শনিবার , ২৫শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৩রা জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকঋণের কিস্তি না দিলেও খেলাপি নয়

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনা তাণ্ডব শুরু হওয়ার পর মার্চের শেষ সপ্তাহে প্রজ্ঞাপন জারি করে ব্যাংকঋণ পরিশোধ নীতিতে শিথিলতা এনেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলেও খেলাপি না করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। এবার আগের নির্দেশনা সংশোধন করে ঋণ পরিশোধে শিথিলতার মেয়াদ আরো তিন মাস বাড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত এক প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রাহকরা ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি করা যাবে না। তবে এ সময়ে কোনো খেলাপি গ্রাহক ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করলে তার ঋণমান উন্নত করা যাবে। জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে বিলম্বিত হওয়া নয় মাসের ঋণের কিস্তি পরিশোধের নীতিমালাও তুলে ধরেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে বলা হয়, এই নয় মাসে যে কয়টি ঋণের কিস্তি বিলম্বিত হবে, তা সমসংখ্যক বর্ধিত ঋণের কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ দিতে হবে। ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বড় ধরনের উপকার পাবেন গ্রাহকরা।

 

ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করেও নয় মাস ধরে তারা খেলাপি হওয়া থেকে বেঁচে যাবেন। অন্যদিকে এ সিদ্ধান্তে ভয়াবহ মাত্রায় ক্ষতির শিকার হবে ব্যাংকগুলো। গত ছয় মাসে গ্রাহকরা ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায়, এমনিতেই ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক ব্যাংকই কলমানি বাজার ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রেপোতে অর্থ ধার করে চলছে। এ সময়সীমা আরো তিন মাস বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোর ক্যাশ ফ্লো নেতিবাচক ধারায় চলে যাবে। এতে আমানত নিয়ে ব্যাংকগুলোর কাড়াকাড়ি আরো তীব্র হবে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাহেল আহমেদ। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি না করার নির্দেশনার মেয়াদ বাড়ানোর ফল ব্যাংকগুলোর জন্য নেতিবাচকই হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবসায়ী ও দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এ সুযোগ দিয়েছে। ব্যাংকার হিসেবে আমরাও ব্যবসায়ীদের বিপদের দিনে পাশে দাঁড়াতে চাই। আবার ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্ব আছে ব্যাংকের পাশে দাঁড়ানোর। পরস্পরের সহযোগিতা ও সহমর্মিতার মাধ্যমেই দেশের অর্থনীতিকে টেনে তুলতে হবে। তবে সমস্যা হলো দেশের অনেক খাত ও উদ্যোক্তাদের ব্যবসা সচল আছে। অনেকে অন্য সময়ের তুলনায় মুনাফাও বেশি করছেন।

 

কিন্তু তারাও যদি সুযোগ বুঝে ব্যাংকের টাকা না দেন, সেটি দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা প্রতিটি ব্যাংকেই ঘটছে। পরিস্থিতি এভাবে চললে ব্যাংকগুলোর তারল্য পরিস্থিতি অবনতি হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। রাহেল আহমেদের ভাষ্য হলো, ব্যাংকগুলোতে এমনিতেই তারল্য সংকট আছে। তার মধ্যে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব ব্যাংকের ঘাড়ে পড়েছে। প্রণোদনা তহবিলের ৫০ শতাংশ অর্থ ব্যাংকের নিজেই ম্যানেজ করতে হচ্ছে। এক অংকের সুদে ঋণ দেয়ার জন্য আমানতকারীদের সুদ কম দিয়ে বঞ্চিত করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ পরিস্থিতি ব্যাংকিং খাতের জন্য সুখকর নয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১ জানুয়ারি থেকে বিদ্যমান মেয়াদি (স্বল্পমেয়াদি কৃষি ঋণ ও ক্ষুদ্র ঋণসহ) ঋণের বিপরীতে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়কালে প্রদেয় কিস্তিগুলো ডেফারড হিসেবে বিবেচিত হবে। এক্ষেত্রে চলতি বছরের অক্টোবর থেকে সংশ্লিষ্ট ঋণের কিস্তির পরিমাণ ও সংখ্যা পুনর্নির্ধারিত হবে। পুনর্নির্ধারণকালে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যতসংখ্যক কিস্তি প্রদেয় ছিল তার সমসংখ্যক কিস্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

 

১ জানুয়ারি থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের কোনো কিস্তি পরিশোধিত না হলেও ওই কিস্তিসমূহের জন্য মেয়াদি ঋণগ্রহীতারা খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন না। তলবি প্রকৃতির ঋণের মেয়াদ/সমন্বয়ের তারিখ বিদ্যমান মেয়াদ থেকে নয় মাস বা ৩১ ডিসেম্বর (যেটি আগে ঘটে) পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। এ সুবিধা চলাকালে ঋণের ওপর সুদ হিসাবায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নীতিমালা বলবৎ থাকবে। তবে ওই সময়ে ঋণের ওপর কোনোরূপ দণ্ড সুদ বা অতিরিক্ত ফি আরোপ করা যাবে না। কোনো গ্রাহকের এ সুবিধা প্রয়োজন না হলে পূর্বনির্ধারিত পরিশোধসূচি অনুযায়ী অথবা ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণের অর্থ সমন্বয় করা যাবে বলে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্বশীল একটি সূত্র মতে, ব্যাংকঋণ পরিশোধের এ শিথিলতা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়তে পারে। একসঙ্গে এ ঘোষণা দিলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হতে পারে, এজন্য তিন মাস করে সময় বাড়ানো হবে।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।