সোমবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

রাজশাহীর সীমান্তে সক্রিয় মাদক কারবারিরা, প্রশাসনের ভুমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ২০ মার্চ, ২০২২
মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের নীতি জিরো টলারেন্স। তবুও আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে রাজশাহীর সীমান্ত এলাকার চোরা কারবারি ও মাদক ব্যবসায়ীরা। পুলিশী তৎপরতায় চুনোপুঁটিরা ধরা পড়লেও অধরা পাইকারি মাদক ব্যবসায়ীরা। সীমান্ত পথ দিয়ে আসছে মাদকের বড় চালান। ঈদকে ঘিরে রেখে মজুদ বাড়াতে সক্রিয় এখন মাদক ব্যবসায়ীরা। নিত্যদিন ভারত থেকে আসছে কোটি কোটি টাকার হেরোইন,ফেন্সিডিল,গাঁজাসহ বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের মদ। এগুলো অবৈধ পথে নিয়ে এসে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তরে।
বর্তমানে এ জেলার সিমান্ত এলাকায় সক্রিয় মাদক ব্যবসায়ী প্রায় তিন হাজার। মাদক ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, মাদক পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে গোদাগাড়ী, সাহেবনগর, মানিকচক, কোদালকাটি, আলাতুলি বগচর, হাকিমপুর, সুইজগেট, কামারপাড়া, সুলতানগঞ্জ, সারাংপুর, ভগবন্তপুর, হাটপাড়া, বারুইপাড়া, রেলবাজার, মাদারপুর, মাটিকাটা, সিএন্ডবি আঁচুয়া, গড়ের মাঠ, রেলগেট বাইপাস, বিদিরপুর, প্রেমতলী, ফরাদপুর, রাজাবাড়ী, খরচাকা, নির্মলচর,
পবা উপজেলার সোনাইকান্দি, গহমাবোনা, জাহাজঘাটি, হরিপুর, হাড়পুর। চারঘাট উপজেলার ইউসুপপুর, মুক্তারপুর, গোপালপুর, টাংগন, পিরোজপুর, রওথা এবং বাঘার মীরগঞ্জ, হরিরামপুর ও আলাইপুর সীমান্ত ব্যবহৃত হচ্ছে।
এসব সীমান্ত এলাকা দিয়ে ফেন্সিডিল, মদ ও গাঁজা আসলেও গোদাগাড়ী সীমান্ত পথগুলো দিয়ে বেশীরভাগ হেরোইন প্রবেশ করে। হেরোইনের বড় চালান আসার পর সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে ভাগবাটোয়ারা হয়ে অভিনব কৌশলে তা পাচার করা হয়। হেরোইন বহনে নারী ও শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। গোদাগাড়ী সীমান্তে শুধু হেরোইন পাচারের সঙ্গে ৫ শতাধিক চোরাচালানি জড়িত রয়েছে। এরা অল্প সময়ের ব্যবধানে বনে গেছেন কোটিপতি। হেরোইনের খনিখ্যাত গোদাগাড়ীতে পাইকারি ছাড়াও খুচরাভাবে হেরোইন বিক্রি হয়। হেরোইন ও ফেন্সিডিলের সঙ্গে জড়িত মাদক ব্যবসায়ীরন তাদের ব্যবসা নিরাপদে চালিয়ে যেতে পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন সখ্যতা।
গোদাগাড়ী থানা পুলিশের অদৃশ্য মদদে মাদক কারবারিরা বেশি সক্রিয় বলে জানা গেছে। মাসিক মাসোহারা নেওয়ার কারণে মুলহোতারা থাকেন ধরা ছোঁয়ার অনেক বাহিরে। পুলিশের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করণে মাঝে মাঝে চুনোপুঁটিসহ কিছু মাদক কারবারিকে আটক করে থানা পুলিশ। যা জনগণকে আইওয়াশ মাত্র। গোদাগাড়ী সীমান্তের মাদকের বড় বড় চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে আটক করা হলেও সেই চালানগুলি ধরতে ব্যর্থ গোদাগাড়ী থানা পুলিশ।
