বুধবার , ১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - হেমন্তকাল || ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেটে হবে শিল্পায়ন বাড়বে কর্মসংস্থান 

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২১
উদ্বোধনের অপেক্ষায় আইসিটি পার্ক, হচ্ছে নতুন বিসিক। শিল্পায়নে পিছিয়ে থাকা সিলেটকে এগিয়ে নিতে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। দ্রুত এগিয়ে চলছে আইসিটি পার্কের নির্মাণকাজ। উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে নতুন বিসিক শিল্পপার্কের। মেগা প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
এ দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পর শিল্পায়নে এগিয়ে যাবে সিলেট। দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি সৃষ্টি হবে অন্তত ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ। ২০১৬ সালে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বর্ণি এলাকার খলিতাজুড়ি বিলেরপাড় মৌজায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক’ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে শুরু হয় নির্মাণকাজ। প্রকল্পের শুরুতে কাজে স্থবিরতা দেখা দিলেও এখন দ্রুতগতিতে চলছে বাস্তবায়নের কাজ। ইতিমধ্যে প্রকল্পের মাটি ভরাট, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ, অভ্যন্তরীণ সড়ক ও বাতি স্থাপন, বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন নির্মাণ, প্রকল্পের সাইট অফিস, প্রশাসনিক ভবন, আইসিটি বিজনেস সেন্টার, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের কাজ শেষ হওয়ার পথে। দেশের প্রথম বেসরকারি কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় ‘আরটিএম টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি’র জন্যও প্রকল্পে জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আইসিটি পার্কটিতে ইন্ডাস্ট্রি করতে চায় র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্স। এই শিল্পপার্কে তারা তাদের ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে জায়গা বরাদ্দ নিতে হাইটেক পার্কের সঙ্গে চুক্তি করেছে। এ ছাড়াও দেশি-বিদেশি বেশ কয়েকটি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান এই শিল্পপার্কে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে বলে জানা গেছে। শিল্প উদ্যোক্তাদের আগ্রহ দেখে হাইটেক পার্কটি সম্প্রসারণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আসলাম উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, শুরুতে ১৬৫ একর জায়গার ওপর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক’ নির্মাণকাজ শুরু হলেও দিন দিন উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারীদের চাহিদা বাড়ছে। তাই হাইটেক পার্কের জন্য নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আরও ৮৫ একর জায়গা অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবনাটি মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এ জায়গা ছাড়া আরও ৬০০ একর জায়গা আইসিটি পার্কের জন্য অধিগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৩৩৬ কোটি ৪২ লাখ ৪৯ হাজার টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কটি হবে প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থানের একটি ডিজিটাল ইকোনমিক হাব। অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ ছাড়া সিলেটের সীমান্তবর্তী ভারতের সেভেন সিস্টারখ্যাত সাত রাজ্যের চাহিদা বিবেচনায় রেখে এখানে প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। আর প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর প্রায় ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্প সূত্র আরও জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কে বিভিন্ন ধরনের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী তৈরি করা হবে। এ ছাড়া গ্রাফিক্স ডিজাইন, অ্যানড্রয়েড মোবাইল অপারেশন, জাভা এসই-৮ প্রোগ্রামিং, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সার্ভার অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, কোর হার্ডওয়ার্ক অ্যান্ড অপারেটিং সিস্টেম, বিপিও, ই-কমার্স, এস কিউ, এল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ওরাকল ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে। উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামীর প্রযুক্তিবিদও গড়ে তোলা হবে। এ জন্য প্রকল্পে শেখ কামাল আইটি সেন্টারসহ থাকছে দুটি প্রশিক্ষণ সেন্টার। গড়ে ওঠা প্রযুক্তিবিদদের পরবর্তীতে ইলেকট্রনিক্স সিটিসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ে কাজে লাগানো হবে। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে বেরোনো শিক্ষার্থীদের এ ইলেকট্রনিক্স সিটিতে কাজে লাগানোর চিন্তা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের। সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে সিলেটে আরও একটি বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৫০০ একর জায়গার ওপর গড়ে তোলা হবে আধুনিক ও যুগোপযোগী শিল্পনগরী। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চলছে জায়গা নির্ধারণের কাজ। জায়গা অধিগ্রহণ করে চলতি বছরের মধ্যেই প্রকল্পটির কাজ শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা। নতুন শিল্পনগরীটি নির্মাণের পর এখানে আরও প্রায় ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশন (বিসিক) সিলেট অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক ম. সুহেল হাওলাদার জানান, সরকার সারা দেশে যে ১০০টি শিল্পপার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে সিলেটে। এটি হবে সিলেটের তৃতীয় শিল্পপার্ক। ৫০০ একর জায়গার ওপর এই শিল্পপার্ক স্থাপনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তবে একসঙ্গে এত জায়গা না পাওয়ায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ১৬৫ একর জায়গা শিল্পপার্কের জন্য প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করে অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে। বিসিকের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাক হাসান এনডিসি ও বিসিকের পরিচালক আতাউর রহমান সিদ্দিকী প্রস্তাবিত জায়গা পরিদর্শন করেছেন।
সূত্র জানায়, ইটিপি, সেন্ট্রাল সুয়ারেজ ও ড্রেনেজ সিস্টেম নিশ্চিত করে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে নতুন এই শিল্পপার্ক স্থাপন করা হবে। পরিবেশবান্ধব এই শিল্পপার্কে কৃষি যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, ওষুধশিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হস্ত ও কারুশিল্প, প্লাস্টিক ও নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। অগ্রাধিকার পাবে হালকা প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানও। সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আসলাম উদ্দিন জানান, নতুন শিল্পপার্কের জন্য সিলেট সদর ও পাশর্^বর্তী উপজেলাগুলোতে ৫০০ একর জমি খোঁজা হচ্ছিল। কিন্তু কোথাও অখন্ডভাবে এই পরিমাণ জায়গা পাওয়া যায়নি। তাই যে পরিমাণ জায়গা পাওয়া যাবে তার ওপরই শিল্পপার্ক স্থাপন করা হবে। এ ব্যাপারে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি এ টি এম শোয়েব বলেন, সিলেটে হাইটেক পার্ক ও নতুন শিল্পপার্কে বিনিয়োগ করতে অনেকেই আগ্রহী। সিলেট চেম্বারও উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে আগ্রহী করতে কাজ করছে। এই দুটি শিল্পপার্ক বাস্তবায়নের পর শিল্পায়নের দিক থেকে সিলেট অনেক এগিয়ে যাবে। 

#CBALO/আপন ইসলাম

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।