শনিবার , ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

নাগরপুরে কোরবানির গরু বিক্রি অনলাইনে, দাম নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিত হয়েছে- বুধবার, ৭ জুলাই, ২০২১

সামনে ঈদ, লাভের স্বপ্ন বুনছেন খামারিরা সেই মূহুর্তে করোনার ভাইরাসের হানায় কোরবানি পশু বিক্রি নিয়ে হতাশায় আছেন তাঁরা। টাঙ্গাইলের নাগরপুরে কোরবানি উপলক্ষে গরু-ছাগল মোটাতাজা করণ করে আতঙ্কে রয়েছেন খামারিরা। তাদের শঙ্কা করোনা পরিস্থিতি যদি ঈদুল আজহা পর্যন্ত স্থায়ী হয় তাহলে গরু-ছাগল বেচাকেনা হবে দায়। করোনায় ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার ক্রেতা হবে কম, পাইকারাও গরু ছাগল কেনা নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখাবে না সেক্ষেত্রে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে প্রান্তিক খামারিদের।

খামারিরা বলছেন, করোনার এই ক্রান্তিকালে তারা বড় দুশ্চিন্তায় আছেন। সারাবছর কোরবানির পশু দেশিয় পদ্ধিতে মোটাতাজাকরণ করে অনেকে বড় অংকের টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তবে ঈদে তারা গরু বিক্রি করতে পারবেন কি-না, তা নিয়ে চিন্তার প্রহর শেষ হচ্ছে না। অনলাইনে বিক্রি করার চেয়ে হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারা একাধিক গরু যাচাই করে বিক্রি করতে পারলে ভাল দাম পাওয়া যেত।

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণীর খামারি হাজার হাজার মানুষ গরু-ছাগল-ভেড়া পালন করেন। চাকুরি না পাওয়ায় ঝুঁকছেন পশু পালনের দিকে। শিক্ষিত যুবক গরু ছাগল মোটাতাজা করণকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন অনেকেই। যে কারণে সারাদেশের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে বড় বড় গরু-ছাগলের খামার গড়ে উঠেছে। সারাবছর কসাইদের কাছে বিক্রির পাশাপাশি ঈদকে সামনে রেখে কিছু কিছু স্পেশাল গরু তৈরি করেন খামারিরা। তবে এবার করোনায় যেন তাদের শঙ্কা কাটছে না।

উপজেলার সহবতপুর ইউনিয়নের কোকাদাইর গ্রামের খামারি আইনুল হক জানান, এবার কোরবানির আশায় ১৭টি গরু লালন-পালন করছি তবে করোনার প্রকোপ বাড়ায় প্রায় ৬ মাস আগে কোন রকম লাভে পাঁচটি গরু বিক্রি করেছি। এখন করোনা নিয়ে খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। তিনি বলেন, করোনার কারণে উপজেলায় ভাল ভেটেরিনারি চিকিৎসক নেই। চিকিৎসক না থাকার কারণে প্রায় দুই মাস আগে আমার প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দামের একটি গরু মারা গেছে ।

তিনি আরও বলেন, প্রায় ২০ বছর যাবৎ পরিশ্রম করে গরু পালন করে আসছি, কিন্তু বেশি লাভ করতে পারি না। তার মধ্যে এবার গো-খাদ্যের দাম অত্যধিক বেড়ে গেছে। এ কারণে গরু পালনে খরচও বেড়ে গেছে তাই কোরবানির আগেই পাঁচটি গরু বিক্রি করেছি। যদি করোনা অব্যাহত থাকে তাহলে আমার বর্তমানে ১১টি গরু লাভ ক্ষতি যাই হোক নিজ গ্রামেই বিক্রি করবো।

উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের ঘিওরকোল গ্রামের আরেক খামারি সুলতান মিয়া। এবারও মাত্র সাতটি গরু কোরবানির হাটে বিক্রি করার জন্য মোটাতাজাকরণ করে আতঙ্কে আছেন তিনিও। তিনি বলেন, আমরা যারা খামারি, তারা সারাবছর গরু মোটাতাজাকরণ করে কোরবানির ঈদের অপেক্ষায় থাকি। বেশি দামে বিক্রির আশায় ভালো ভালো খাওয়া দিয়ে গরু পালন করি। যদি সেগুলো কোরবানিতে ঈদে বিক্রি না হয় তাহলে আমাদের প্রচুর লস হয়। যদিও গত বছর সাতটি গরু কোরবানির হাটে বিক্রির আশায় পালন করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলাম।

একই গ্রামের কুলসুম বলেন, “লাভের আশায় এবার পাঁচটি ছাগল পালন করেছি কোরবানির হাটে বিক্রি করবো বলে। ভাল দাম পেলে বিক্রি করবো। আমরা ছোট খামারী। নিত্য প্রয়োজনীয় সকল জিনিশের দাম বাড়ায় হিমসিম খাচ্ছি। নিজে চলাই কষ্ট তার উপর কিছু লাভের মুখ দেখার জন্য ছাগল পালন করছি। কিন্তু দেশে করোনায় কি হবে আল্লাহ জানে”।

উপজেলা ভেটেনারী সার্জন ডা. জাফরুল হাসান রিপন বলেন, উপজেলায় মোট ৯শত ৯৩জন খামারির গরুর সংখ্যা ২ হাজার ৬শ ৫০টি, বলদ দুই শত ৮০টি, ছাগল ২ হাজার ১’শ ৫০টি, ভেড়া ২’শ । সবমিলিয়ে এবারও কোরবানির জন্য ছয় হাজারের ওপরে গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। গত বছর উপজেলায় কোরবানিযোগ্য যতগুলো পশু প্রস্তুত ছিল এ বছর মহামারি করোনার কারণে প্রায় দুই হাজার পশু কম বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সোহেল রানা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) জানান, করোনায় সারাদেশেই চরম অবস্থা তবে এখনই খামারিদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কোরবানির পশু বিক্রির জন্য আপাতত “ অনলাইন কোরবানির গরু ছাগলের হাট, নাগরপুর, টাঙ্গাইল” পেজ লিংক-https://m.facebook.com/100179612337617 চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিক্রিয় যোগ্য গরুর ছবি, ওজন ও খামারির নামসহ মোবাইল নাম্বার দিয়ে নিয়মিত পোষ্ট করা হচ্ছে। যাতে ক্রেতারা সহজেই পছন্দসই গরু দেখে বিক্রেতাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
তথ্য সংগ্রহকারী মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সাথে কোরবানির গরু বিক্রেতাদেরও প্রানিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করে বিক্রয় যোগ্য গরুর ছবি ও তথ্য দিয়ে সহায়তা কামনা করছেন। সমস্যা আসবে কিন্তু সেসব সমস্যা সমন্বিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। পরিস্থিতি বুঝে পশু বিক্রয়ের হাট প্রশাসনের মাধ্যমে নির্ণয় করা হবে বলেন জানান তিনি।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।