শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বইমেলায় বিক্রি বাড়ছে, ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা প্রকাশকদের

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
নানা টানাপোড়েনের পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২২। গত দুই বছর প্রায় সব প্রকাশককে গুনতে হয়েছিল লোকসান। তাই ক্রয়-বিক্রয় ও লোকসমাগম নিয়ে প্রকাশকদের মাঝে বিরাজ করছিল দোদুল্যমান অবস্থা। তবে এবারের মেলার প্রথমদিন থেকেই পাঠকদের সরব উপস্থিত এবং ক্রমান্বয়ে বই বিক্রি বাড়ায় আশার পালে হাওয়া লাগতে শুরু করেছে।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) পঞ্চম দিনে মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায়। মেলা চত্বর ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবারের তুলনায় লোকসমাগম কিছুটা কম হলেও আগের দিনগুলোর তুলনায় নেহাত কম নয়। ক্রমান্ময়ে লোক সমাগম বাড়ছে। প্রকাশক  ও বিক্রয় কর্মীরা জানান, ক্রমান্বয়ে বিক্রি বাড়ছে। সামনে আরও বাড়বে বলে আশা তাদের। বিক্রি বাড়ায় প্রকাশকদের প্রত্যাশা গত দুই বছরের লোকসান মিটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবেন।
জিনিয়াস পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গত দু’বছরের তুলনায় এবার প্রথম দিন থেকেই বিক্রি ভালো। যত দিন যাচ্ছে বিক্রি বাড়ছে। মেলার সময় বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন; যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও বাড়ানোর ঘোষণা দেননি। আমরা আশা করছি, তিনি সময় বাড়াবেন এবং আগের ক্ষতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।’
অবসর প্রকাশের স্বত্বাধিকারী নূর-ই-মুনতাকিম আলমগীর বলেন, ‘আজকে মেলার পঞ্চম দিন। এখন পর্যন্ত বিক্রি ভালো হচ্ছে। বিক্রি ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। আশা করছি, সামনে আরও ভালো বিক্রি হবে। গত বছর টালমাটাল পরিস্থিতিতে মেলা শুরু হয়ে শেষ সময়ের আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমরা একটা আভাস পাচ্ছি মেলার সময় বাড়বে; এটি পাঠক, লেখক, প্রকাশক সবার জন্যই ভালো হবে।  গত দুই বছর প্রকাশকরা লোকসানের মধ্যে আছেন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তারা।’
জিনিয়াস পাবলিকেশনের বিক্রয় কর্মী সাব্বির হোসেন বলেন,  ‘আজ দুই দিন বিক্রি আগের দিনগুলোর তুলনায় বেশি হচ্ছে। মেলা জমে উঠেছে। পরিস্থিতি দেখে বোঝা যাচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে পাঠক সমাগম আরেও বাড়বে, বিক্রিও বাড়বে।
অক্ষর প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী ইমাম হোসেন বলেন, ‘মেলার শুরুর দিন থেকেই ক্রমান্বয়ে বিক্রি ও পাঠক সমাগম বাড়ছে। বিক্রি ভালো হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, মেলার যত সময় গড়াবে, বিক্রি তত বাড়বে। সব পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। স্কুল-কলেজ খুলে দিলে মেলায় পাঠকদের আরও উপচে পড়া ভিড় দেখতে পাবো। সঙ্গে বিক্রিও বাড়বে।’
চাঁদপুর থেকে বইমেলায় ঘুরতে এসেছেন এক শিক্ষার্থী মিনহাজ আহমেদ। তরুণ লেখকদের প্রতি তার ঝোক বেশি। এছাড়াও নামকরা লেখকরাও তার পছন্দের তালিকার শীর্ষে। তিনি বলেন, ‘বইমেলার প্রতি আমার ছোটবেলা থেকেই টান। গতবছর মেলার সময়টাতে গাড়ি বন্ধ থাকায় আসতে পারিনি। এবার আসতে পেরে ভালোই লাগছে। মেলার এবারের স্টল বিন্যাসও বেশ ভালো লাগছে। ঘুরে ঘুরে দেখছি। বই পছন্দ করছি, কিনছি। আজ দুইটা বই কিনলাম। আরও কিছুদিন ঢাকায় থাকবো। মেলায় আসবো। আরও কয়েকটা বই কিনবো।’
করোনার কারণে বইমেলা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ছিল, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশ নিতে হবে দর্শনার্থীদের। আর বই বিক্রেতার জন্য বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, টিকা সনদ যাচাইয়ের নির্দেশনা দিয়েছিল মেলা কর্তৃপক্ষ। মেলায় প্রবেশের সময় সবার মুখে মাস্ক থাকলেও ভেতরে প্রবেশের পর অনেকেই মাস্ক খুলে নিচ্ছেন হাতে, পকেটে, থুতনিতে। মেলায় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নির্বাহী মাজিস্ট্রেট মনীষা রানী কর্মকারের নেতৃত্বে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী, বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশনা সংস্থাকে জরিমানা করেন তিনি। অপরাধের ধরণ বুঝে ২০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয়।
মেলায় আলোচনা অনুষ্ঠান
বইমেলার মূলমঞ্চে শনিবার বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: উন্নয়নে নারী’ শীর্ষক আলাচনা অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন। প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে নারীদের শুধু বীরের স্বীকৃতি প্রদানই নয়; যুদ্ধবিধস্ত স্বাধীন দেশে এই বীর-নারীদের পুনর্বাসন করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল নারী পুনর্বাসন কেদ্র। শুধু বীর নারীর মর্যাদার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যায়নি। ১৯৭২ সালে রচিত সংবিধানে নারীর মানবাধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে কর্মক্ষেত্রে নারীদের ইতিবাচক অগ্রগতি আমাদর অনেকটাই আশার জায়গা তৈরি করেছে। এর বিপরীত নারীর নিপীড়ন এবং নির্যাতনের চিত্রটিও কম ভয়াবহ নয়। নারীর জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তা বাংলাদেশের টেকসই অগ্রগতিকে সুনিশ্চিত করবে।’
সভাপতির বক্তব্যে নাছিমা বেগম এনডিসি বলন, ‘নারী ও পুরুষকে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে যেদিন মানুষ হিসবে দেখা হবে, সেদিনই বাংলাদশ তার কাঙ্ক্ষিত সমতার সমাজ তৈরি করত সক্ষম হবে। নারীকে তার অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে হবে। পাশাপাশি পরিবার থেকেই শিশুকে নৈতিক মূল্যবোধ শিক্ষা দিতে হবে এবং নারীর প্রতি সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গি লালনের মনোভাব গড়ে তুলতে হবে।

#চলনবিলের আলো / আপন

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।