দেশের সকল সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভাগুলোর রাস্তার আইডিভুক্ত না করে অর্থ বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের স্বার্থে রাস্তার উন্নয়ন ও সংস্কারের আগে আইডিভুক্ত না করলে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
এছাড়া, সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভার রাস্তা দ্রুত আইডিভুক্ত করার প্রক্রিয়া নির্ধারণ করতে স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকীর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে এই কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে বলেন মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অধিক্ষেত্রে বিদ্যমান রাস্তাসমূহের বিপরীতে পরিচিত নম্বর প্রদান সংক্রান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার রাস্তাগুলো আইডিভুক্ত না থাকায় অনেক জায়গায় একই রাস্তায় একাধিকবার কাজ করা হয়। একবার প্রজেক্ট থেকে অন্যবার তাদের নিজস্ব ফান্ড থেকে বরাদ্দ প্রদান করা হয়ে থাকে। একবছর পরে আবার রক্ষণাবেক্ষণ করতে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন অর্থ অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে অব্যবস্থাপনা থাকায় অনিয়মের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
রাস্তাগুলোর কোনো রেকর্ড না থাকায় এই সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সকল রাস্তার আইডি নম্বর করতে পারলে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এছাড়া বাজেট নির্ধারণ করা সহজ হবে। একই রাস্তার দুইবার কাজ করার সুযোগ থাকবে না।
প্রতিটি সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভাতে একটি ডেস্ক খোলার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই ডেস্ক রাস্তার উন্নয়ন করার আগে আইডি নম্বর আছে কিনা তা চেক করবে। না থাকলে আইডিভুক্ত করার ব্যবস্থা নিবে। এরপর উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এলজিইডি অত্যন্ত সফলতার সাথে রাস্তার আইডি নম্বর নির্ধারণ করছে। প্রাথমিক অবস্থায় এই প্রতিষ্ঠানটিও কিন্তু সারা দেশে একযোগে কাজ শুরু করতে পারেনি। রাস্তার উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে সেই রাস্তাকে আইডিভুক্ত করেছে। আইডিভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা উন্নয়ন কাজের জন্য বিবেচনায় নেননি।
মো. তাজুল ইসলাম জানান, সব রাস্তা এক সাথে আইডিভুক্ত করা কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ। তাই রাস্তার উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ করার আগে আইডিভুক্ত করতে পারলে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন রাস্তা আইডিভুক্ত করা সম্ভব হবে। এলজিইডি যে পদ্ধতি অনুসরণ করে আইডিভুক্ত করছে অথবা নতুন কোনো পদ্ধতিতে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার রাস্তাগুলোকে আইডিভুক্ত করা সহজ হবে সে উপায় নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
সভায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
#চলনবিলের আলো / আপন