শুক্রবার , ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ইসলামে ইতিকাফের গুরুত্ব ও ফজীলাত – মাওলানা:শামীম আহমেদ 

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০২২

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় রমজান মাসের শেষ দশ দিন অথবা অন্য কোনো দিন পার্থিব কাজকর্ম ও পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইবাদতের নিয়তে মসজিদ বা ঘরে নামাজের স্থানে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে।

ইতেকাফ করার মূল উদ্দেশ্য হলো- মসজিদে বসে মহান আল্লাহর আনুগত্য করা। মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ ও সওয়াব অর্জনের আশা করা এবং লাইলাতুল কদর পাওয়ার প্রত্যাশা করা।

প্রতিবছর রমজান মাসের শেষ দশকে রাসূলুল্লাহ (সা.) নিয়মিতভাবে মসজিদে ইতেকাফ করতেন এবং সাহাবায়ে কিরামও ইতেকাফ করতেন। নবী করিম (সা.) ইতেকাফের অনেক বেশি গুরুত্ব দিতেন। এ সময় তিনি উদ্বেল হয়ে যেতেন সর্বদা আমলে থাকতে। কখনো ইতেকাফ ছুটে গেলে পরবর্তীতে আদায় করে নিতেন। ইতেকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে মহান আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্য সমস্ত কিছু থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়। ইতেকাফ ঈমান বৃদ্ধির একটি মুখ্য সুযোগ।

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) এর হাদিস সূত্রে জানা যায়, “রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রতি রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে ইতেকাফ করতেন। এ আমল তাঁর ইন্তেকাল পর্যন্ত কায়েম ছিল। নবী করিম (সা.) এর ওফাতের পর তাঁর বিবিগণও এ নিয়ম পালন করেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)

হয়রত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন, “নবী করিম (সা.) প্রতি রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতেফাক করতেন। তারপর যে বছর তিনি ইন্তেকাল করেন, সে বছর ২০ দিন ইতেফাক করেন।” (বুখারি)

রমজান মাসের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করা সুন্নত এবং এর ফজিলত অপরিসীম। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি রমজানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করবে, তার জন্য দুই হজ্ব ও দুই ওমরার সওয়াব রয়েছে।” (বায়হাকি)

ইতেকাফের ফজিলত সম্পর্কে অন্য হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিনের ইতেকাফ করল, আল্লাহ পাক তার ও দোজখের মধ্যখানে এমন তিনটি পরিখা তৈরি করে দেবেন, যার একটি থেকে অপরটির দূরত্ব হবে পূর্ব ও পশ্চিমেরও বেশি।” (তিরমিজি ও বায়হাকি)

যে ব্যক্তি ইবাদত মনে করে সওয়াবের নিয়তে ইতেকাফ করে, তার সব সগিরা গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। নবী করিম (সা.) ফরমান, “ইতেকাফকারী ব্যক্তি যাবতীয় পাপ থেকে মুক্ত থাকে আর ইতেকাফে লিপ্ত থাকার জন্য কোনো ব্যক্তি বাইরের কোনো নেক কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকলেও ওই নেক কাজসমূহের পূর্ণ নেকি সে লাভ করবে।” (ইবনে মাজা)

হয়রত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলে করিম (সা.) বলেছেন, “ইতেকাফকারী মূলত গুনাহ থেকে দূরে থাকে এবং তাকে ইতেকাফের বিনিময়ে এত বেশি নেকি দেওয়া হবে যেন সে সব নেকি অর্জনকারী।” (ইবনে মাজা)

ইতেকাফের সর্বনিম্ন সময়সীমা এক রাত বলে হাদিস শরিফে উল্লেখ আছে। তবে ইতেকাফ দীর্ঘ সময় ধরে করা উত্তম, বিশেষত মাহে রমজানের শেষ ১০ দিন ইতেকাফ অবস্থায় থাকায় “লাইলাতুল কদর বা হাজার মাসের শ্রেষ্ঠতম ভাগ্যের রজনী লাভের সৌভাগ্য হতে পারে।

মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে পবিত্র মাহে রমজানে মসজিদে ইতেকাফ করার মাধ্যমে গুনাহের পাপরাশি থেকে বেঁচে থেকে অশেষ নেকি লাভের তাওফীক দান করুন! আমিন।

 

 

#CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।