মঙ্গলবার , ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১লা রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

চাটমোহর কাটা নদীতে সেতুর অভাবে ভোগান্তিতে ৫০ হাজার মানুষ

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২

চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের কাটা নদীতে সেতু না থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে দুই ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। বর্ষায় কর্দমাক্ত পথ মাড়িয়ে স্কুল-কলেজ গামী শিক্ষার্থীসহ বয়োবৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী এবং রোগীদের চলাচল প্রায় অসম্ভব। তাই একটি পাকা সেতু নির্মাণের দাবি ছিল এলাকাবাসীর। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তাদের এ দাবি পূরণ হয়নি।
উপজেলার পাকপাড়া গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে হান্ডিয়াল কাটা নদী। এই নদীতে সেতু না থাকায় কয়েক হাজার এলাকাবাসীকে প্রতিনিয়ত দৈনন্দিন কাজে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। তাদের মৌলিক চাহিদা মিটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষ করে, কৃষি কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা, জমিতে সার ওষুধ ও উৎপাদিত ফসল পরিবহন, জমির ফসল ক্রয়-বিক্রয়ে অসুবিধা। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত অসুবিধা সহ অসুস্থ লোকজনকে দ্রুত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত হতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের।
যুগ যুগ ধরে যেকোনো প্রয়োজনে নদীর পুর্বপাড়ে আসতে হলে তাদের নদীতে খেয়া পার হয়ে আসতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে কোনো মতে নরবড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে হয়। আবার বর্ষা মৌসুমে তাদের পাড়াপাড়ের একমাত্র ভরসা ডিঙ্গি নৌকা। বিশেষ করে নবীন ও চরনবীন গ্রামে শিক্ষার্থীদের নদীর পুর্ব পাশে স্কুল ও কলেজগুলোতে আসতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আবার নদীর পুর্ব পাশে রয়েছে পাকপাড়া গ্রাম। ওই গ্রামের মানুষের অধিকাংশই ফসলি জমি রয়েছে নদীর পশ্চিম পাশে। নদীতে সেতু না থাকায় ওই ফসলি জমিগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে চাষাবাদ করা খুবই কষ্টসাধ্য। তাদের আদিযুগের লাঙলে চাষ করে জমিতে ফসল ফলাতে বেশি নির্ভর সহ উৎপাদিত ফসল ঠিকমতো ঘরে তুলতেও হিমশিম খেতে হয়।
এ ছাড়া নদীর পশ্চিম তীরে কোনো বাজার বা হাট না থাকায় তাঁরা পূর্ব তীরের হাটবাজারের ওপর নির্ভশীল। নবীন গ্রামের লোকজন তাদের উৎপাদিত ফসল বাজারে বিক্রি করতে না পেরে ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। ফলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার, ওষুধপত্র এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে না পেরে পশ্চিম তীরের মানুষ খুব কষ্টে দিনযাপন করছে।
স্বাধীনতার পর থেকে একক স্বেচ্ছাশ্রমে তিন গ্রামের মুষ্টির চাউল ও ধানের বিনিময়ে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে যাতায়াতের সুবিধা সৃষ্টি করেন ঘাট মাঝি। হান্ডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় ও পাকপাড়া মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, তাদের বাড়ি নদীর পশ্চিম পাড় কিন্তু স্কুল পূর্বপাড়, নদীতে সেতু না থাকায় তারা সময়মতো স্কুলে আসতে পারেনা। সারা বছরই নদী পার হয়ে স্কুলে আসতে হয় তাদের। নদী পার হয়ে স্কুলে আসা বা যাওয়ার সময় মাঝে মধ্যে হাত থেকে বইখাতা পানিতে পড়ে ভিজে যায়। এছাও বর্ষা মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টিতে নৌকাডুবির আশঙ্কা থাকায় শিক্ষার্থীরা ভয়ে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় আসা সম্ভব হয় না।
চাটমোহর উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের তথ্য মতে ২০১১ সালে আদম শুমারি অনুযায়ী হান্ডিয়াল ইউনিয়ন এলাকায় লোক সংখ্যা ২৮ হাজার ২৯১ জন। ছাইকোলা ইউনিয়ন এলাকায় ২৯ হাজার ২০৯ জন। এই জনসংখ্যার বেশিরভাগ জনসাধারণ তাদের পারিবারিক সহ দৈনন্দিন কাজের জন্য ওই রাস্তা ও সেতু একমাত্র ভরসা।
এ বিষয়ে হান্ডিয়াল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ রবিউল করিম মাস্টার বলেন, নদী পারাপার হয়ে হান্ডিয়াল ও ছাইকোলা দুই ইউনিয়নের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। কাটা নদীতে সেতু না থাকায় দুই ইউনিয়বাসীর রাস্তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। মাত্র প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা সমস্যায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যোগাযোগ করতে হয় দুই ইউনিয়ন বাসীর। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিনের সেতু ও রাস্তার কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে গ্রামবাসী স্থানীয় সরকারের কাছে সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছে আমি তাদের সাথে একমত।
চাটমোহর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সুলতান মাহমুদ বলেন, সেতুটি নির্মাণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ সেতু নির্মাণ হলে দুটি ইউনিয়ন বাসীর সরাসরি সংযোগ স্থাপন হবে। সেতুটি নির্মাণের জন্য এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে একটি প্রকল্প-পরিকল্পনা পাঠানো হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।