পাবনার ভাঙ্গুড়ায় প্রায় ৫ বছর আগে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন জাহাঙ্গীর আলম পৌরসভার সদরের ভদ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। যোগদানের পর থেকেই জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলামের বনিবনা হচ্ছিল না। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানের ইন্ধনে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম সহকারি শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে হেনস্থা ও মানুষিকভাবে হয়রানি করতে শুরু করেন। অবশেষে সম্প্রতি তিনি নিরুপায় হয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা, ইউএনওসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মুঠোফোনে আত্মহত্যা করবেন বলে খুদে বার্তা পাঠান সহকারি শিক্ষক জাহাঙ্গীর। পরে বিষয়টি জানা জানি হলে সমাধানের উদ্যোগ নেন উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা কর্মকর্তা ও জন প্রতিনিধি।
জানা গেছে, ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের ভদ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৫ বছর আগে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন জাহাঙ্গীর আলম। যোগদানের পর থেকেই বিদ্যালয়ের পাঠ সংশ্লিষ্টসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে ঝামেলা বেধে যায় সহকারি শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের। মোস্তাফিজুর রহমান ও জাহিদুল ইসলাম ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও দুজনই একই ভদ্রপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বিরোধের বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে একাধিকবার সমাধানের চেষ্টা করা হয়। তবে তা প্রত্যেক বারই তেমন কাজ হয় নি। এরই ধারাবাহিকভাবে জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরকে নানাভাবে হেনস্থা করতে থাকেন। জাহাঙ্গীর এর প্রতিবাদ করলে আরোও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন জাহিদুল। সবশেষ গত কয়েক মাস ধরে জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য দেশীয় অস্ত্র (হাসুয়া, দা) নিয়ে বিদ্যালয়ে এসে বসে থাকতেন। এ অবস্থায় গত সপ্তাহে জাহাঙ্গীর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে বিষয়টি অবগত করে আত্মহত্যার হুমকি দেন ওই শিক্ষক। বিষয়টি জানা জানি হলে ইউএনও মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান ও শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জাহাঙ্গীর আলমকে ডেকে তার কথা শোনেন এবং বিষয়টি নিরসনের আশ্বাস দেন। এ দিন শিক্ষা কর্মকর্তা ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
তবে জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ করেন। জাহিদুল ইসলাম দাবি করেন, জাহাঙ্গীর আলম তাকে উল্টো নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
সহকারি শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম আমার জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ না পেলে তার আত্নহত্যা ছাড়া কোন উপায় নেই।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মোবাইল ফোনে কিছু বলা যাবে না। মোবাইলে তাকে বিরক্ত না করার পরামর্শ দেন।
এ ব্যপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি আমি জেনে ইউএনও স্যারের উপস্থিতিতে ওই শিক্ষকের সাথে কথা বলেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ নাহিদ হাসান খাঁন বলেন, আত্মহত্যার ক্ষুদে বার্তা পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে ওই শিক্ষকের সাথে কথা বলে তাকে আশ্বাস্থ করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত করে সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
#চলনবিলের আলো / আপন