পটুয়াখালীর সদর উপজেলায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে একই পরিবারের ৩ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতদের উদ্ধার করে পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার বড়বিঘাই এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ২২। আহতদের পিতা পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বড় বিঘাই এলাকার মৃত হাতেম আলী ঘরামীর ছেলে আবদুল বারেক ঘরামী জানান, আমার ভাইয়ের ছেলে, মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে মাঈনুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, জাহিদুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া ও রুহুল আমিন খোকন, মৃত শাহজাহান সিকদারের ছেলে সিদ্দিক সিকদার, মেনাজ মুন্সীর ছেলে হাবীব মুন্সী, কলিকাপুর এলাকার আলাউদ্দিন মৃধার ছেলে আসাদুর মৃধা এবং কেওবুনিয়া এলাকার আবদুল মজিদ মুসল্লীর শাহিন মুসল্লীসহ সংঘবদ্ধ আরো ৪/৫ জন অত্যন্ত দাঙ্গা হাঙ্গামাকারী, সন্ত্রাসী, আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গকারী প্রকৃতির লোক। তারা স্থানীয় সালিশ ব্যবস্থা কোন কিছুর তোয়াক্কা কর না। তাদের সাথে স্থানীয় ও দূর এলাকার লাঠিয়াল সরদারদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে। পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বড় বিঘাই এলাকার মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে মাঈনুল ইসলাম ওরফে নুনরুজ্জামান, জাহিদুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া ও রুহুল আমিন খোকন আমার ভাইয়ের ছেলে। অনান্য সংঘবদ্ধ সকলে তাদের অন্যায় কাজের সহযোদ্ধা। তাদের সাথে আমার দীর্ঘদিন যাবৎ জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ইতিপূর্বে তাদের বিরুদ্ধে আমি বাদী হইয়া জিআর ০৪/২০১৪ নম্বর মামলা পরিচালনা করে দীর্ঘদিন চলমান থাকার পরে গত বছরের সেপ্টেমবর মাসের ৫ তারিখে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে উক্ত মামলা প্রত্যাহার করি। মামলা তুলিয়া নেয়ার পরে আমার ভাইয়ের ছেলে মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে মাঈনুল ইসলাম ওরফে নুনরুজ্জামান, জাহিদুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া ও রুহুল আমিন খোকন, মৃত শাহজাহান সিকদারের ছেলে সিদ্দিক সিকদার, মেনাজ মুন্সীর ছেলে হাবীব মুন্সী, কলিকাপুর এলাকার আলাউদ্দিন মৃধার ছেলে আসাদুর মৃধা এবং কেওবুনিয়া এলাকার আবদুল মজিদ মুসল্লীর শাহিন মুসল্লীসহ সংঘবদ্ধ আরো ৪/৫ জন পূর্নরায় আমার ক্ষতি করার পায়তারা করতে থাকে। গত ৮ই মার্চ দিবাপূর্ব রাত আনুমানিক ২ টার দিকে আমার ও অন্য ভাইদের ৫ টি খড়ের কুড়ে আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এঘটনায় থানায় অভিযোগ করলে তারা আরো বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। গত শনিবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে আমার ছেলে আল আমিন ঘর থেকে বের হয়ে গোসলের জন্য টিউবয়েলের দিকে যাওয়ার সময় তাকে উঠানে একা পেয়ে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সকলে মিলে বেআইনী জনতাবদ্ধে একত্রিত হয়ে মারাতœক প্রাননাশক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বসত বাড়ীতে প্রবেশ করে আল আমি কে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলে। আমার ভাইয়ের ছেলে মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে মাঈনুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান চিৎকার করে আজ তোরে খাইয়া ফালামু বলে তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে আল আমিনের মাথা লক্ষ্য করে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ মারিলে উক্ত কোপ মাথার ঠিক অংশে পড়িয়া গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখম হয়, সেখানে ৩ টি সেলাই লাগে। পূনরায় রামদা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপ মারিলে উক্ত কোপ মাথার সম্মুখ অংশে পড়িয়া গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখম হয়, সেখানে ৪ টি সেলাই লাগে। মৃত শাহজাহান সিকদারের ছেলে সিদ্দিক সিকদারের হাতে থাকা মটর সাইকেলে ব্যবহৃত লোহার রডযুক্ত তালা দিয়ে আমার অপর ছেলে রিয়াজুল ইসলাম (রিয়াজ)কে পিটাইয়া শরীরের বিভিন্ন অংশে নীলা ফুলা জখম করে। আমার ছেলে আল আমিন ও রিয়াজকে আমি রক্ষা করার চেষ্টা করলে কলিকাপুর এলাকার আলাউদ্দিন মৃধার ছেলে আসাদুর মৃধার হাতে থাকা বাশের লাঠি দ্বারা আমার