প্রাণঘাতি করোনার কারনে খেটে খাওয়া মানুষের জীবন যাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। কঠোর লকডাউনের কারনে নিম্ন আয়ের মানুষদের আয় অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। আবার কারো কারো উপার্জন শুন্যের কোঠায়। ফলে নিম্নবিত্ত মানুষদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শনিবার (১০ জুলাই) সলঙ্গায় খেটে নানা মানুষদের সাথে কথা বলে জানা যায় এ সব তথ্য।
৭ দিনের কঠোর লকডাউনের সাথে যুক্ত হয়েছে আরও এক সপ্তাহ। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও দ্বিগুণ ভাড়ায় মোটরসাইকেল, ভ্যান-রিক্সা, সিএনজিতে জরুরী কাজে মানুষ চলাফেরা করছে। রাস্তায় লোক কম থাকায় এসব খেটে খাওয়া লোকজন কিছুটা আয় উপার্জন করলেও কঠোর লকডাউনে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। সলঙ্গার সিএনজি চালক রাজু,লিটন জাহাঙ্গীর জানায়, রাস্তায় যাত্রী নাই, যাত্রী না পেলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। একই কথা হাটিকুমরুল রোডের ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালকদেরও। যাত্রী না থাকায় অনেক ভ্যান চালকদের যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে ঘুড়কা বাসস্ট্যান্ডের এলাকার,,, ভুইয়াগাঁতী বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী (হকার) রাহাত জানায়, সবকিছুই চলছে। শুধু গাড়ি বন্ধ রেখে আমাদের হকারী ব্যবসা পথে বসেছে। নিম্ন আয়ের মানুষদের মতোই হতাশায় আছেন সলঙ্গা বাজারের ফল ব্যবসায়ীরা। তারা জানায়, লকডাউনে মানুষ ভয়ে বের হচ্ছে কম। তাই আমাদের বেচা কেনা নেই। আগের তুলনায় তিন ভাগের একভাগে আয় নেমে আসায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

শুধু তাই নয়, বিভিন্ন হোটেল, মাছের আড়ৎ, দোকানের কর্মচারী, কাঠ মিস্ত্রি,স্টিল মিস্ত্রি,রাজ মিস্ত্রি সহ পরিবহণ শ্রমিকরা নিদারুন কষ্টে আছেন। লকডাউনে তাদের কাজ কর্ম না থাকায় আয় এখন শুন্যের কোঠায়। চড়িয়া শিকার গ্রামের এক দিন মজুর জানান, আমি এবং আমার স্ত্রী মিলে হাটিকুমরুল রোড গোলচত্বরে ডিম সিদ্ধ ও পিঠার ব্যবসা করতাম। মহামারীতে সবকিছু বন্ধ থাকায় বড় কষ্টে আছি।
থানার হরিনচড়া বাস স্ট্যান্ডের চা, সিগারেটের দোকানী ইলিয়াস হোসেন জানায়, রাস্তায় মানুষ কম,বেচা কেনাও নগন্ন।সলঙ্গা বাজারের ঝাল মুড়ি বিক্রেতা শাহাদত হোসেন জানায়, ঝাল মুড়ির ব্যবসার উপর পাঁচ জনের সংসার। জমা জমি নাই। এর উপর ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া। তাই লকডাউনে মহাবিপদে আছি। আল্লাহ জানে এভাবে আর কতদিন থাকবে। দবিরগঞ্জ বাজারের বাদাম বিক্রেতা আশরাফুল, সানোয়ার জানায়, আগে স্কুল-কলেজ খোলা ছিলো। ঝাঁকা/ডালির ফিতা গলায় ঝুলিয়ে স্কুল-কলেজের সামনে বাদাম বিক্রি করে ভালো ভাবেই সংসার চলছিলো। করোনায় স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে আগের মতো আর আয় হয় না। তাই লাগাতার কঠোর লকডাউনে সীমাহীন অভাব অনটন আর চরম কষ্টে আছেন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
#চলনবিলের আলো / আপন