প্রকৃতিতে শীতের প্রকোপ এবার কিছুটা কম থাকায় বেশ আগে ভাগেই মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে গ্রামের আম বাগানগুলো। থোকা থোকা মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৭০হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এসকল বাগানে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ করা হয়। সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে নাগদহ আলাল হোসেনের একটি আম গাছে। দৃশ্যটি যে কাউকেই কাছে টানবে।
তবে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা ভালো ফলনের স্বপ্ন বুনছেন। গ্রামের সবচেয়ে বেশি আমের মুকুল দেখা যাচ্ছে এলাকার গাছগুলোতে। কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আম গুটি। গাছে মুকুলের সঙ্গে গুটি আমের দেখাও মিলছে। বাগান মালিকরা আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাক নাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এলাকার আম চাষিরা বলেন, আম বাগানে এবার আগে ভাগে মুকুল এসেছে। এখন আমের ভালো ফলন পেতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগসহ বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছি। মনের আনন্দে মুকুলে বসেছে চড়ুই।
কৃষি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আটঘরিয়ায় গাছে গাছে এখন প্রচুর আমের মুকুল। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এর সুগন্ধ। শহর থেকে গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। তারা বলছেন, প্রাকৃতিক কারণেই এবার আগেভাগেই আম গাছে মুকুল এসেছে। পরিচর্যা আর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে আমের উৎপাদন বাড়ছে।
আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সজীব আল মারুফ জানান, আমের মুকুল আসার আগে-পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন, এ বছর তা বিরাজ করছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আম গাছে মুকুল আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শক্র কুয়াশা। এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সস্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে। আটঘরিয়ার আম চাষীরাদের অর্জন ভালো।
উপজেলায় ১৭০হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে।বিভিন্ন ধরণের আমের জাত রয়েছে। এর মধ্যে আম রুপালী, হিম সাগর, খিড়ষাবতি, এছাড়াও নতুন জাতের আমের মধ্যে রয়েছে বারী-৪, আর্ষিনা ও স্থানীয় জাতের আম রয়েছে। গাছে গাছে অজস্্র মুকুল দেখে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
#চলনবিলের আলো / আপন