মাদক ব্যবসায়ীদের সূত্রটি আরো জানায়, ঈদে নিয়মিত মাদকসেবী ছাড়াও নতুন করে তরুণরা মাদকসেবন করে থাকে। ঈদ উপলক্ষে তরুণদের হাতে টাকা আসার পর অধিকাংশ তরুণ এই টাকা মাদকের পেছনে ব্যয় করে। এই কারণেই ঈদে মাদকের চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ায় মজুত বাড়ায় ব্যবসায়ীরা। ঈদে চড়া দামে মাদক বিক্রি করে লাভবান হওয়ায় নতুন করে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে বেকার যুবকরা। বিশেষ করে ফেন্সিডিল ও গাঁজার চাহিদা বেশি থাকে তরুণদের কাছে। তাই বাঘা, চারঘাট, পবার সীমান্ত পথগুলো দিয়ে ফেন্সিডিল আসে বেশি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ১৮ মার্চ ভোরে গোদাগাড়ী কেল্লাবাড়িপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন এস আই সাহেদ আলী। অভিযানে দুই ব্যাগে ১৫০ বোতল ফেন্সিডিলসহ মারুফ নামে এক মাদক কারবারিকে আটক করেন। আটক মারুফ মহিশালবাড়ি এলাকার ফারুকের ছেলে। মারুফের সঙ্গে থাকা অন্য মাদক কারবারি পালসার মোটরসাইকেল ফেলে চালক সাদ্দাম পালিয়ে যায়। মাদক ও মোটরসাইকেল জব্দ করেন পুলিশ। এই মারুফ মুলত মাদক কারবারি মাদারপুর রেলবাজার এলাকার মৃত আজিজুল হকের ছেলে তোফায়েলের সহযোগী। মাদকের মুলহোতা তোফায়েল। তোফায়েলের সহযোগী অন্যান্যরা হলেন সাহু, সাদ্দাম, ইকো, মিঠুন, দিবস।
এবিষয়ে গোদাগাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, ৮০ বোতল ফেন্সিডিলসহ মারুফ নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় একটি পালসার মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। একজন পালিয়ে গেছে তার বিরুদ্ধে ঐ মামলায় পলাতক দেখানো হবে। মুলহোতা তোফায়েলকে আসামী করা হয়েছে।
উক্ত ফেনসিডিল উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ ও স্থায়ীদের মতভেদ রয়েছে। পুলিশ বলছে ১ ব্যাগে ৮০ বোতল ফেন্সিডিলসহ মারুফকে আটক করেছেন। আর মোটর সাইকেল ফেলে পালিয়েছে নাহিদ। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন দুই ব্যাগে ১৫০ বোতল ফেন্সিডিলসহ মারুফকে আটক করেছেন পুলিশ পালিয়ে গেছে সাদ্দাম।
একটি বিশ্বাস্ত সুত্র নিশ্চিত করেন, কাউন্সিলর শহিদুল ইসলামের দেন দরবারে গোদাগাড়ী থানার সেকেন্ড অফিসার তোফায়েল মোটা অংকের বিনিময়ে উদ্ধার কম দেখিয়ে ঘটনার হেরফের করছেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এবিষয়ে সেকেন্ড অফিসার তোফায়েল বলেন, বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে পারবো না। আপনারা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন।
গোদাগাড়ী থানার সক্রিয় মাদক ব্যবসায়ীরা ও থানা এলাকায় মাদকের ছড়াছড়ি এবং ধরাছোয়ার বাহিরে কেন মুলহোতারা এবিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম ওভার ফোনে বলেন, মাদক কারবারিদের ধরতে আমাদের বিশেষ অভিযান অব্যাহত আছে। সক্রিয় ব্যবসায়ীদের ধরতে পুলিশ তৎপর আছেন। ইতিমধ্যে অনেক মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে। 

 

#চলনবিলের আলো / আপন

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।