রাান্নাঘরে হলুদ, বিয়ে বাড়িতেও হলুদ, হলুদ মিশে আছে বাঙালির খাদ্যাভ্যাস ও সাজগোজের সংস্কৃতিতে। অর্থনৈতিক দিক থেকেও হলুদ চাষ লাভজনক। এ কারণে আটঘরিয়ায় অনেক চাষি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হলুদ চাষ করে সফল হচ্ছেন। বিশেষত পতিত জমিতে হলুদ চাষ করে ভাগ্য ফিরিয়েছেন অনেকে।আটঘরিয়া উপজেলায় চলতি বছরে ৪১ হেক্টর জমিতে হলুদের চাষ করা হয়েছে। হলুদকে সাথি ফসল হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে অনেকেই জানিয়েছেন।
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে হলুদের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় উৎপাদিত হলুদের ফলন হয়েছে বেশ। মাঠে কৃষকরা হলুদ ওঠাতে ব্যস্ত এখন। ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীরা কাঁচাহলুদ কিনে চাতালে সিদ্ধ করে শুকিয়ে সংর¶ণ করতে শুরু করেছেন।
হলুদ চাষি দুলাল মৃর্ধা বলেন, দেবোত্তর, একদন্ত, চাঁদভা, মাজপাড়া পৌরসভায় ব্যাপক হারে হলুদ চাষ হয়েছে। এ বছর হলুদের ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। হলুদ ¶েতের ভেতর মরিচেরও চাষ করে মুনাফা একটু বেশি পেয়েছেন।
হলুদ চাষিরা জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ৪০-৪৫ মণ হলুদ উৎপাদিত হয়েছে। প্রতি মণ কাঁচাহলুদ বিক্রি হচ্ছে ১৫শ’ থেকে ২হাজার টাকা পর্যন্ত। হলুদ চাষে জৈব সার ব্যবহারে খরচ হয় কম। এক বিঘা জমির কাঁচাহলুদ বিক্রি হচ্ছে ৪০/৪৫ হাজার টাকায়। অনেক বছর ধরে হলুদ চাষ করছেন তিনি। আগে চাষ করতেন নিজ পরিবারের সারা বছরের চাহিদা মেটাতে। এখন তিনি হলুদ আবাদ করছেন ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে। এর মধ্যে অনেক পতিত জমিও ছিলো।
ভালো ফলনের জন্য গভীরভাবে ৪ থেকে ৫টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে এবং আগাছা পরিষ্কার করে ঢেলা ভেঙে ভালোভাবে জমি তৈরি করে নিতে হবে। হলুদের গায়ের মাটি এবং শিকড় পরিষ্কার করার পর হলুদ কোনো ধাতব বা মাটির তৈরি পানিভর্তি পাত্রে ধীরে ধীরে জাল দিয়ে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সিদ্ধ করতে হয়। হলুদের শুকনো পাতা জ্বালানির কাজে ব্যবহৃত হয়। হলুদ সিদ্ধ করে ১২-১৩ দিন রৌদ্রে শুকিয়ে ঘরে সংর¶ণ করা যায় হলুদ।
কৃষিবিদ সজীব আল মারুফ জানান, আটঘরিয়া উপজেলা মোট ৪১ হেক্টর জমিতে হলুদের আবাদ করা হয়েছে। হলুদের রয়েছে নানা গুণ। ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে হলুদের কোনো জুড়ি নেই। খালি পেটে কাঁচা হলুদের রস খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। দুরারোগ্য ক্যানসার রোগ সারাতে হলুদ মশলাসমৃদ্ধ তরকারির ঝোল পথ্য হিসেবে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।
#চলনবিলের আলো / আপন