নগরীসহ জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় সিএনজি চালিত থ্রি হুইলার অটোরিকশা ও মাহেন্দ্রা থেকে কল্যাণ তহবিলের নামে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে আসছে কতিপয় ব্যক্তি। যারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আইনশৃক্সখলা বাহিনীর সদস্যদের ম্যানেজ করার নামে এবং শ্রমিকদের কল্যাণের কথা বলে টাকা উত্তোলন করে নিজেরাই আত্মসাত করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, টাকার বিনিময়ে চাঁদা আদায়কারীদের দেওয়া নির্দিষ্ট সংকেতিক চিহ্ন ছাড়া বরিশাল নগরীসহ জেলার উজিরপুর, বাবুগঞ্জ, গৌরনদী, বানারীপাড়া ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারেনা। একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সূত্রমতে, শ্রমিকদের কল্যাণের কথা বলে চাঁদা আদায় করা হলেও শ্রমিকরা অর্ধাহারে-অনাহারেই দিনাতিপাত করছেন। মহামারি করোনা ভাইরাসের মতো বৈশ্বিক সমস্যার সময়েও শ্রমিকরা কোনোধরনের সুযোগ-সুবিধা পাননি। তবে চাঁদা আদায়কারীদের দাবি, জোর করে নয়; মালিক ও শ্রমিকের কল্যাণে গাড়ি প্রতি সামান্য টাকা আদায় করা হচ্ছে। চালকদের অভিযোগ, তারা কোন ধরনের সুযোগ সুবিধাই পাচ্ছেন না।
ভুক্তভোগী চালক ও মালিকদের অভিযোগে জানা গেছে, বরিশালে বিশেষ সংকেতিক চিহ্নের স্টিকার ছাড়া সিএনজি ও মাহেন্দ্রা চলাচল করতে পারেনা। থ্রি হুইলার মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ সংকেতিক এই স্টিকারের চিহ্ন দিয়ে মেট্রোতে ৫০০ ও জেলায় ৮০০ টাকা করে আদায় করছেন। এছাড়া শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিদিন ২০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলণ করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সিএনজি অটোরিকশা চালকরা বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণ ও প্রশাসনকে ম্যানেজের কথা বলে তাদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলণ করা হলেও তারা কোন ধরনেরই সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। তারা আরও বলেন, প্রতিটি স্টিকারের জন্য তাদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করে নেয়া হয়।
থ্রি হুইলার মালিক সমিতির পক্ষে চাঁদা উত্তোলনকারী দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণে এই টাকা উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে শ্রমিকদের জন্য এ যাবতকালে কি কি কল্যানমূলক কাজ করা হয়েছে, তার কোন সদূত্তর মেলেনি। অপরদিকে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারি দিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে থ্রি হুইলার রেজিষ্ট্রেশনভূক্ত গাড়ির সংখ্যা তিন হাজার ৪২টি, জেলায় এক হাজার ৫১৩টি। সেই হিসেবে মোট বৈধ চার হাজার ৫৫৫টি গাড়ি থেকে মাসে ২৮ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা উত্তোলণ করা হচ্ছে। এর বাইরে গোটা জেলাজুড়ে রয়েছে কয়েক হাজারো অবৈধ গাড়ি। সবমিলিয়ে রাস্তায় নামলেই কথিত শ্রমিক সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের মাসোয়ারা দিয়েই গাড়িগুলো চলতে হচ্ছে।
#চলনবিলের আলো / আপন