সোমবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ৩রা জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

স্ত্রীকে বাড়িতে বেড়াতে এনে হত্যার পর সেফটি ট্যাংকিতে মৃতদেহ গুম সেনানিবাসের এক পরিচ্ছন্নতা কর্মী গ্রেফতার

প্রকাশিত হয়েছে- মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১

বরিশালে গৌরনদী উপজেলায় শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রীকে বেড়াতে নিয়ে এসে হত্যার পর মৃতদেহ গুম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বগুড়া জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসের এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীর বিরুদ্ধে। পুলিশের হাতে আটকের পর পরিচ্ছন্নতা কর্মী সাকিব হোসেন (২৪) তার স্ত্রী নাজনীন আক্তারকে (১৯) হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। সাকিব হোসেন পুলিশকে বলেন, শ্বাসরোধ করে হত্যার পর গৌরনদীর বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামের তার বাবার ঘরের পাশে সেফটি ট্যাংকিতে স্ত্রী নাজনীন আক্তারের মৃতদেহ গুম করেছেন। নাজনীন আক্তার বগুড়া সদরের সাবগ্রাম (উত্তরপাড়া) এলাকার মো. আব্দুল লতিফের মেয়ে।

এদিকে সাকিব হোসেনের কথার সূত্র ধরে মঙ্গলবার (০১ জুন) সকাল ১০ থেকে সেফটি ট্যাংকি সহ আশপাশের এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে বগুড়া সদর থানা পুলিশের একটি দল। তাদের তল্লাশি কাজে সহায়তা করছে গৌরনদী থানা পুলিশ। তবে দুপুর ১ টা পর্যন্ত নাজনীন আক্তরের মৃতদেহের সন্ধান মেলেনি। তবে সেফটি ট্যাংকির ভেতর থেকে নাজনীন আক্তারের ওড়না ও শরীরের চামড়ার কিছু অংশ পাওয়া গেছে।

আটক সাকিব হোসেন গৌরনদীর বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামের আব্দুল করিম আকন্দের ছেলে। আড়াই বছর আগে বগুড়া জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসে পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে চাকরি পান সাকিব হোসেন। সেই সুবাদে তিনি বগুড়ায় থাকতেন।

নাজনীন আক্তার গত ২৪ মে থেকে নিখোঁজ ছিলেন। এ ঘটনায় গত ২৬ মে বাবা আব্দুল লতিফ বগুড়া সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে সেনানিবাস কর্তৃপক্ষ গতকাল সোমবার সাকিব হোসেনকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

 

সাধারন ডায়েরি (জিডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ধর্মীয় রীতি মেনে সাকিব হোসেনের সঙ্গে নাজনীন আক্তারের বিয়ে হয়। তবে বিয়ের পর নাজনীন তার বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন। সাকিব গত ২৪ মে স্ত্রী নাজনীকে ফোন দিয়ে বলেন, তার (সাকিব) বাবা খুবই অসুস্থ। অসুস্থ বাবাকে দেখতে নাজনীনকে তার গৌরনদীর বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামে যেতে হবে। সাকিব নাজনীনকে গোদাপাড়া চারমাথা বাসস্ট্যান্ডে দ্রুত আসতে বলেন। এরপর নাজনীন তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে সেখানে যান। এরপর বাসে করে গৌরনদীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর নাজনীনের সঙ্গে আর তার বাবা-মায়ের যোগযোগ হয়নি। পরবর্তীতে বাবা-মা নাজনীন ও সাকিবের নম্বরে কল করলে দু’টি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনা উল্লেখ করে আব্দুল লতিফ থানায় সাধারন ডায়েরি (জিডি) করেন।

সাধারন ডায়েরির (জিডি) তদন্ত কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপ পরিদর্শকের (এসআই) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, নাজনীন নিখোঁজের ব্যাপারে খোজ নিতে গতকাল সোমবার সাকিব হোসেনকে জিজ্ঞাসবাদ করা হয়। সাকিব হোসেন এসময় মিথ্যা কথা বলে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেস্টা করেন। এরপর আটক করে থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সাকিব বলেন, বাবা অসুস্থতার মিথ্যা কথা বলে গত ২৪ মে নাজনীনকে নিয়ে তিনি বাবার বাড়ি গৌরনদীর বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামে আসেন। তার বাবা আব্দুল করিম পেশায় ভ্যান চালক। আর্থিক অবস্থা খুবই নাজুক। যদিও এসব কথা গোপন করে সাকিব নিজেদের অবস্থা সম্পন্ন পরিবারের ছেলে পরিচয় দিয়ে নাজনীনকে বিয়ে করেছিলেন। সাকিবের কাছে নাজনীন এসব কথা গোপন করার কারন জানতে চানতে চান। এসময় তাদের মধ্যে ঝগড়া বেধে যায়। একপর্যায়ে রাগে নাজনীন সাকিবকে ভিক্ষুকের ছেলে বলে গাল দেন। সাকিব এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নাজনীনের গলায় রশি দিয়ে ফাস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর বাবা-মায়ের সহায়তায় ঘরের পেছনে থাকা সেফটি ট্যাংকিতে স্ত্রী নাজনীন আক্তারের মৃতদেহ গুম করে বগুড়া ফিরে গিয়ে কর্মস্থলেযোগ দেন।

গৌরনদী থানার পরিদর্শক মো. তৌহিদুজ্জামান জানান, সকালে সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে বগুড়া সদর থানা পুলিশের একটি দল গৌরনদী আসেন। এরপর গৌরনদী থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তারা নাজনীনের মৃতদেহ উদ্ধারে বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামে যান। আগেই এ খবর পেয়ে সাকিবের বাবা-মা সেখান থেকে পালিয়েছেন। সকাল ১০ টা থেকে প্রথমে সেফটি ট্যাংকি পরিস্কার করে তার মধ্যে তল্লাশি করা হয়। কিন্ত তবে সেফটি ট্যাংকির ভেতর থেকে নাজনীন আক্তারের ওড়না ও শরীরের চামড়ার কিছু অংশ পাওয়া গেছে। মৃতদেহ সেখানে নেই। বাড়ির আশেপাশে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।