নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে দলটির কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দকে নাটোরে স্বাগত জানিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের একটি ব্যানার নামানোর অভিযোগ উঠেছে জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী কানাইখালী এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশের মধ্যস্থাতায় ওই ব্যানার পুনঃস্থাপন করার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) শহরের কানাইখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রতিমন্ত্রী পলকের ব্যানার সরানোর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক জুড়ে নিন্দা ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয়রা জানান, বুধবার সকালে জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার কয়েকজন সমর্থক নাটোর প্রেসক্লাব ভবনের ছাদে অবস্থিত বিলবোর্ডে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রিয় নেতাদের ছবি সম্বলিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ব্যানার নামিয়ে ফেলে।
এসময় নাটোর শহরে বাইরের কোন এমপির ব্যানার লাগাতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান, সৈয়দ মোর্তুজা আলী বাবলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন সহ বিপুল সংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী কানাইখালী এলাকায় অবস্থান নেন। এসময় তারা বিক্ষোভের প্রস্ততি নিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে ব্যানারটি পুনঃস্থাপন করা হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, স্থানীয় সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশে বাসিরুর রহমান খান এহিয়া চৌধুরী এই ব্যানার অপসারণ করিয়েছেন। জুনাইদ আহমেদ পলক সিংড়া আসনের সাংসদ হওয়ায় নাটোর শহরে কখনও কোন ব্যানার স্থাপন করেন না। সম্মেলন উপলক্ষে তিনি ব্যানার স্থাপন করার অধিকার রাখেন। তার এ অধিকার খর্ব করা হয়েছে। সাংসদ শিমুলের লোকজন সম্মেলনের শান্তিপুর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে। কেউ বিশৃংঙ্খলা করার চেস্টা করলে তাকে উচিত জবাব দেওয়া হবে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাঁকজমকপূর্ণ কালচারাল মিট ও শান্তিপূর্ণ সম্মেলন আয়োজনের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। অথচ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ব্যানার নামানোর ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। আইসিটি ডিভিশন চুক্তি ও ভাড়া পরিশোধ করেই ব্যানার স্থাপন করেছে। সেখানে গায়ের জোরে এই ব্যানার নামিয়ে তিনি অপরাধ করেছেন। আশা করছি জেলা আওয়ামী লীগ এই ঘটনার জন্য যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির কাছে কৈফিয়ত তলব করবে এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ব্যানার নামানোর ঘটনা জানার পর পুলিশের সহযোগিতায় তা আবার পুনস্থাপন করা হয়েছে। পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে সে লক্ষ্যে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, আমি প্রতিমন্ত্রী পলকের ব্যানার নামানোর নির্দেশ দিইনি। বরং যখন শুনেছি তাঁর ব্যানার কে বা কারা নামিয়েছে, তখন পুলিশকে জানিয়ে তা আবার পুনঃস্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছি।
#চলনবিলের আলো / আপন