বৃহস্পতিবার , ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ইসলামে পরোপকার করার গুরুত্ব ও ফজীলাত – মাওলানা: শামীম আহমেদ 

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০২২
মানুষ সামাজিক জীব। সামাজিক হতে হলে পরোপকারী হতে হবে। একজন অন্যজনের বিপদে এগিয়ে আসা, পাশে দাঁড়ানো, সহমর্মী হওয়া, শুধু নিজের সুখের জন্য ব্যস্ত না হয়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করাই মনুষ্যত্ব।
পরোপকার মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বের অলংকার। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা ভালো কাজের নির্দেশ দেবে এবং মন্দ কাজে বাধা দেবে।’ (সুরা-৩ আলে-ইমরান, আয়াত: ১১০)। এ বিষয়ে বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা জগদ্বাসীর প্রতি সদয় হও, তাহলে আসমানের মালিক আল্লাহ তাআলা তোমাদের প্রতি সদয় হবেন।’ (তিরমিজি: ১৮৪৭)।
মানুষের সদ্‌গুণাবলির অন্যতম হচ্ছে পরোপকার। একে অপরের সহযোগিতা ছাড়া জীবন যাপন করা কঠিন। যখন কোনো সমাজে একে অপরের প্রতি সহযোগিতা হ্রাস পায়, সে সমাজের মানুষ সব দিক দিয়েই পিছিয়ে পড়ে। সে সমাজে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, শান্তি বিলুপ্ত হয়, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা তিরোহিত হয়।
ইসলাম সহানুভূতির ধর্ম। পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতা ইসলামের অন্যতম বিষয়। রাসুলে কারিম (সা.) বলেছেন, সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার। তাই পরোপকারের চেতনায় কোনো শ্রেণিভেদ নেই। বড়-ছোট, ধনী-গরিব, আত্মীয়-অনাত্মীয়, স্বজাতি-বিজাতি, মুসলিম-অমুসলিম এসব ব্যবধানের ঊর্ধ্বে উঠে ইসলামের শান্তি ও সৌহার্দ্যের সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা বলে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন মিলেমিশে থাকে। তার মধ্যে ভালো কিছু নেই, যে মিলেমিশে থাকতে পারে না। যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সে-ই শ্রেষ্ঠ মানুষ।’ (আল-মুজামুল আওসাত: ৫৭৮৭)।
পরোপকারী হতে হলে অনেক ধনসম্পদের মালিক হতে হবে এমন নয়। প্রত্যেক মানুষই তার নিজ নিজ অবস্থানে থেকে পরোপকারী হতে পারে। পরোপকার নির্দিষ্ট সীমারেখায় আবদ্ধ নয়; ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় এবং ধর্মীয় ক্ষেত্রে এবং শারীরিক, আর্থিক ও মানসিক কর্মকাণ্ডে এর পরিধি পরিব্যাপ্ত ও বিস্তৃত।
পরোপকার মানুষকে মর্যাদার আসনে সমাসীন করে। পৃথিবীর ইতিহাসে যেসব মনীষী স্মরণীয়–বরণীয় হয়ে আছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই ছিলেন পরহিতৈষী। রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রথম ওহিপ্রাপ্তির পর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে বাড়ি ফিরে খাদিজা (রা.)-কে বললেন, ‘আমাকে কম্বল দিয়ে জড়িয়ে দাও, আমি আমার জীবনের আশঙ্কা করছি।’ তখন খাদিজা (রা.) নবীজি (সা.)-কে অভয় দিয়ে বলেছিলেন, ‘আল্লাহ কখনোই আপনার অমঙ্গল করবেন না। কারণ, আপনি আল্লাহর সৃষ্টির সেবা করেন, গরিব-দুঃখীর জন্য কাজ করেন, অসহায়-এতিমের ভার বহন করেন,
তাদের কল্যাণের জন্য নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।’ (বুখারি: ৪৫৭)।
পরোপকারে নিজেরও কল্যাণ সাধিত হয়। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘অবশ্যই দান-সদকা মানুষের হায়াত বৃদ্ধি করে। অপমৃত্যু থেকে বাঁচায় এবং অহমিকা দূর করে।’ (আল-মুজামুল কাবীর: ১৩৫০৮)।
অনাথ-অসহায় ও অনাহারির কষ্টে সমব্যথী হতে আল্লাহ তাআলা রমজান মাসে রোজা ফরজ করেছেন। নিঃস্ব ও অভাবীর অভাব মোচনে জাকাত ফরজ ও সাদাকুল ফিতর ওয়াজিব করেছেন। দান-সদকা ও অন্যের জন্য খরচে উদ্বুদ্ধ করে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। আল–কোরআনে রয়েছে, ‘কে আছে যে আল্লাহকে কর্জে হাসানা উত্তম ঋণ দেবে, তাহলে তিনি তার জন্য একে বর্ধিত করে দেবেন এবং তার জন্য সম্মানজনক প্রতিদানও রয়েছে।’ (সুরা-৫৭ হাদিদ, আয়াত: ১১)। 

 

#CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।