মাথা লক্ষ্য করে বারি মারে। যা আমি ডান হাত দিয়ে ফেরানোর চেষ্টা করায় ডান হাতের তালুতে পড়িয়া রক্তাক্ত জখম হই। আমার ছেলে আল আমিন ও রিয়াজ প্রান রক্ষা করতে কোনভাবে বসতঘরে প্রবেশ করলে আমার ভাইয়ের ছেলে মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে মাঈনুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, জাহিদুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া ও রুহুল আমিন খোকন, মৃত শাহজাহান সিকদারের ছেলে সিদ্দিক সিকদার, মেনাজ মুন্সীর ছেলে হাবীব মুন্সী, কলিকাপুর এলাকার আলাউদ্দিন মৃধার ছেলে আসাদুর মৃধা এবং কেওবুনিয়া এলাকার আবদুল মজিদ মুসল্লীর শাহিন মুসল্লীসহ সংঘবদ্ধ আরো ৪/৫ জন মিলে আমার পরিবারের সকলকে মাইর ধইর করে। আমার স্ত্রী রেবেকা বেগম আমাদের রক্ষা করতে আগাইয়া আসলে মৃত শাহজাহান সিকদারের ছেলে সিদ্দিক সিকদারের হাতে থাকা মটর সাইকেলে ব্যবহৃত লোহার রডযুক্ত তালা দিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বারি মারিলে উক্ত বারি মাথার সম্মুখ অংশের ডানভাগে পড়িয়া গুরুতর হাড়ভাঙ্গা জখম হয়। এসময় মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে মাঈনুল ইসলাম ওরফে নুনরুজ্জামান আমার মেয়ে নাসরিন বেগমের গলায় থাকা ৭০,০০০ টাকা মূল্যের ১ ভরি ওজনের স্বর্নের চেইন জোর পূর্বক ছিনাইয়া নেয়। কলিকাপুর এলাকার আলাউদ্দিন মৃধার ছেলে আসাদুর মৃধা আমার স্ত্রী রেবেকা বেগমের গলায় থাকা ৩৫,০০০ টাকা মূল্যের স্বর্নের চেইন জোর পূর্বক ছিনাইয়া নেয়। মৃত শাহজাহান সিকদারের ছেলে সিদ্দিক সিকদার আমার মেয়ে মাহফুজা বেগমের গলায় থাকা ৫০,০০০ টাকা মূল্যের স্বর্নের চেইন জোর পূর্বক ছিনাইয়া নেয়। আমার ভাইয়ের ছেলে, মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া ঘরের মধ্য শোকেজে থাকা নগদ ২০,০০০ টাকা জোর পূর্বক ছিনাইয়া নেয়। আমার একই এলাকার মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে মাঈনুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, জাহিদুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া ও রুহুল আমিন খোকন, মৃত শাহজাহান সিকদারের ছেলে সিদ্দিক সিকদার, মেনাজ মুন্সীর ছেলে হাবীব মুন্সী, কলিকাপুর এলাকার আলাউদ্দিন মৃধার ছেলে আসাদুর মৃধা এবং কেওবুনিয়া এলাকার আবদুল মজিদ মুসল্লীর শাহিন মুসল্লীসহ সংঘবদ্ধ আরো ৪/৫ জন আমার স্ত্রী রেবেকা বেগম, আমার মেয়ে নাসরিন বেগম ও মাহফুজার কাপড় চোপড় টানা হেচড়া করে লজ্জাশ্লীলতারহানী ঘটায়। আমাদের ডাক চিৎকারে আশেপাশে থাকা মৃত হোসেন আলী সরদারের ছেলে ইদ্রিস সরদার ও ছত্তার সরদার, মৃত হাতেম আলী ঘরামীর ছেলে কাঞ্চন ঘরামী এবং পাঞ্জে আলী ঘরামীর ছেলে সোহেল ঘরামীসহ আরো কয়েকজন লোক আমাদের বাচাতে আগাইয়া আসলে আমার ভাইয়ের ছেলে, মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে মাঈনুল ইসলাম ওরফে নুনরুজ্জামান, জাহিদুল ইসলাম ওরফে চান মিয়া ও রুহুল আমিন খোকন, মৃত শাহজাহান সিকদারের ছেলে সিদ্দিক সিকদার, মেনাজ মুন্সীর ছেলে হাবীব মুন্সী, কলিকাপুর এলাকার আলাউদ্দিন মৃধার ছেলে আসাদুর মৃধা এবং কেওবুনিয়া এলাকার আবদুল মজিদ মুসল্লীর শাহিন মুসল্লীসহ সংঘবদ্ধ আরো ৪/৫ জন আমাদেরকে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায়। আমি ও আমার ছেলে আল আমিন, রিয়াজ এবং আমার স্ত্রী রেবেকা বেগম জখমপ্রাপ্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে মৃত হোসেন আলী সরদারের ছেলে ইদ্রিস সরদার ও ছত্তার সরদার, মৃত হাতেম আলী ঘরামীর ছেলে কাঞ্চন ঘরামী এবং পাঞ্জে আলী ঘরামীর ছেলে সোহেল ঘরামীসহ আরো কয়েকজন লোকের সহায়তায় পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। কর্তব্যরত ডাক্তার আমার ছেলে আল আমিন, রিয়াজ এবং আমার স্ত্রী রেবেকা বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। আহতদের পিতা পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বড় বিঘাই এলাকার মৃত হাতেম আলী ঘরামীর ছেলে আবদুল বারেক ঘরামী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনযাপন করছি। আমরা বাচতে চাই, সঠিক বিচার চাই। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বড় বিঘাই এলাকার মৃত ছত্তার ঘরামীর ছেলে মাঈনুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা যায় নাই। পটুয়াখালী সদর থানার ওসি আখতার মোর্শেদ জানান, মারামারির ঘটনায় আসামীদের কাউকেই এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নাই। তবে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
#CBALO/আপন ইসলাম