শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

নাগরপুরে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ৯ নভেম্বর, ২০২১
 দেশের সর্বস্তরে কুয়াশায় জানান দিচ্ছে, শীতের আগমনী বার্তা। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে শীত শুরু হবে পুরোদমে। এরই মধ্যে ভোরে লতা-পাতা আর ঘাসের উপর ঝরে পড়ছে শিশির বিন্দু। শিশির ভেঙে গ্রামের চাষিরা ছুটে যাচ্ছে ফসলের ক্ষেতে কেউ বা আবার বপন করবে হলুদের অপরুপ সৌন্দয্যের সরিষা। এ মৌসুমে শীত শুরুর সাথে সাথে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন খেজুরের রস সংগ্রহ কারী গাছিরাও।
প্রকৃতির ছোঁয়ায় সারা দেশের ন্যায় এবার একটু আগেই শীতের দেখা মিলছে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। দিনে সূর্যের খরতাপ আর রাতে কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। ভোর থেকেই ব্যস্ত গাছিরা দা দিয়ে খেজুর গাছ কাটছে। ক’দিন পরেই গাছ থেকে গাছিদের প্রক্রিয়াজাত করা খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা হবে গুড় ও পাটালি। শীতের সকালে গ্রামের গৃহস্থ বাড়িতে খেজুরের রস দিয়ে বানানো হবে মুখরোচক পিঠা, পায়েসসহ নানা প্রকার সুস্বাদু ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি খাবার। কেউ বা আবার হাক ডাক দিয়ে বিক্রি করবেন খেজুরের ঠান্ডা রস।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ঘিওরকোল, সহবতপুর, কলমাইদ, কাউয়াখোলা, ধুকুড়িয়া, শুনশীসহ আশপাশের গ্রামের কাঁচা পাকা মেঠো রাস্তার পাশে সারি দিয়ে লাগানো রাস্তার দুধারে খেজুর গাছ কাটতে ব্যস্ত গাছিরা। এ সময় গাছিরা বিশেষ কায়দায় কোমরে রশি বেঁধে খেজুর গাছের উপরে উঠে। গাছের উপরের অংশের ছাল বের করার এক সপ্তাহ পরেই আবার হালকা কেটে তাতে নল লাগানো হয়। পরে সেখান থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই পুরোদমে রস সংগ্রহ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আগত গাছিরা।
খেজুর রস সংগ্রহকারী গাছি শরিফুল ইসলাম বলেন, খেজুরের রস সংগ্রহের বাপদাদার ঐতিহ্যবাহী পেশায় দুই ছেলে নিয়ে প্রায় ১২ বছর ধরে এ কাজে নিয়োজিত আছি। আমরা রাজশাহী থেকে প্রতি বছর এ উপজেলায় প্রায় আট বছর ধরে শীত মৌসুমে কাজ করছি। স্থানীয় ভাবে গাছি না থাকায় এলাকাবাসীর কোন আপত্তি নেই। খেজুরের রস দিয়ে আগাম গুড় ও পাটালি বানাতে পারলে লাভ বেশি হয়। সেই আশাতেই চলতি বছরও গুড় তৈরির দিকে ঝুঁকছেন গাছিরা।
তিনি আরও বলেন, ১৮-২০ দিন হয়েছে কাজ শুরু করেছি। গাছের ময়লা ও অপ্রয়োজনীয় ডালপালা ছেঁটে ফেলা হয়েছে। ধারালো দা দিয়ে খেজুর গাছের সোনালি অংশ বের করে নোলন স্থাপনের কাজও প্রায় শেষ। আগামীকালই গাছে লাগানো হবে মাটির পাতিল। এরপরই শুরু হবে সুস্বাদু খেজুর রস সংগ্রহের কাজ। তা দিয়ে তৈরি হবে গুড় ও পাটালি।
গাছিরা বলেন, গাছ একবার ছাঁটলে তিন-চার দিন রস সংগ্রহ করা যায় এবং পরবর্তীতে তিন দিন শুকাতে হয়। এভাবে কাটলে গাছের রস সুমিষ্ট হয়। রস সাধারণত কার্তিক থেকে ফাল্গুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সংগ্রহ করা যায়। এ রস থেকে তিনি গুড় ও পাটালি তৈরি করে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করেন। এমনকি দুরদুরান্ত থেকেও পরিবারের জন্য এখান থেকে খাটি গুড় সংগ্রহ করে নিয়ে যায় ক্রেতারা।
তারা আরও বলেন, ভোরে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করা হয়। গাছ ভেদে প্রতি গাছ থেকে দুই থেকে পাঁচ কেজি রস হয়। প্রতি কেজি রস একশত টাকা আর গুড় বিক্রি হয় চারশত টাকা দরে।
নাগরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বিশ্বাস জানান, খেজুরের রস এবং গুড় সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি ঐহিত্যবাহী সুমিষ্ট খাবার। দিন দিন খেজুর গাছের সংখ্যা কমছে, ফলে গাছিও তেমন নেই। উত্তরাঞ্চল থেকে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও খেজুর রস সংগ্রহ করার জন্য গাছিরা এসেছে এবং রস সংগ্রহের প্রস্তুতিও প্রায় শেষ। উপজেলায় প্রায় এক হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। কৃষকরা আগ্রহী হলে খেজুর গাছ পরিচর্যায় প্রশিক্ষণ এমনকি উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাঁদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি জানান। 

 

#চলনবিলের আলো / আপন

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।