সোমবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে বেদড়ক মারধর করায় তক্ষক ব্যবসায়ী রুবেল জেলহাজতে

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২২

সংসারে ৪ বছরের এক কন্যা ও ১১ মাসের এক পুত্র রেখে ২য় বিয়ে করায় প্রথম স্ত্রী প্রতিবাদ করায় এবং যৌতুকের টাকা পাওয়ার লক্ষে কণ্যা ও পুত্রসহ স্ত্রীকে বেদড়ক মারধর করে ভাড়া ঘর থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগে রাঙামাটি শহরের মোল্লাপাড়ার মো. বেলাল হোসেনের মাদকাসক্ত পুত্র মো. দিদারুল আলম ওরফে রুবেলকে ২২ জানুয়রি কলেজ গেইট থেকে রাঙামাটি কোতয়ালী থানা পুলিশ গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করিলে চীফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরনের আদেশ দেয়।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাঙামাটি সদর হাসপাতাল এলাকার নুরুন্নবীর কণ্যা মারুফা আক্তারের ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ইসলামী শরীয়াহ্ মোতাবেক মোল্লাপাড়ার মো. বেলাল হোসেনের পুত্র মো. দিদারুল আলম ওরফে রুবেল (২৮) এর সহিত বিবাহ হয়।
বিয়ের পর তাদের সংসারে নুসরাত ফারিয়া (৪) নামের এক কন্যা সন্তান ও আলিফ ইসলাম জিসান (১১ মাস) নামের এক পুত্র সন্তান জন্ম নেয়। বিবাহের পর প্রথম দুই বছর উভয়ে খুব সুখে শান্তিতে চলছিল। বিবাহের দুই বছর পার হয়ে যাওয়ার পর রুবেল রাজমিস্ত্রির কাজ ছেড়ে দেয় এবং তক্ষক ব্যবসা শুরু ও বিভিন্ন মাদকাসক্ত লোকদের সাথে চলাফেরা করার এক পর্যায়ে সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। মাদকাসক্ত হয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে মাদকের টাকা সংগ্রহ করার জন্য মারুফাকে শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতন শুরু করে এক পর্যায়ে মারুফার উপর শারিরীক এবং মানসিক নির্যাতন বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে মারুফার স্বামী প্রচন্ড মাদকাসক্ত হয় এবং মারুফার অনুমতি না নিয়ে শেখ আরফিন নামের এক নারীকে ২য় বিবাহ করে। ২য় বিবাহের পর থেকে মারুফা আক্তারের উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন বেড়ে যায়। মারুফা স্বামীর প্রচন্ড নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার বাড়ী থেকে আরো টাকা এনে দেয়। মারুফার বাবা নাই মা লাইলী বেগম মানুষে বাড়ি-বাড়ি ঝিয়ের কাজ করে। মারুফার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় এক পর্যায়ে মারুফা তার মাদকসক্ত স্বামী রুবেলকে আর টাকা এনে দিতে না পেরে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ করে তাকে টাকা দেয়। স্ত্রীর ঋণের সেই টাকা দিয়ে মাদকাসক্ত মো. দিদারুল আলম ওরফে রুবেল ২য় স্ত্রী আরফিনকে নিয়ে মোবাইল দিয়ে অনলাইনে টিকটক করে আর ২য় স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়। এক পর্যায়ে মারুফা তার বাবার বাড়ি থেকে কোন যৌতুকের টাকা আনতে পারবোনা বলার পর থেকে তক্ষক ব্যবসায়ী রবেল মারুফাকে আবারও বিভিন্নভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করা শুরু করে। মারুফা সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার স্বামীর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করে যায়। এক পর্যায়ে সহ্য করতে না পেরে ঘটনা তার মাকে এবং এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিদের বলতে বাধ্য হয়।
স্বামী মো. দিদারুল আলম ওরফে রুবেলের ক্রমাগত নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় গত ২১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ সকাল আনুমানিক ১০ টায় মারুফা রাঙামাটি জেলার কোতয়ালী থানাধীন পৌরসভা এলাকার আমানতবাগ মুসলিম পাড়ার ইউসুফ ড্রাইভারের ভাড়া বাসায় অবস্থানকালে রুবেল যৌতুক হিসেবে দুই লক্ষ টাকা আনার জন্য বললে মারুফা টাকা আনতে পারবোনা বলার পরেই তাকে টাকা আনার জন্য এলোপাতাড়ি মারধর করা শুরু করে। লম্পট স্বামী রুবেল তার কোমরে পরিহিত বেল্ট খুলে তাকে শরীরে এলোপাতাড়ি রক্তাক্ত জখম করে, হাত দিয়ে মারুফার মুখে ঘুষি দিয়ে এবং পা দিয়ে মারুফার পেটে এলোপাড়ি লাথি দিয়ে গুরুতর জখম করে। মারুফাকে মারধর করাকালীন তাদের ভাড়া বাড়ির আশেপাশের লোকজন মারধরের আওয়াজ শুনে ঘটনাস্থলে এসে নারীলোভী রুবেলকে আটকায় এবং মারুফাকে গুরুতর আঘাতপ্্রাপ্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তৎক্ষনিক রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন (পুলিশ কেইস) যার রেজি নং ১২৩/১ তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০২২।
মারুফা আক্তার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণের পর তার মাকে জানালে তিনি তাকে অসুস্থ অবস্থায় বাসায় নিয়ে যান। পরবর্তীতে স্বামী মো. দিদারুল আলম ওরফে রুবেলের পরিবারকে জানালে উল্টা রুবেলের বাবা-মা মারুফাকে হুমকি দেয়।
বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমাণ্য লোকজনদের জানালে তারা আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করায় অসহায় মারুফা আক্তার তার সন্তানদের ভবিষ্যতের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তার মাসহ কোতয়ালী থানায় উপস্থিত হয়ে মো. দিদারুল আলম ওরফে রুবেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
রাঙামাটি কোতয়ালী থানার মামলা নং-১৮, তারিখ- ২২/০১/২০২২, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ১১ (গ)।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) রাঙামাটি কোতয়ালী থানার এসআই আবুল খায়ের।
এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাঙামাটি কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কবির হোসেন।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।