সোমবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ভূঞাপুর সাব-রেজিস্ট্রী অফিসের লাগামহীন দুর্নীতি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

প্রকাশিত হয়েছে- সোমবার, ১১ অক্টোবর, ২০২১

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল ) প্রতিনিধি: যে সময়ে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি বিরোধী জিরো ট্রলারেন্স ঘোষণা করেছেন, ঠিক সে সময়েই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রী অফিস।

সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। টাকা ছাড়া যেন ফাইল এক ইঞ্চিও নড়ে না। জমি রেজিস্ট্রী সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারি নির্ধারিত ফি নির্ধারন থাকা সত্বেও এই অফিসের পিয়ন থেকে শুরু করে বড়কর্তাও যেন ঘুষ বাণিজ্যে মুখর। একশ্রেণির দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সেবা প্রত্যাশীরা। দলিল লেখক, স্ট্যাম্প ভে-ার ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত এ সিন্ডিকেটের যোগসাজশে সাব-রেজিস্ট্রার মো. কামরুজ্জামান কবির জড়িয়ে পড়েছেন নানা অনিয়মে।

অভিযোগ রয়েছে সাব-রেজিস্ট্রার মো. কামরুজ্জামান কবির সিন্ডিকেটের সাথে হাত মিলিয়ে সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে জমির শ্রেণি পরিবর্তন দেখিয়ে, সাব-কবলা দলিলের পরিবর্তে হেবা বিল এওয়াজ, অসিয়ত নামা, ঘোষণাপত্র, আমমোক্তার নামা দলিল রেজিস্ট্রী করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তিনি এ অফিসে যোগদানের পর থেকে দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি দলিল থেকে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা শেরেস্তার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ টাকা সিন্ডিকেটের সমন্বয়ে ভাগ ভাটোয়ারা করা হয়।

ভূঞাপুর সাব-রেজিস্ট্রী অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ অফিসে সপ্তাহে রবি, সোম ও মঙ্গলবার এই ৩দিন দলিল রেজিস্ট্রী করা হয়। এর মধ্যে বেশির ভাগ দলিল হেবা বিল এওয়াজ, আমমোক্তার নামা, দানপত্র ও ঘোষণাপত্র দলিল। এতে বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে। গত কয়েক বছরের রেজিস্ট্রী করা দলিল পরীক্ষা করলে এর সন্ধান পাওয়া যাবে।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দলিলের ফি ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করলেও শেরেস্তা (অতিরিক্ত ফি) ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার কোনো দলিল রেজিস্ট্রী করেন না। তার চাহিদা মতো টাকা না পেলে বিভিন্ন কাগজপত্রের অজুহাতে হয়রানি করা হয়। আবার টাকা পেলে সব বৈধ হয়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দলিল লেখক জানান, শেরেস্তা ফি না দিলে জমি রেজিস্ট্রী তো দূরের কথা সীমাহীন হয়রানির স্বীকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের। তাই বাধ্য হয়েই শেরেস্তা (অতিরিক্ত ফি) দিয়ে দলিল রেজিস্ট্রী করতে হয়। তবে কাগজপত্রে ঝামেলা থাকলে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রত্যেক দলিল থেকে শেরেস্তার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হলেও সিন্ডিকেটের ভয়ে এ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না।

দলিল করতে আসা হাফিজুর নামে এক ব্যক্তি জানান, সরকারি সকল ফি বাদ দিয়ে তার অতিরিক্ত ৮ হাজার টাকা গুনতে হয়েছে। এর মধ্যে দলিল লেখক সমিতির ১ হাজার, ভেন্ডার ৩ হাজার আর বাকি টাকা অফিস খরচের জন্য দেয়া হয়েছে।
শুধু হাফিজুর নয় দলিল রেজিস্ট্রী করতে আসা প্রত্যেক লোকের কাছ থেকে এভাবেই টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।

এছাড়াও দলিলের নকল তুলতে গেলে সরকারি ফির দ্বিগুণ টাকা গুণতে হয় গ্রাহকদের।

এ বিষয়ে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. কামরুজ্জামান কবির বলেন, অফিসে কোনো সিন্ডিকেট নেই। দলিল লেখকের মাধ্যমে আমার নিকট দলিল আসে। শেরেস্তা আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, অফিসে কোনো শেরেস্তা আদায় করা হয় না। দলিল লেখকরা চুক্তি করে দলিল রেজিস্ট্রী সরকারি মূল্যের বেশি টাকা নিয়ে থাকে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।