মঙ্গলবার , ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ২০শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

নৌকা তৈরির ব‍্যস্ততা বেড়েছে চলন বিলঞ্চল পাড়ের নৌকার কারিগরদের

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২৫ মে, ২০২২
তাড়াশ উপজেলার চলন বিল পারের নৌকার কারিগররা বর্ষার মৌসুমকে কেন্দ্র করে নৌকা তৈরীর জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুরু হয়েছে হালকা-মাঝারি-ভারি বৃষ্টি। বর্ষার প্রবল বর্ষণে প্রায় প্রতি বছরই  চলন বিলে বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়।
বর্ষার আগমনের চলন বিলের নৌকার মাঝি, জেলে ও চরের বাসিন্দারা শুরু করে আগাম প্রস্তুতি। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে চলন বিলের তীরবর্তী এলাকাগুলোতে চলছে নৌকা তৈরির ধুম। চলছে পুরোনো নৌকা মেরামতের কাজও। প্রতিবছর বর্ষা আসার আগেই চলন বিল র্তীরবর্তী গ্রামগুলোতে শুরু হয় এই নৌকা তৈরির কাজ। এ সময়টাতে নৌকার কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে চলন বিলে তীরবর্তী হাটিকুমরুল হাইওয়ে রোডের পাশ্বে মান্নান নগর বাজিরে, হামকুড়িয়া বাজারে, নওগাঁ বাজারে, বাঘল বাড়ি চার মাথা, তাড়াশ সহ বিভিন্ন চর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নতুন নৌকা তৈরির কাজ চলছে বেশ জোরেশোরে। কেউ বা পুরাতন নৌকাকেই আরও ভালো করে মেরামত করে নিচ্ছে।
চলন বিল তীরবর্তী নৌকার মাঝি, জেলে ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুস্ক মৌসুমে চলন বিলের পনি কমে যায় নৌকার ব্যবহার কম হয়। বর্ষা মৌসুমে চলন বিল হয়ে উঠে যৌবনে টইটম্বুর। তখন চলন বিল র্তীরবর্তী নৌকার মাঝি, জেলে, কৃষক ও বাসিন্দাদের প্রধান ভরসা হয়ে ওঠে নৌকা। তাই বর্ষা মৌসুম আসলেই এখানে বেড়ে যায় নৌকার কদর।
প্রতিবছরই পুরনো নৌকা মেরামত করতে হয়। অন্যথায় বর্ষা মৌসুমে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। শুস্ক মৌসুমের মেরামতকৃত নৌকা দিয়ে পুরো বর্ষা মৌসুমে নদী পারাপার, সবজি ও মালামাল পরিবহন করতে হয়।
এছাড়া স্থানীয় জেলেরা নৌকা নিয়ে বর্ষা মৌসুমে নদীর গভীরে গিয়ে মাছ ধরে। বর্ষা মৌসুমে আবার অনেকে মাসিক ভিত্তিতে নৌকা ভাড়াও দেয়।
হামকুড়িয়া বাজারের ঘাটের মাঝি মোহাম্মদ ফরজ আলী  বলেন, শুকনো মৌসুমে চলন বিলের পানি কম থাকে। এ সময় পুরোনো নৌকাগুলো মেরামত করে নিতে হয়। ইতোমধ্যে আমার একটি বড় নৌকা সহ ৪টি নৌকা মেরামত করে বর্ষার জন্য প্রস্তুত করেছি।
৪ টন ধারণ ক্ষমতার নৌকা মেরামতে বর্তমান সময়ে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। একই নৌকা নতুন করে বানাতে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। ৯টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন নৌকা তৈরিতে লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। এসময় নৌকা কারিগরদের দামও অনেক বেড়ে যায়।
হাত হিসেবে নৌকা মেরামতের মজুরি নির্ধারণ হয়। প্রতি হাত নৌকা মেরামতে ১০০ টাকা দিতে হয়। এভাবে প্রতিটি বড় নৌকা মেরামতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা কারিগরদের মজুরি দিতে হয়। এমনকি চলতি মৌসুমে নৌকা মেরামত করে যাওয়ার সময় কারিগরদের আগামী মৌসুমের জন্য অগ্রিম টাকাও প্রদান করতে হয়।
নৌকা কারিগর আলামিন বলেন, নৌকা তৈরি ও মেরামত আমার পূর্ব পুরুষের পেশা। গত ৪০ বছর ধরে এ পেশা ধরে রেখেছি। প্রতি মৌসুমে ছোট-বড় প্রকারভেদে ১০০ টি নৌকা তৈরি করে থাকি। পুরাতন নৌকাও মেরামত করি। এখন চলছে নৌকা মেরামতের শেষ সময়। ছোট নৌকা তৈরিতে দুই থেকে চার এবং বড় নৌকা তৈরিতে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে।
নতুন নৌকা তৈরিতে বিশেষ করে আকাশমণি, মেহগনি,কড়াই, ছামালিশ গাছ বেশি ব্যবহার হয়। ছোট নৌকা তৈরিতে ৮-১০ হাজার এবং বড় নৌকা তৈরিতে ১৫-২৫ হাজার টাকা এবং পুরনো নৌকা মেরামতে নৌকার আকার অনুযায়ী ৭-১২ হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি পাই।
বর্ষা মৌসুমে এসব চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা নৌকা। তাই এসময়ে নৌকা তৈরী ও মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। বিলের এসব মানুষ শুকনো মৌসুমে চলন বিলে মাছ ধরে এবং কেউ কৃষি শ্রমিক হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করেন। দুর্যোগকালীন সময়ে এসব পরিবারকে সরকারি সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। 

 

#CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।