রবিবার , ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বঙ্গবন্ধুর নৈতিক সাহসে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছিলামঃ কোবিন্দ

প্রকাশিত হয়েছে- রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১
ঢাকায় সফরত ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেছেন, একজন যুবক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নৈতিক সাহসে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। অন্যান্য লাখো মানুষের মতো আমিও তার ৭ মার্চের বজ্রকণ্ঠে এবং সে সময়ে বাংলাদেশের সাত কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা বহনকারী উপলব্ধিতে বিদ্যুতায়িত হয়েছিলাম।
তিনি বলেন, আমার প্রজন্মের লাখ লাখ ভারতীয়দের মতো আমরা একটি অত্যাচারী শাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয় উল্লসিত এবং এদেশের জনগণের বিশ্বাস ও সাহসে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। খবর বাসসের।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা ভারতের প্রেসিডেন্টকে ‘মুজিব চিরন্তন’ শ্রদ্ধাস্মারক প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরীও বক্তৃতা করেন।
কোবিন্দ বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মতো এত মহাকাব্যিক ত্যাগের সাক্ষী মানব সভ্যতা খুব কমই হয়েছে। আপনাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম প্রতিটি ভারতীয়, বিশেষ করে আমার প্রজন্মের মানুষের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। সাভারে লাখো শহীদের স্মৃতিসৌধ এবং বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন ছিল আমার জন্য গভীর আবেগময় অভিজ্ঞতা। আমি তার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের সারাংশ শুনে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি। এটি সর্বদা ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের চেতনাকে উদ্দীপিত করে। তাই ইউনেস্কো এই ভাষণকে বিশ্বতালিকায় ন্যায়সঙ্গতভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনাদের সংগ্রাম ভারতে যে মাত্রায় সহানুভূতি এবং তৃণমূল-স্তরের সমর্থন লাভ করেছে তার পরিমাণও ইতিহাসে বিরল। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাংলাদেশের জনগণকে সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদানের জন্য তাদের হৃদয়-দ্বার উন্মুক্ত করেছে। আমাদের ভাই-বোনদের তাদের প্রয়োজনের সময়ে সাহায্য করা আমাদের জন্য সম্মানের এবং পবিত্র দায়িত্ব ছিল।
রামনাথ কোবিন্দ বলেন, ইতিহাস সর্বকালে আমাদের বন্ধুত্বের এই অনন্য ভিত্তির সাক্ষ্য দেবে যে গণযুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। সেই যুদ্ধের কয়েকজন সাক্ষী (ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েরই) এখানে দর্শকদের মধ্যে রয়েছেন। যাদের মধ্যে বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতিও রয়েছেন এবং তারা আমাদের বিশ্বাস এবং বন্ধুত্বের শক্তির জীবন্ত সাক্ষ্য।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৫০বছর পূর্তি উদযাপনে আমার সফর ও অংশগ্রহণের জন্য আপনাদের আমন্ত্রণ একটি অনন্য সম্মান। এটি আমাদের বিশেষ বন্ধুত্বের একটি সত্যিকারের প্রতিফলনও বটে। আমি আনন্দিত যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতোই, কোভিড মহামারি শুরু হওয়ার পর ভারতের বাইরে আমার প্রথম সফর আপনাদের দেশ বাংলাদেশে। মুজিববর্ষ উদযাপনে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমিও সম্মানিত।
কোবিন্দ বলেন, পঞ্চাশ বছরের কিছু আগে, একটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিল। কিন্তু তখন সমালোচক, সন্দেহবাদী এবং নিন্দাকারীদের কাছে এটি একটি দূরবর্তী এবং অসম্ভব স্বপ্ন বলে মনে হয়েছিল। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট এবং বাস্তব রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যেন মুক্তির সম্ভাবনাকে বাতিল বলে মনে হচ্ছিল। একটি নিষ্ঠুর, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং সুসজ্জিত শত্রু, যারা কোনো কিছুতেই থামবে না, তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাংলাদেশের প্রতিকূলতা ছিল অনেক বেশি।
কোবিন্দ বলেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণামূলক নেতৃত্ব, সুস্পষ্ট নৈতিক দৃঢ় প্রত্যয় এবং পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি ন্যায়বিচারের জন্য তার অদম্য দৃঢ়তা ছিল সত্যিকার অর্থে পট পরিবর্তনকারী। ফলস্বরূপ, বিশ্ব একটি মূল্যবান শিক্ষা পেয়েছে যে, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ইচ্ছাকে কোনো শক্তি দ্বারা দমন করা যায় না, তা যতই নৃশংস হোক না কেন।
ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টিভঙ্গি ছিল এমন একটি বাংলাদেশ যা শুধু রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন নয়, বরং একটি ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্রও বটে। দুঃখের বিষয়, জীবদ্দশায় তার দর্শন বাস্তবায়িত হতে পারেনি। স্বাধীনতা-বিরোধীরা যারা বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, তারা বুঝতে পারেনি যে বুলেট এবং সহিংসতা এমন একটি ধারণাকে নির্বাপিত করতে পারে না যা মানুষের কল্পনাকে ধারণ করেছে।
কোবিন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত বাংলাদেশের পরিশ্রমী ও উদ্যোগী জনগণ বঙ্গবন্ধুর এই আদর্শগুলো বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, আমরা গত এক দশকে বাংলাদেশের প্রশংসনীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছি, যা বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা বাস্তবায়নের সুযোগও তৈরি করেছে। ভৌগোলিক সুবিধা ও আপনাদের দেশের চমৎকার অর্থনৈতিক সাফল্য সমগ্র উপ-অঞ্চল এবং বিশ্বকে উপকৃত করতে পারে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান ধারণা রয়েছে যে, ঘনিষ্ঠ উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং সংযোগ স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সোনার বাংলা গঠনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে। 

 

#চলনবিলের আলো / আপন

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।