বুধবার , ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ - শরৎকাল || ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ; ফের তদন্ত হচ্ছে সামিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত হয়েছে- শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক আলোচিত সেই জুলকারনাইন সায়ের খান ওরফে সামিউল আহমেদ খান ওরফে সামিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ফের তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম আন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটকে (সিটিটিসি)।

বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল আলজাজিরায় সংবাদ প্রকাশের পর ব্যাপক আলোচনায় আসে সামির নাম। এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে এই নামটি ছিল অপরিচিত। যে কারণে মামলা থেকেও খালাস পেয়ে যান তিনি। এখন তার পরিচয় প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসনসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো।

রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে জানান, গত বছরের মে মাসে সামিসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা করেছিল র‌্যাব। তদন্তে আসামি শনাক্ত না হওয়ায় চার্জশিট থেকে সামিসহ আটজনকে বাদ দেয়া হয়। তিনজনকে আসামি করে গত ১১ জানুয়ারি চার্জশিট দেয়া হয়।

তিনি বলেন, ‘আই এম বাংলাদেশি- নামে একটি পেজ থেকে ফেসবুকে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে মামলা হয়েছিল। এতদিন আমরা ওই পেজের মূল ব্যক্তির সন্ধান পাইনি। আলজাজিরা টেলিভিশনের সাম্প্রতিক খবরের ভিত্তিতে জানা যায়, ওই পেজের মূল ব্যক্তি হলেন সামি। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মামলাটির অধিকতর তদন্ত করতে বুধবার সিটিটিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত থেকে এ সংক্রান্ত সব ধরনের নথিপত্র বুঝে নেবেন সিটিসিটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।’

জানতে চাইলে সিটিটিসির যুগ্মকমিশনার ইলিয়াস শরীফ যুগান্তরকে বলেন, ‘শুনেছি আদালত মামলাটির পুনঃতদন্ত করতে আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা এখনও মামলার নথিপত্র বুঝে পাইনি। আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যে নথি বুঝে পাব। এরপর তদন্ত শুরু করব। এর আগে এ নিয়ে তেমন কিছু বলা যাচ্ছে না।’

এ বিষয়ে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘সামি যে একজন প্রতারক এবং অপপ্রচারকারী সে বিষয়টি আমরাই প্রথম উদ্ঘাটন করি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মামলাও করি। তদন্তের দায়িত্ব ছিল থানা পুলিশের ওপর। তদন্ত শেষে যে চার্জশিট দেয়া হয় সেটি আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। এ কারণে আদালত মামলাটির অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে র‌্যাবের যোগাযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা যখন যে ধরনের তথ্য পাচ্ছি তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে তখনই তা শেয়ার করছি। পুনরায় তদন্তের মাধ্যমে জড়িত সব আসামিকে আইনের আওতায় আনা যাবে বলে আশা করছি।’

তিনি বলেন, ‘একটি চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে দেশবিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত বলে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। সে তথ্য অনুযায়ী গত বছরের শুরুতে সাইবার জগতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়। এর মাধ্যমে জানতে পারি ‘আই এম বাংলাদেশি’ নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে অব্যাহতভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। র‌্যাবের পর্যালোচনায় জানা যায়, ওই পেজের অ্যাডমিন হলেন সায়ের জুলকারনাইন। কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ ও লেখক মুস্তাক আহমেদ এডিটর হিসেবে পেজটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা করছেন। তাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নেত্র নিউজের সাংবাদিক তাসনীম খলিল, সাহেদ আলম, ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন, রাষ্ট্র চিন্তার কর্মী দিদারুল ইসলাম ভূঁইয়া ও মিনহাজ মান্নান। পরে গত বছরের মে মাসে এই ১১ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করে র‌্যাব। এ মামলার ৬ নম্বর আসামি ছিল সামি।

রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, আসামি চিহ্নিত করতে না পারায় আটজনকে প্রাথমিকভাবে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে চার্জশিট দেয়া হয়েছিল। তারা হলেন- সায়ের জুলকারনাইন, আশিক ইমরান, ফিলিপ শুমাখার, স্বপন ওয়াহিদ, তাসনীম খলিল, সাহেদ আলম, আসিফ মহিউদ্দীন ও মিনহাজ মান্নান। তবে চার্জশিট প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছিল, যদি ভবিষ্যতে সন্ধান পাওয়া যায় তাহলে সম্পূরক চার্জশিটে তাদের আসামি করা হতে পারে। এখন যেহেতু সামির সন্ধান পাওয়া গেছে, তাই বাকিদের সন্ধান পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ কারণেই আদালত মামলাটির অধিকর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ওসি আরও বলেন, দেশের বাইরে থাকার কারণে আমরা জুললকারনাইন সামি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কোনো তথ্য পাচ্ছিলাম না। ওই মামলায় যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়েছিল তারা হলেন- আহমেদ কবির কিশোর, মুস্তাক আহমেদ ও দিদারুল ভূঁইয়া।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, র‌্যাব কর্মকর্তা পরিচয়ে আর্থিক প্রতারণায় জড়িত থাকার ঘটনায় ২০০৬ সালে সামি গ্রেফতার হয়েছিলেন। তিনি এখন হাঙ্গেরিতে বসবাস করছেন। পাসপোর্ট তৈরিতে প্রতারণার মাধ্যমে নিজের এবং বাবার নামের অংশবিশেষ পরিবর্তন করেন। ১৯৮৪ সালে জন্মগ্রহণকারী সামি ১৭ বছর বয়সে এক সেনা কর্মকর্তার ট্র্যাকস্যুট চুরি করে ধরা পড়েছিলেন। ২০০০ সালে চোরাই হাতির দাঁত বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন।

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রফিকুল ইসলাম রনি-০১৭১৩-৫৮২৪০৬, নির্বাহী সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী-০১৭৫১-১৫৫৪৫৫, বার্তা সম্পাদক মোঃ সিরাজুল ইসলাম আপন-০১৭৪০-৩২১৬৮১। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ মেছের উদ্দিন সুপার মার্কেট ভবন, হান্ডিয়াল বাজার, চাটমোহর, পাবনা থেকে প্রকাশিত। ঢাকা অফিসঃ তুষারধারা, আর/এ, সেক্টর ১১, রোড নং ০৭, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১৩৬২। বার্তা কার্যালয়ঃ অষ্টমনিষা বাজার, ভাঙ্গুড়া, পাবনা। প্রকাশক কর্তৃক সজল আর্ট প্রেস, রূপকথা গলি, পাবনা থেকে মুদ্রিত। মোবাইল নম্বর-০১৭৪৯-০২২৯২২,ই-মেইল- newscbalo@gmail.com / editorcbalo@gmail.com / www.chalonbileralo.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ ©2017-2025 (এটি গণপ্রজাতন্ত্রি বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত সাপ্তাহিক চলনবিলের আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ) অনলাইন নিবন্ধন আবেদনকৃত। আবেদন নম্বর- ২১৮৮।