শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বরিশালের তিন সাহসী করোনা যোদ্ধা ভয়, শঙ্কা ও মৃত্যুর আতঙ্ক জেনেও চলে এলাম

প্রকাশিত হয়েছে- বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
সকালে নাশতার টেবিলে মা, বাবা ও ছোট ভাই এগিয়ে আসে। মা রঞ্জা রানীর মুখটা ছিলো মলিন। মাথায় হাত রেখে মা বললেন, যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন, তারাওতো কোনো না কোনো মায়ের সন্তান। তাদের সেবার জন্য তোমাকে পাঠাচ্ছি। ভয় পেলে চলবেনা, মনযোগ দিয়ে কাজ করিও।

মায়ের কথা শুনে বাবা সুধাংশু হালদারও সাহস পেলেন। বললেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারাদিয়ে এ দেশে মুক্তিযুদ্ধ একবার হয়েছে। সবার ভাগ্যে সেই যুদ্ধে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। করোনাও একটা যুদ্ধ। আজ বঙ্গবন্ধুর যোগ্যউত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানেও এই যুদ্ধেও সবার অংশ নেওয়ার সৌভাগ্য হবেনা। তুমি যাও, আমাদের আশীর্বাদ তোমার সাথে রইল।

কথাগুলো বলছিলেন-ভয়, শঙ্কা ও মৃত্যুর অজানা আতঙ্ক জেনেও করোনার উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করা টেকনোলজিস্ট বিভূতি ভূষণ হালদার (৩০)। ইতোমধ্যে তিনি প্রায় তিন শতাধিক রোগীর খুব কাছে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেছেন।

একইভাবে ঝুঁকি উপো করেও মানব সেবায় কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন শেবাচিম হাসপাতালের অফিস সহায়ক আব্দুল্লাহ আল বায়জিদ। ভয়কে জয় করে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে প্রতিদিনই ছুটে যাচ্ছেন রোগীদের পাশে। গত ৮ এপ্রিল থেকে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড থেকে বিভূতি ভূষণের সাথে রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করার পর ল্যাব পর্যন্ত আনা নেওয়া তাকেই করতে হচ্ছে। তারা দুইজন ছাড়া করোনা ওয়ার্ডের মধ্যে খুব কম সংখ্যক লোকজনই যায়।

জানা গেছে, বায়জিদের পদ অফিস সহায়ক হলেও সে একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট। ল্যাবরেটরি মেডিসিনের উপর তার ডিপ্লোমাও রয়েছে। সেই কারণে তার পদ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের না হলেও তার এ ধরণের কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। নগরীর ধানগবেষনা রোডের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল বায়জিদ জানান, পৃথিবীতে যখন এসেছি একদিনতো মরতেই হবে। যদি মানুষের সেবা করে মারা যাই তাহলে আল্লাহতায়ালা আরও বেশি খুশি হবেন। তিনি আরও জানান, যতোদিন দায়িত্বে থাকবো ততোদিন কাজ করবো।

গত ২৯ মার্চ থেকে শেবাচিম হাসপাতালে রোগীদের করোনাভাইরাসের পরীা কার্যক্রম শুরু হয়। সেইদিন থেকেই তারা দুইজন এক নাগারে শেবাচিমের করোনা ওয়ার্ডে নমুনা সংগ্রহের কাজ করে যাচ্ছেন।অপরদিকে করোনার ক্রান্তিলগ্নে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন পুলিশের এসআই নাজমুল হুদা। ভয়কে উপো করে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের ভর্তি থেকে শুরু করে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া একাধিক রোগীর কাছে তাকে ছুটে যেতে হয়েছে। স্বেচ্ছায় এ কাজের জন্য নিজেকে সমর্পণ করে শেবাচিমে করোনা ইউনিট এবং পিসিআর ল্যাব চালু হওয়া থেকে অদ্যবর্ধি এ পুলিশ অফিসার রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন।

করোনা দুর্যোগের মধ্যে প্রকৃত মানব সেবার প্রমান দেয়ায় জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান সময়ের সাহসী সন্তান আখ্যা দিয়ে তাদের কাজের উৎসাহ প্রদানের ল্েয টেকনোলজিস্ট বিভূতি ভূষণ হালদারকে ২০ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড ও তার সহকারী আব্দুল্লাহ আল বায়জিদকে ১০ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড এবং প্রত্যেককে শুভেচ্ছা স্বরূপ রকমারি ফলের ঝুঁড়ি প্রদান করেছেন।একইভাবে করোনার ক্রান্তিলগ্নে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের প থেকে শেবাচিমে করানোর সম্মুখ যোদ্ধা এসআই নাজমুল হুদাকে নগদ অর্থ পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।