নাদিরার খাতুনের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে শফিকুল ইসলাম শফি এর ইট ভাটায় কাজ করত তালাক পাপ্ত নারী নাদিরা খাতুন। এক পর্যায় শফি ও নাদিরার মধ্য প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শফি নাদিরাকে শারিরিক সম্পকের প্রস্তাব দিলে নাদিরা রাজি না হওয়ায় প্রভাবশালী শফি ঐ ইউনিয়নের কাজিকে ম্যানেজ করে কাবিন রেজিস্ট্রি না করে শরিয়ত মোতাবেক গোপনে বিয়ে করে। ঐ সময়ই নাদিরা কাবিন রেজিস্টি করার কথা বললে শফি জানায় আগের স্ত্রী জানলে ঝামেলা করবে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরে কাবিন করে নেবে। নাদিরার মা ও একই ইটভাটায় কাজ করায় শফিকে সরল বিশ্বাসে কাবিন ছাড়াই বিয়ে দেয়। নিজ বাড়িতে না নিলেও নাদিরার বাড়িতে নিয়মিত আসতো শফি। তিন বছর পর নাদিরা গর্ভবতী হয়। শফি নাদিরাকে গর্ভপাত করানোর জন্য চাপ দেয়। নাদিরা রাজি না হলে শফি তাকে গর্ভপাতের বিনিময়ে পাঁচ লক্ষ টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখায়। তাতেও নাদিরা রাজি না হলে শফি তার সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এমনকি তার ভরণপোষণও বন্ধ করে দেয়। দরিদ্র পিতার বাড়িতে গর্ভবতী ও অসহায় নাদিরার কেটে যায় আট মাস। গত এপ্রিল মাসে তৃতীয় সপ্তাহে নাদিরা মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পরায় লোক মারফত শফিকে জানালে সে তার ইটভাটা পার্টনার আব্দুল জাব্বারের পরিচালনাধীন উপজেলার একটি বে-সরকারি হাসপাতাল ” ভাঙ্গুড়া হেলথ কেয়ার লিমিটেড” নিতে বলেন। নাদিরার মা শফির কথা মত ডাক্তার দেখাতে হেলথ কেয়ার লিমিটেড” এ নিয়ে যায়। সেখানের নাস বলে নাদিরাকে সরাসরি অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে তাকে সিজার করা হবে। যেহেতু হাসপাতালের পরিচালক শফির ব্যবসায়ীক পার্টনার সেহেতু অনাগত সন্তানের ক্ষতির অশংকা করে নাদিরা ও তার মা সিজার করানোতে বাধা দেন। কিন্তু হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জোর করে তাকে সিজার করান।

হাসপাতাল ছাড়পত্র থেকে জানা যায়, ঐ দিন তার সিজারের এ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগ করেন হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার তুহিন আহমেদ ও সিজার সম্পন্ন করে ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ হালিমা খানম। নাদিরা অভিযোগ করেন সিজারের সময় তাকে না জানিয়ে পরবর্তীতে গর্ভধারন রোধে তার ডিম্বাশয়ের নালী কেটে ফেলা হয়েছে এবং উত্তরাধিকার রোধে শফির পরামর্শে ও পরিচালক জব্বারের নির্দেশে সদ্য জন্ম নেওয়া পুত্র সন্তানটিকে অযত্ন করে মেরে ফেলা হয়েছে। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলেও তাকে সিজার করা হয় রাত একটার দিকে। এসময়ে তাকে স্যালাইন লাগিয়ে অপারেশন থিয়েটারের এককোনে ফেলে রেখে জোর করে একটি ঔষধ সেবন করানো হয়। তার দাবী ঐ ঔষধের কারনেরই তার সন্তান পেটের ভেতরেই অসুস্থ হয়ে পরে এবং জন্মদানের ১২ঘন্টা পরে মারা যায়। শফি নাদিরার সাথে যোগাযোগ না করলেও ঐ মৃত সন্তানকে নিয়ে গিয়ে নিজ এলাকায় গোপনে দাফন করে। এরপরে নাদিরা বাড়ি ফিরে কাবিনের কথা বললে শফি তাকে অস্বীকার করে এবং এই বিষয় নিয়ে আইনের আশ্রয় নিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। অসুস্থ নাদিরা কিছুটা সুস্থ হলে গত সপ্তাহে ঘটনা উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগের ১৬ দিন পার হলেও থানা পুলিশ এখনও কোন ব্যবস্থা না নেওয়াই নাদিরার মা পুলিশের প্রতি কোপ প্রকাশ করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, নাদিরাকে আমি বিয়ে করি নাই এবং এ সন্তান আমার নয়।

সময়ের পূবেই সিজার করার বিষয় জানতে চাইলে ডাঃ হালিমা খানম বলেন, ক্লিনিকের নুথি অনুযায়ি আমি সিজার করেছি। যদি আমার কোন উত্তর দিতে হয় তাহলে আমি কোটে গিয়ে দিব ।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সুলতান জাহান বকুল বলেন, ওসি আমাকে বিষয়টি দেখার জন্য বললে আমি উভয় পক্ষেকে ডেকে আপোষ মিমাংশা করার চেষ্টা করেছি তবে কোন ফলাফল হয়নি।

লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি স্বীকার করে ভাঙ্গুড়া থানা ওসি মুঃ ফয়সাল বিন আহসান বলেন, অভিযোগ টি তদন্তধীন রয়েছে তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।