শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

জৌলুস হারাচ্ছে বরিশালের শতবর্ষী পদ্ম পুকুর

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

১১১ বছরের ইতিহাসের স্বাক্ষী বহন করা বরিশাল নগরীর ঐতিহ্যবাহী পদ্মপুকুর আজ জৌলুস হারাতে বসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় শ্যাওলা আর আগাছায় ভরে গেছে পুরো পুকুর। ফলে এবছর পুকুরের শ্বেত পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন দর্শনার্থীরা।
নগরীর বিশিষ্টজনরা বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতায় এবার পদ্ম পুকুরের সৌন্দর্য ম্লান হয়ে গেছে। অতীতের চেয়ে এবার অর্ধেক ফুল ফুটেছে। বিআইডব্লিউএটিএ’র দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পদ্ম পুকুরের তীর সংরক্ষণ ও তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ পুকুরের সৌন্দর্য বর্ধণের জন্য একটি পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্রমতে, বরিশাল মেরিন ওয়ার্কশপের তৎকালীন ম্যানেজার জার্মানির বাসিন্দা মি. ইলিগনর অন্যত্র থেকে কয়েকটি শ্বেত পদ্ম মূলসহ সংগ্রহ করে ১৯৬৫ সালে নগরীর বিআইডব্লিটিএ’র ‘হীম নীড় পুকুরের তলদেশে রোপন করেন। ধীরে ধীরে ৬৯ শতাংশ আয়তনের পুরো পুকুর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে পদ্ম। সেই থেকে পদ্ম ফুলের পাঁচ মাসের মৌসুমে নগরীর বান্দ রোডের হীম নীড়ের পুকুর পাড়ে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। তারা পুকুর ভরা শ্বেত পদ্ম দেখে বিমোহিত হয়। বন্ধু-স্বজন-পরিবার নিয়ে পদ্মপুকুর পাড়ে বেড়াতে যান সৌন্দর্য পিপাসুরা। বিশেষ করে সরকারী ছুটিরদিনে দর্শনার্থীদের ভীড় হতো অনেক বেশি। যদিও হীম নীড় সংরক্ষিত এলাকা হওয়ায় অনুমতি নিয়ে সেখানে যেতে হয় দর্শনার্থীদের। তারা সেখানে গিয়ে পদ্ম ফুলের সাথে ছবি ও সেলফি তুলে স্মরণীয় করে রাখেন। কিন্তু এবার অনেকটাই ম্লান পদ্মপুকুর। পুরো মৌসুমের শেষপর্যন্ত তেমন ফুল ফোটেনি। পুকুরজুড়ে পদ্ম পাতায় ভরে থাকলেও ফুল ফুটছে দুই-চারটা করে। এতে অনেকটাই হতাশ হয়েছেন দর্শনার্থীরা।
সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) জেলা সভাপতি শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, গত বছর পদ্মগাছ গোড়ালী (মূল) সহ উপচে ফেলে পুকুর পরিস্কার করে বিআইডব্লিউটিএ। তখন সচেতন নাগরিকদের অনেকেই প্রতিবাদ করেছিলেন। তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছেও আপত্তি জানানো হয়েছিলো। তারপরেও পুরো পুকুর পদ্ম শুন্য করে ফেলা হয়েছে। ওই ঘটনার পর এবার ছিটেফোঁটা ফুল ফুটেছে। যেগুলো ফুটছে সেগুলোও সতেজ নয়।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশে কোনো একটি শহরের মধ্যে এভাবে পুকুর ভরা পদ্ম ফুল পাওয়া যাবেনা। বরিশালের পদ্ম পুকুর গৌরব করার মতো। কেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পুকুরটির সৌন্দর্য নষ্ট করলো তা বোধগম্য নয়।
পুকুরের সংরক্ষক বিআইডব্লিউটিএ’র সার্ভেয়ার মো. মনির হোসেন জানান, উল্লেখিত অভিযোগ বিজ্ঞান সম্মত নয়। প্রতিবছর ভাদ্র মাসের পর পুকুর পরিস্কার করতে হয়। তা না হলে পুরো পুকুর আগাছায় ভরে যায়। পাতা পঁচে পানি নষ্ট হয়ে যায়।
বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ বলেন, এবার পুকুরে পদ্ম গাছে অনেক পাতা ছেড়েছে। তবে ফুল হয়েছে কম। এজন্য তারা উদ্বিগ্ন। বরিশালের ঐতিহ্য পদ্ম পুকুর সংরক্ষণ ও তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য কেন্দ্রীয় দপ্তরে একটি প্রস্তাবনা প্রেরণ করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে পুকুরের সৌন্দর্য বাড়ানো হবে।
উল্লেখ্য, ১৯১৯ সালের সিএস ম্যাপেও বরিশাল নগরীর এ পদ্ম পুকুরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সে হিসেবে পদ্ম পুকুরটি ১১১ বছরের ইতিহাসের স্বাক্ষী বহন করছে।

উপদেষ্ঠা সম্পাদক মোঃ গোলাম হাসনাইন রাসেল-০১৭১১-৪১৭৮৮০, সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

২০২৪ এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