বৃহস্পতিবার , ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আটঘরিয়ায় বিনা চাষে রসুন আবাদে কৃষকের মুখে হাসি

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ১ জানুয়ারি, ২০২২

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার বিনা হালে রসুন আবাদে কৃষকের মুখে হাসি। মাঠ আর মাঠ জুড়ে রয়েছে বিনা হালে রসুন আবাদ। সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে রসুনের গাছ। এবার বাম্পার ফলন হবে বলে কৃষকদের মুখে হাসির ঝিলিক বইছে। বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা কোনো চাষ ছাড়াই কাঁদার মধ্যে মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছে, বিনা চাষে রসুন আবাদ কৃষকদের কাছে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এখন কৃষকরা বিনা চাষে রসুন উৎপাদনে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। কৃষি অফিসও তাদেরকে দিচ্ছেন বিনা চাষে রসুন উৎপাদনে নানান রকম পরামর্শ।

পানি নামার সাথে সাথে এ বছর শুরু হয়েছে বিনাচাষে রসুনের আবাদ। বিলের পানি কার্তিকের শেষে নদীতে নেমে যায়। অগ্রহায়ণের শুরুতে বিলের পলিমাটি শুকিয়ে ওঠে। তখন কৃষক কোনো রকম হালচাষ ছাড়াই রসুন রোপণ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এলাকার কৃষকেরা।উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমিগুলোতে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে কয়েক সপ্তাহ পূর্বে। এখন আমন কাটা শেষে বিনাচাষে রসুন রোপনের ধুম পড়েছে এলাকা গুলোতে। এ সকল উপজেলার সর্বোচ্চ অর্থকরী ফসল বিনাচাষে রসুনের বাম্পার ফলনের কারণে প্রতি মৌসুমে এলাকার কৃষকরা এবার বিনাচাষে রসুনের রোপণ করতে শুরু করেছেন।

তবে সরেজমিনে কয়রাবাড়ী. সুতিরবিল,্একদন্ত, লক্ষীপুর, দেবোত্তর, মাজপাড়া, চাঁদভা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পানি নামার সাথে সাথে কৃষকের মাঝে চলছে বিনাচাষে রসুন আবাদে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। আটঘরিয়ায় এখন চলছে রসুন রোপণের ভরা মৌসুম। বিলের যেদিকে চোখ মেলা যাবে সেদিকেই দেখা যাবে নারী-পুরুষ ও পাশাপাশি ছোট ছোট ছেলেরা-মেয়েরাও মিলে জমিতে লাইন ধরে বসে বসে রসুনের কোয়া রোপণ করছেন। এ পদ্ধতির চাষাবাদে চাষের পদ্ধতির চেয়ে দ্বিগুণ রসুন উৎপাদন হবে।

আটঘরিয়া পৌরসভার বিশ্রামপুর গ্রামের কৃষক দুলাল মৃধা জানান, এ সময় বোনা আমন ধান কাটার পর কৃষি শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যায়। এখন আর রসুন আবাদে লাভজনক তাই এলাকার কৃষক ছাড়তে পারেনি রসুন চাষ। তিনি আরও জানান, এবার বীজ, শ্রমিক, সার, কীটনাশক, সেচসহ মোট খরচ হবে বিঘায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অনেক কৃষকই এখন রসুনের পাশাপাশি বিনাচাষে সনিষার চাষ শুরু করছেন। এতে রসুন-সরিষা মিলে কৃষক লাভবান হচ্ছেন।
এ পদ্ধতিতে রসুনের চাষ করলে জমিতে চাষ দেয়া ও কোপানো লাগে না। সার ও ওষুধ কম লাগে। শুধু মাত্র ২টি সেচ দিলেই হয়। লাগানো রসুন ক্ষেতের চেয়ে অনেক বড় বড় গাছ ও রসুন বড় হয়। তার এ পদ্ধতি দেখে অন্যান্যে কৃষকরা তার সহযোগিতা চাইলে তিনি তাদের রসুন সরবরাহ করাসহ নানা ধরনের পরামর্শ দেন।

উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের চাষি খাইরুল ইসলাম ২-৩ বিঘা, শামসুল ইসলাম ৩-৪ বিঘা, আলামিন হোসেন ২ বিঘা, আয়েন উদ্দিন ৪ বিঘা, ইউপি সদস আমিরুল ইসলাম ২ বিঘা জমিতে বিনা চাষে রসুন আবাদ করছেন। তারা জানান, একবিঘা জমিতে রসুন আবাদ করতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মণ রসুন লাগে। খরচ হয় ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর রসুন বিঘায় উৎপাদন হয় ৬০-৭০মণ। সব মিলিয়ে খরচবাদে ভালো টাকা লাভ থাকে বলে তারা জানান। শ্রমিক মিতারানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা দিন হাজিরি হিসাবে ৩৫০টাকা পেয়ে থাকি। এই টাকা দিয়ে আমরা সংসারে খরচ চালাই। কাঁদার ওপর রসুন লাগালে খরচ কম হয় কিন্তু ফলন ভাল হয়। আমরা নারী শ্রমিক সকাল থেকে কাঁদার ওপর সারি সারি করে রসুন লাগাচ্ছি।

আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব আল মারুফ জানান,২০২১-০২২অর্থ বছরে ৫ হেক্টর জমিতে বিনাচালে রসুন আবাদ হয়েছে। আগাম ধান কাটার পর পর এলাকার কৃষককেরা ইটালী জাতের রসুন ও বারী রসুন-১, বিনা চাষে রসুন চাষ করছে। তবে কার্তিক মাসের শেষে বিল থেকে পানি নেমে গেলে পলি জমা কাঁদা মাটিতে বিনা হালে সারিবদ্ধভাবে রসুনের কোয়া রোপণ করা হয়। রোপণ শেষে ধানের নাড়া (খড়) বিছিয়ে দেয়া হয়। রোপণের ২৫/৩০ দিন পর বিঘাপ্রতি ১৫/২০ কেজি ইউরিয়া সার দিয়ে পানি সেচ দেয়া হয়।

আর আবহাওয়ার কারণে বর্ষার পানি সরতে ও চাষ করতে রসুন আবাদে এক-দেড়মাস পিছিয়ে যেতে হয়। এ কারণে সামান্য কাঁদার উপর রসুন লাগালে সময় এগিয়ে আসে। এতে উৎপাদন খরচ কম হয় ও ফলন বাম্পার হয়। ফলে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এ পদ্ধতির চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ করা হচ্ছে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।